ভারতে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেয়ে বড় ক্রিকেটার কেউ নেই। কারও হয়তো রান বেশি, কারও উইকেট বেশি। কিন্তু ভক্ত–সমর্থক সবচেয়ে বেশি ধোনিরই। আর এমনটাই মনে করেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার হরভজন সিং।

হরভজন কথাগুলো বলেছেন এমন এক দিনে, যখন বিরাট কোহলিকে ট্রিবিউট দিতে এম চিন্নাস্বামী গ্যালারিতে তাঁর ১৮ নম্বর জার্সি পরে হাজির হয়েছেন দর্শক। হরভজনের মতে, ধোনির ভক্তরাই আসল ভক্ত। বাকি যা দেখা যায় ভাড়াটে।

এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর ফের আইপিএল শুরু হয়েছে শনিবার। এদিন বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচ। এটি ছিল কোহলি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণার পর বেঙ্গালুরুর ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচ। যে কারণে সাবেক অধিনায়কের টেস্ট ক্যারিয়ারকে সম্মান জানাতে তাঁর নাম ও নম্বরের জার্সি পরে হাজির হয়েছিলেন দর্শক। গ্যালারিতে ছিল বড় বড় ব্যানারও।

কোহলির সম্মানে তাঁর টেস্ট জার্সি পরে বেঙ্গালুরু ম্যাচের গ্যালারিতে হাজির হন সমর্থকেরা।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিমা শক্তিকে চাপে রাখার কৌশলে তেহরান

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে তেহরান। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) পরিদর্শন সীমিত করার বিল অনুমোদনের মাধ্যমে এই চাপ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছে। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয়; আইএইএর বিরুদ্ধে বিল অনুমোদনের পরও সংস্থাটির কর্মকর্তাদের তেহরান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তেহরান পশ্চিমা শক্তিকে চাপে রাখার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এপির এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।  

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ওই বিলটির উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তি এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত সুরক্ষা চুক্তির অধীনে আইএইএর সঙ্গে সমস্ত সহযোগিতা অবিলম্বে স্থগিত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পারমাণবিক স্থাপনা ও বিজ্ঞানীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ কিছু নির্দেশনা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।

আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের সিদ্ধান্তে ব্যাপক ক্ষেপেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে ইরানের। অথচ তারা আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা অগ্রহণযোগ্য। 

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সার এক্স পোস্টে বলেন, ‘আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে ইরান। দেশটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক বাধ্যবাধকতা ও প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করেছে।’ 

অবশ্য মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হিসেবে ইসরায়েলকে মনে করা হয়। তারাও আইএইএর প্রবেশাধিকার দেয়নি। গত ১৩ জুন ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা ফর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে হামলা চালালে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়।   

এদিকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। কর্মসূচি কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে। ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যের পক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দেখাতে পারেননি। পরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁস হওয়া তথ্যে বলা হয়েছিল, পারমাণবিক স্থাপনা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়নি। ইরান কয়েক মাসের জন্য কর্মসূচিতে ফিরতে পারে। এই বক্তব্য ট্রাম্প প্রশাসন অস্বীকার করে। তারা জোর দিয়ে জানায়, হামলায় স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তখনও এ বক্তব্যের পক্ষে নথি ছিল না। 
সর্বশেষ গত বুধবার প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, ‘মার্কিন হামলা ইরানের কর্মসূচি দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছে। আমরা বোমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো ধ্বংস করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, ইরানের পারমাণবিক ক্ষমতা মারাত্মক হ্রাস পেয়েছে।’ এবারও পার্নেল তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করেননি। বরং তিনি আবারও বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা মূল্যায়নে এমনটাই ‘ধারণা’ করা হচ্ছে।   

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি সিবিএস নিউজের একটি সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তেহরান এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক। তবে আলোচনা এত তাড়াতাড়ি পুনরায় শুরু হবে, তা তিনি মনে করেন না। অন্যদিকে কূটনীতির দরজা কখনোই বন্ধ হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন। 

এদিকে ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-নোয়েল ব্যারোট বলেন, ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত বন্দিদের মুক্তির ওপর নির্ভর করছে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে দুই ফরাসি নাগরিক সিসিল কোহলার ও জ্যাক প্যারিসকে আটক করে ইরান। 

ইরান ও সিরিয়া নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে গোপন আলোচনা করেছে ইসরায়েল। ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর তেলআবিব বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করেছে।  

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল আব্দুর রহিম মুসাভি। তিনি বলেন, যদি শত্রুরা ইরানের বিরুদ্ধে আবার কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে তাদেরকে আরও ‘বিধ্বংসী প্রতিক্রিয়া’ মোকাবিলা করতে হবে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ