‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিতে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে গেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ভর্তি থাকা আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর নেন।

জানা গেছে, আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা পোস্টের সাংবাদিক মাহতাব হোসেন লিমন, বাংলা ট্রিবিউনের সুবর্ণ আস-সাইফ ও দৈনিক সংবাদের মেহেদী হাসানসহ ছয়জন। তাদের মধ্যে সুবর্ণ ও মেহেদীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

আহত শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক মাহতাব লিমন বলেন, টিয়ারশেলের তীব্র গ্যাসে আমার লাঞ্চে ইনফেকশন হয়েছে। মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এ সময় অক্সিজেন সাপ্লাই নিতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের খোঁজ নিচ্ছেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড.

রেজাউল করিম বলেন, আমাদের কয়েকজন আহত শিক্ষার্থী এখনও হাসপাতালে ভর্তি। তাদের চিকিৎসা চলছে। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজখবর নিচ্ছি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো তাজাম্মুল হক, ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. রিফাত হোসেন এবং শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড মুহাম্মদ বেলাল হোসাইন। এছাড়া শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক রায়হান রাব্বীসহ বিভিন্ন ছাত্রনেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপ চ র য আহত শ ক ষ র থ দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ছেলে থাকেন ঢাকায়, মায়ের পোকা ধরা লাশ মিলল ঘরে

রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার মাস্টারপাড়া গ্রামের একচালা টিনের ঘরে বছর পাঁচেক ধরে নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছিলেন ঊর্মিলি বেগম (৬০)। স্বামী তোজাম্মেল হোসেন নিরুদ্দেশ, ছেলে থাকেন ঢাকায়। তিনি একাই রান্না করে খেতেন। স্বজনেরা কিংবা আশপাশের কেউ সেভাবে খোঁজখবর রাখতেন না। আগে মাঝেমধ্যে গ্রামে অন্যের বাড়িতে কাজ করলেও বয়স বেড়ে যাওয়ায় কুলাতে পারতেন না। একমাত্র ছেলে প্রতি মাসে কিছু টাকা পাঠাতেন, তা দিয়েই চলতেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিবেশীরা ঘরের দরজা ভেঙে তাঁর লাশ উদ্ধার করেন। প্রতিবেশী রেজাউল ইসলাম ও তহমিনা বেগম জানান, গতকাল বুধবার বিকেল থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। রাত কাটানোর পরে দুর্গন্ধ আরও বেড়ে যায়। উৎকণ্ঠিত হয়ে আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রতিবেশী কয়েকজন ঊর্মিলির ঘরের দরজার সামনে গিয়ে বুঝতে পারেন, ভেতর থেকে দুর্গন্ধ আসছে। কিন্তু কাঠের দরজা ভেতর থেকে লাগানো ছিল। পরে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে খাটের ওপরে লাশ দেখতে পান। তাতে পোকা ধরে গেছে।

প্রতিবেশীরা জানান, ঊর্মিলির জীবন ছিল নিঃসঙ্গতায় ভরা। ঘরে একা থাকতেন। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়তেন। দিনে ঘরের আশপাশে একা বসে কাটাতেন, কখনো বিড়বিড় করে কথা বলতেন। কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না। স্বজনেরাও তেমন খোঁজখবর রাখতেন না।

ঊর্মিলি বেগম ঠিক কবে মারা গেছেন, তা প্রতিবেশীরা কেউ জানেন না। প্রতিবেশী তহমিনা বেগম বলেন, সর্বশেষ গত রোববার দুপুরে তিনি বৃদ্ধ ঊর্মিলিকে তাঁর ঘরের পাশে একা বসে থাকতে দেখেছেন। এরপর আর দেখেননি। স্থানীয় রেজাউল করিম বলেন, ‘লাশ পচে দুর্গন্ধ না ছড়ালে আমরা বুঝতেই পারতাম না ঊর্মিলি বেগম মারা গেছেন। আমরা ধারণা করছি, তাঁর মৃত্যুটা ঘরের ভেতরে স্বাভাবিকভাবে হয়েছে।’

ঊর্মিলির একমাত্র ছেলে আনারুল ইসলাম বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। সেখানে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ছেলে আনারুল ইসলাম ঢাকা থেকে দুপুরে বদরগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, তাঁর মা একা থাকতেই পছন্দ করতেন। বাবার সঙ্গে তাঁর কিংবা মায়ের যোগাযোগ ছিল না। প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা মাকে পাঠাতেন। এই টাকা খরচ করে মা একা রান্না করে খেতেন।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, তিনি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ঘরের ভেতরে ঊর্মিলি বেগমের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। লাশের সুরতহালের সময় তাঁর শরীরে কোনো আঘাত বা জখমের চিহ্ন পাননি। ঠিক কবে ওই নারী মারা গেছেন, প্রতিবেশীরা কেউ জানেন না। লাশে পচনসহ পোকা ধরেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চার থেকে পাঁচ দিন আগে ওই নারী মারা গেছেন। তাঁর একমাত্র ছেলে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন। তিনি আসার পর কথা বলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছেলে থাকেন ঢাকায়, মায়ের পোকা ধরা লাশ মিলল ঘরে