বয়স যতই হোক, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির দরজা সবার জন্য খোলা
Published: 19th, May 2025 GMT
যেকোনো বয়সেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির (স্কিম) আওতায় আসা যাবে। তবে শর্ত হচ্ছে পেনশন কর্মসূচিতে প্রবেশের কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিয়ে যেতে হবে। জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ বলছে, সবাই যাতে পেনশন কর্মসূচির আওতায় আসতে পারেন, এ জন্যই এর নামের সঙ্গে ‘সর্বজনীন’ শব্দ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা গত শনিবার প্রথম আলোকে এ কথা বলেছেন।
সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আপাতত চার ধরনের স্কিম রয়েছে। এর মধ্যে প্রবাসীদের জন্য প্রবাস, বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রগতি, অনানুষ্ঠানিক খাত অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য সুরক্ষা ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রয়েছে সমতা স্কিম।
সর্বজনীন পেনশনের চার কর্মসূচি ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট যেভাবে শুরু করা হয়েছিল, সম্প্রতি তা আরও গ্রাহকবান্ধব করা হয়েছে। এখন ২৪টি ব্যাংকে গিয়ে পেনশনের যেকোনো কর্মসূচির নিবন্ধন করা সম্ভব।
পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো.
এ কর্মসূচিকে আকর্ষণীয় করতে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে পেনশনে যাওয়ার উপযুক্ত সময় হলে জমাকৃত অর্থের ৩০ শতাংশ টাকা এককালীন তুলে নেওয়া যাবে। এত দিন এ সুযোগ ছিল না। প্রবাস ও প্রগতি কর্মসূচিতে সর্বনিম্ন মাসিক চাঁদার হার দুই হাজার টাকার পরিবর্তে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর প্রগতি কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ জমার পরিমাণ ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের পর্ষদ বৈঠকে গত সপ্তাহে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানা গেছে, সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এখন বিধি সংশোধন করতে হবে, যা করার কাজে এরই মধ্যে হাত দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
যেভাবে নিবন্ধন নেবেনসর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে ইউপেনশন ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। পেনশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন করলে সেই আবেদন বাতিল হবে এবং জমাকৃত অর্থ ফেরতযোগ্য হবে না।
নিবন্ধনের প্রক্রিয়ায় প্রথমেই একটি প্রত্যয়ন পাতা আসবে, যেখানে লেখা থাকবে—‘এই মর্মে প্রত্যয়ন করছি যে আমি সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নই। সর্বজনীন পেনশন স্কিমবহির্ভূত কোনো ধরনের সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে সুবিধা গ্রহণ করি না। আমি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কোনো ধরনের ভাতা গ্রহণ করি না।’
এই পাতার নিচের দিকে ‘আমি সম্মত আছি’ অংশে ক্লিক করলে দ্বিতীয় পাতায় গিয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। এখানে আবেদনকারীকে প্রবাস, সমতা, সুরক্ষা বা প্রগতি—এই চার স্কিমের মধ্য থেকে প্রযোজ্য স্কিম বাছাই করতে হবে। একই সঙ্গে ১০, ১৩ বা ১৭ সংখ্যার এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর ও ই–মেইল আইডি লিখে দিতে হবে। এরপর পাতার নিচের দিকে থাকা ক্যাপচা লিখে পরের পাতায় যেতে হবে।
ক্যাপচা দেওয়ার পরে আবেদনকারীর মোবাইল নম্বর ও ই–মেইলে একটি ওটিপি বা একবার ব্যবহারযোগ্য গোপন নম্বর আসবে, যা ফরমে দিয়ে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে।
নিবন্ধনের প্রক্রিয়ার পরের ধাপে আসবে ব্যক্তিগত তথ্যের পাতা। এ পাতায় এলে ব্যক্তির এনআইডি অনুযায়ী এনআইডি নম্বর, ছবি, আবেদনকারীর বাংলা ও ইংরেজি নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে (যেহেতু আগের পাতায় এনআইডি নম্বরের মাধ্যমে এ তথ্যগুলো দেওয়া হয়েছে)।
তবে এখানে আবেদনকারীর বার্ষিক আয় লিখতে হবে এবং পেশা, নিজ বিভাগ, জেলা ও উপজেলার নাম নির্বাচন করতে হবে। পেশা বাছাইয়ের ঘরে শিক্ষক, বেসরকারি চাকরিজীবী, ছোট ব্যবসায়ী, ব্যবসা, দিনমজুর, আইনজীবী, সাংবাদিক ইত্যাদি পেশার উল্লেখ আছে। সেখান থেকে নিজের পেশা নির্বাচন করতে হবে। সব লেখা সম্পন্ন হলে পরের ‘স্কিম তথ্য’–এর পাতায় যেতে হবে।
স্কিম তথ্যের পাতা এলে সেখান থেকে মাসিক চাঁদার পরিমাণ ও চাঁদা পরিশোধের ধরন বাছাই করতে হবে। চাঁদা পরিশোধের ধরনের মধ্যে মাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক—এ তিন অপশন রয়েছে।
ব্যাংক তথ্যের পাতায় আবেদনকারীর নামমাসিক, ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক—এ তিন অপশনের পর আসবে ব্যাংক তথ্যের পাতা। এ পাতায় আবেদনকারীর ব্যাংক হিসাবের নাম ও নম্বর, হিসাবের ধরন (সঞ্চয়ী অথবা চলতি), রাউটিং নম্বর, ব্যাংকের নাম (বাংলায়) ও ব্যাংকের শাখার নাম (ইংরেজিতে) লিখতে হবে। এরপর পরবর্তী নমিনি তথ্যের পাতায় যেতে হবে।
নমিনি তথ্যের পাতায় গিয়ে নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে নমিনিকে যুক্ত করতে হবে। এখানে একাধিক নমিনিও যুক্ত করা যাবে। এ সময় নমিনির মোবাইল নম্বর, নমিনির সঙ্গে সম্পর্ক, নমিনির প্রাপ্যতার হারের (একাধিক নমিনি হলে) তথ্য দিয়ে সর্বশেষ ‘সম্পূর্ণ ফরম’ ধাপে যেতে হবে।
এটিই নিবন্ধনের শেষ ধাপ। এ ধাপে আগে পূরণ করা ব্যক্তিগত তথ্য, স্কিম তথ্য, ব্যাংক তথ্য ও নমিনি তথ্য দেখানো হবে। সেখানে কোনো ভুল থাকলে আবার শুরুতে গিয়ে তথ্যের প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে হবে। আর সব তথ্য ঠিক থাকলে, তাতে সম্মতি দিয়ে আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। এ সময় চাইলে সম্পূর্ণ আবেদনটি ডাউনলোডও করতে পারবেন আবেদনকারী।
মনে রাখবেন, নিবন্ধনের পুরো প্রক্রিয়ার মধ্যে সব পাতার কাজ শেষ না করে পেছনে (ব্যাক) যাওয়া যাবে না। পেছনে গেলে সব প্রক্রিয়া নতুনভাবে শুরু করতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রে পুরোনো তথ্যগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকবে, নতুনভাবে আর লিখতে হবে না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রক র য় র জন য প রব স ন করত র ধরন ধরন র প রগত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পী হিসেবে একটা সিনেমায় অভিনয় করা অপরাধ না: বাসার
থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। আজ সোমবার এই অভিনেত্রীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এমন ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনয়শিল্পীরা।
আজ সামাজিক মাধ্যমে খায়রুল বাসার লিখেছেন, ‘উনি অভিনেত্রী, উনার কাজ অভিনয় করা। কোন গল্পে যে চরিত্রটা পাবেন সে চরিত্রের যথাযথ প্রকাশ সে করবেন; এই উনার কাজ। আমার ধারণা উনি রাজনীতি সচেতনও না এবং উনি কোন রাজনীতি করেনও না, এমনকি বিটিভিতে গিয়ে মায়া কান্নাও করেননি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘তাহলে একটা সিনেমায় অভিনয় করাকে কেন্দ্র করে কেন এই হেনস্তা? ওই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য সকলকেই অডিশনের জন্য ডাকা হয়েছিল, অনেকেই অডিশন দিয়েছেন। যারা অডিশন দিয়ে সিলেক্টেড হয়েছেন তারাই অভিনয় করেছেন। এটা সিম্পল! এখানে কেউ রাজনীতি করতে যাননি। অভিনেত্রী হিসেবে একটা সিনেমায় অভিনয় করা কোন ক্রাইম (অপরাধ) না। যদি তাই হয় তবে নুসরাত ফারিয়ার সাথে অন্যায় হচ্ছে।’
প্রশ্ন তুলে তিনি লিখেছেন, ‘বর্তমান সরকার যদি শিল্পীদের কোন রাষ্ট্রীয় আয়োজনে ডাকেন এক্ষেত্রে শিল্পীদের করণীয় কি হবে? এই সরকার পরবর্তীতে অন্য সরকার তাদের হেনস্তা করবে এই মেনে হুকুমের দাস হবে? নাকি শিল্পীরা কখনোই কোন সরকারকর্তৃক রাষ্ট্রীয় আয়োজনের অংশ হবে না?’