কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা সদরে রোববার দুপুরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল করে। আওয়ামী লীগের বিচার ও দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে এ বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলে ‘একটা একটা লীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘একটা একটা জামায়াত ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘একটা একটা এনসিপি ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’ স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। এ স্লোগানে জামায়াত ও এনসিপি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো.

রমজান আলী সমকালকে বলেন, ‘আমরা এ ধরনের স্লোগানের তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে আন্দোলন করেছি। ফ্যাসিবাদী শক্তির পতন হয়েছে। আন্দোলনকারী শক্তিগুলোর মধ্যে এখন ঐক্য বজায় রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। নিজেদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করা বা এ ধরনের উগ্র স্লোগান দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।’ তবে পাকুন্দিয়ার বিএনপির নেতৃবৃন্দ স্থানীয় জামায়াতের নেতৃবৃন্দের কাছে এ ধরনের স্লোগানের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে জেলা জামায়াতের আমির জানিয়েছেন।

জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিক্ষোভ মিছিলের ভিডিও শেয়ার করেছেন। তিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম স্টোকহোল্ডার এনসিপি এবং জামায়াতের বিরুদ্ধে এ ধরনের আক্রমণাত্মক স্লোগানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী একটি দল অন্য দলের বিরুদ্ধে এমন রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত স্লোগান দেবে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই ধরনের স্লোগান যারা দেন, তারা কখনও একটি দলের শুভাকাঙ্ক্ষী হতে পারে না। এ সমস্ত উগ্র স্লোগান যারা দিয়েছেন, তাদের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য দায়িত্বশীল নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এটা দলীয় কোনো স্লোগান না, মিছিলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছিল, তারাই এ স্লোগান দিয়েছে।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জেলা জজ আদালতের পিপি মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘এটা উপজেলা বিএনপি ঘোষিত কোনো কর্মসূচি নয়। কেন্দ্রীয় কোনো কর্মসূচিও ছিল না। আমি নিজেও ওই মিছিলে ছিলাম না। যারা এ ধরনের স্লোগান দিয়েছেন, এর দায় তাদের। এ ধরনের স্লোগান বিএনপি সমর্থন করে না, দলের এ রকম কোনো নির্দেশনাও নেই।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ব এনপ আওয় ম ল গ জ ম য় ত ইসল ম এনস প এ ধরন র স ল গ ন ব এনপ র এনস প উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় ‘নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে প্রবাসীদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা

মালয়েশিয়ায় ‘নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে প্রবাসীদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার কুয়ালামাপুরের একটি হোটেলে এনসিপি মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় ডায়াস্পোরা এলায়েন্সের মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের সমন্বয়ক ইঞ্জিনিয়ার মো. এনামুল হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আলাউদ্দীন মোহাম্মদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন উত্তরাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান। উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের নির্বাহী সদস্যরা।

আলোচনা সভাটি মূলত একটি কর্মশালার মতো করে অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারী সদস্যরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এনসিপির বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসা জানতে চান এবং নেতারা বিষয়গুলো স্পষ্ট করেন।

আলোচনার প্রথম পর্বে এনসিপির ৫টি শক্তিশালী ভিত্তির ওপর আলোচনা করেন আলাউদ্দীন মোহাম্মদ। এগুলো হলো-

১) ২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান যেটি এনসিপি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি গণঅভ্যুত্থানকে এনসিপির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উল্লেখ করেন।

২) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এনসিপি- বাংলাদেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো যখন বাংলাদেশের স্বৈরতন্ত্রের জাল ভেদ করতে পারেনি তখন এনসিপির আজকের তরুণ নেতৃত্বই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জীবন বাজি রেখে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। তাই পরিপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এনসিপি সোচ্চার থাকবে।

৩) আগ্রাসনবিরোধী অবস্থান- এনসিপির জন্মের পূর্ব থেকেই তার নেতারা গণবিরোধী ও বহি:রাষ্ট্রের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী অবস্থান নিয়ে এখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতির ভিত রচনা করেছে। এনসিপি আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশের জনগণের সম্মতির বাইরে কোনো দেশের বা বহি:রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ প্রতিরোধের মাধ্যমে তার রাজনীতি চালিয়ে যাবে।

৪) বিভাজনের রাজনীতির বদলে জাতীয় ঐক্য- এনসিপি অতীতে জাতীয়তাবাদের নামে, পরিচয়ের নামে, ধর্মের নামে, আদর্শের নামে জাতিকে বিভক্ত রাখার রাজনীতিকে খারিজ করে বিরল ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করেই স্বৈরতন্ত্রের উৎখাত করেছিল। আগামী দিনগুলোতেও বৈচিত্র্যের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমেই এনসিপি বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।

৫) প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল- এনসিপি গণঅভ্যুত্থানকারী প্রজন্মের প্রতিনিধি যারা যেকোনো মূল্যে এই প্রজন্মের মূল্যবোধ ও আশা আকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ তৈরি করতে চায়। আজকের তরুণ আগামী দিন জাতির হাল ধরবে। তাই তরুণদের রাষ্ট্র গঠনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ গঠনই এনসিপির আগামীর রাষ্ট্রকল্প।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি এডভোকেট আলী নাছের খান এনসিপির আগামীর কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

১) নাগরিক অধিকারভিত্তিক রাজনীতি- যেমন নাগরিকদের প্রাইভেসি, মতামত নেওয়ার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ, নাগরিক অধিকার, সেলফ রেসপেক্টসহ ইত্যাদি নাগরিক অধিকারভিত্তিক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া।

২) প্রতিটি নাগরিকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান ও জীবনের নিরাপত্তা বিধান করা।

৩) বিশ্বজুড়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মূলধারায় যুক্ত করার জন্য কাজ করে যাওয়া।

আলোচনা সভায় প্রবাসীগণ মালয়েশিয়ায় তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পাসপোর্ট সেবা, এটেস্টেশন ফি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ প্রবাসীদের কল্যাণ সাধনে এনসিপির অবস্থান ও পরিকল্পনা জানতে চান।

অনুষ্ঠানে পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজনৈতিক উত্তরণের ছবিটি স্পষ্ট করুন
  • ফেসবুকে সরকারের সমালোচনার নজরদারি প্রথা বন্ধ করেন: আশফাক নিপুন
  • নারীর ডাকে নারীর সমাবেশ
  • ‘অপশক্তিকে রুখে না দিলে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট হবে’ 
  • স্বাস্থ্য কমিশনের প্রতিবেদনে নতুন কোনো দিকনির্দেশনা পাইনি: ফরহাদ মজহার
  • জুলাই অভ্যুত্থান দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল: ফরহাদ মজহার
  • উদীচীর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচি
  • ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর রোড এখন ‘শহীদ ফারহান ফাইয়াজ’ সড়ক
  • মালয়েশিয়ায় ‘নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে প্রবাসীদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা