বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানে টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে সরকারের মতামত জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সূত্র জানিয়েছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সফরের ব্যাপারে ইতিবাচক মতই দিয়েছে। এখন বাকিটা বিসিবির সিদ্ধান্ত। আজ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।

সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছ থেকে সফরের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় খোঁজখবর ও পরামর্শ নিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। হাইকমিশনের কাছ থেকে সফরের ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়াই নাকি মিলেছে।

তা ছাড়া ১৭ মে থেকে পাকিস্তানে পিএসএল শুরু হচ্ছে, ওদিকে ভারতেও একই দিনে শুরু হয়ে যাচ্ছে স্থগিত হয়ে যাওয়া আইপিএল। যুদ্ধ থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া দুই দেশেই যেহেতু খেলা মাঠে ফিরছে, বাংলাদেশ দলের সেখানে খেলতে যেতে কোনো সমস্যা দেখছে না পাকিস্তানে বাংলাদেশের হাইকমিশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

আজ মুঠোফোনে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘সফরটি হওয়ার ভালো সম্ভাবনাই তৈরি হয়েছে। সেভাবেই আমরা আলোচনা করছি। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও কিছু দিক ভালোভাবে বুঝে দেখতে চাই, যেগুলো নিশ্চিত হলে আমাদের কোচ–খেলোয়াড়েরা স্বস্তি নিয়ে খেলতে যেতে পারবেন।’

এসব বিষয়ে বিসিবি প্রধান বিস্তারিত না বললেও জানা গেছে, খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, বিশেষ করে কোচিং স্টাফের বিদেশি সদস্যদের মনোভাব জানা এবং তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে চায় ক্রিকেট বোর্ড। সফরের আগে এ বিষয়ে দুই বোর্ডের শীর্ষ পর্যায়েও আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।

আগের সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ দলের পাকিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল শারজায় আমিরাতের বিপক্ষে দুই টি–টোয়েন্টির সিরিজ শেষে। ২৫ মে শুরু হয়ে সিরিজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩ জুন। তবে এখন সিরিজটি হলেও সূচি বদলাবে। পিসিবি এরই মধ্যে বিসিবিকে একটি পরিবর্তিত সূচি প্রস্তাব করেছে।

১৩ মে বিসিবিকে পাঠানো পরিবর্তিত সূচিতে ফয়সালাবাদে সিরিজের প্রথম দুটি টি–টোয়েন্টি ২৫ ও ২৭ মের পরিবর্তে ২৭ ও ২৮ মে আয়োজনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফয়সালাবাদ থেকে ২৯ মে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দল লাহোরে যাবে। সিরিজের শেষ তিনটি ম্যাচ লাহোরে, সম্ভাব্য তারিখ ৩০ মে এবং ১ ও ২ জুন।

বিসিবি সভাপতি অবশ্য জানিয়েছেন, পরিবর্তিত সূচি নিয়ে দুই বোর্ডের মধ্যে নতুন করে আলোচনা হতে পারে। তবে যেহেতু সামনে ঈদুল আজহা, যেটির সম্ভাব্য তারিখ ৬ বা ৭ জুন; দুই বোর্ডই চায় সিরিজটি ৫ জুনের মধ্যে শেষ করতে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সফর র ব য প র সরক র র স

এছাড়াও পড়ুন:

লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণে এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে সরকারের চুক্তি

লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এই চুক্তি করা হয়েছে।

আজ সোমবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই পক্ষ এ চুক্তিতে সই করে। এতে ডেনমার্ক, বাংলাদেশ সরকার ও বন্দর সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকেরা অংশ নেন।

চুক্তিতে সই করেন এপিএম টার্মিনালসের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টেইন ভ্যান ডোঙ্গেন ও চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল সৈয়দ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।

ডেনমার্কের পক্ষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইবিএস এপিএম টার্মিনালসের হেড অব ইনভেস্টমেন্ট ভাস্কর সেনগুপ্ত, ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্ডলোসে হ্যানসেন ও বাংলাদেশে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার এম সাখাওয়াত হোসেন (অব.) ও নৌপরিবহন সচিব নুরুন্নাহার চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনবলেন, ‘এই চুক্তি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতির জন্য বড় অবদান। যাঁদের মধ্যে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল, আশা করি, আজ তা দূর হবে।’ তাঁর আরও আশা, এই ধারাবাহিকতায় মোংলা সমুদ্রবন্দর পরিচালনায়ও বিদেশি বিনিয়োগ আসবে।

পিপিপি কর্তৃপক্ষের সিইও আশিক চৌধুরী বলেন, ‘লালদিয়া দেখিয়ে দিয়েছে—পিপিপি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও কার্যকর। ভবিষ্যতেও আমরা বাস্তবায়ন-কেন্দ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নেই মনোযোগ দেব।’ তিনি আরও জানান, আগামী কয়েক বছরে চারটি নতুন সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে আছে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর, একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ও একটি নির্ধারিত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল।

ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত পাঁচ দশকে দুই দেশের উন্নয়ন সহযোগিতার সফলতা দেখা গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্ক সহায়তা থেকে ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মাথাপিছু হিসাবে ডেনমার্ক বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য। বাংলাদেশের বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্য পূরণে লালদিয়া প্রকল্প নতুন মাইলফলক।’

পরিবহন কোম্পানি মেয়ার্স্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মেয়ার্স্ক উগলা বলেন, লালদিয়া হবে অত্যাধুনিক গ্রিনফিল্ড টার্মিনাল; সেখানে নিরাপত্তা, অটোমেশন ও স্থায়িত্বের সর্বোচ্চ মান থাকবে। এতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে। সেই সঙ্গে লজিস্টিকস খাতের অগ্রযাত্রায় এটি বিশেষ মুহূর্ত হয়ে থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ