উদ্বোধনের আড়াই বছরের মধ্যে নারায়ণগেঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর নির্মিত তৃতীয় সেতুর সংযোগ সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেখানে সৃষ্ট হয়েছে বড় গর্তের। ভেঙে যাওয়া সড়কের ওই অংশে চালকদের সতর্ক করার জন্য লাল কাপড়সহ ডিভাইডার বসিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

সেতু নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোকবল নিয়োগ থাকলেও কিভাবে সড়ক ভেঙ্গে যায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে তারা সেতুটির নির্মাণ কাজের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। 

গত শুক্রবার (১৬ মে) রাতে ভারী বর্ষণের পর সেতুর পশ্চিমে অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জ সদরের সৈয়দপুর অংশে ভাঙন সৃষ্টি হয়। ২০২২ সালের ১০ অক্টোবরে উদ্বোধন করা হয় শীতলক্ষ্যা তৃতীয় সেতু।

আরো পড়ুন:

শিবচরে র‌্যাব পরিচয়ে প্রতারণা: বরখাস্ত হওয়া সেনা সদস্য আটক

‘জীবন’ হাতে নিয়ে পার হতে হয় যে সেতু 

শুক্রবার (২৩ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর সৈয়দপুর অংশে সংযোগ সড়কের কার্পেটিংয়ের মাটি সরে গিয়ে সড়ক ভেঙে গেছে। সড়কের মূল অংশ থেকে অন্তত আনুমানিক কয়েক ফুট গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। চালকদের সতর্ক করতে চারদিকে লাল কাপড় দেওয়া হয়েছে। দ্রুত ওই ভাঙা অংশ সংস্কার করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।

বন্দরের বুরুন্দী এলাকার বাসিন্দা খিদির মিয়া বলেন, “গত শুক্রবার বৃষ্টির পর সড়কের নিচের মাটি সরে গিয়ে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই ব্রিজ উদ্বোধন করার আগে তাড়াহুড়ো করে কাজ করেছে কর্তৃপক্ষ। ঠিকমতো মাটি বসানো হয়নি। বৃষ্টির পানিতে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যাবে এটা হতাশাজনক।”

নিতাইগঞ্জের চাল ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া বলেন, “এই নতুন সেতুর সড়কটি এক দিনের বৃষ্টিতেই ভেঙে গেছে। এই সেতু আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তৎকালীন সরকারের আমলে কাজটি ঠিক মতো না করার কারণেই সেতুর সংযোগ সড়কের বেহাল দশা।”

নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে একনেকে ৩৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ থেকে সদর উপজেলার সৈয়দপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণের অনুমোদন হয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয় সেতুর কাজ। ব্যায় হয় ৬০৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সেতু নির্মাণে সৌদি উন্নয়ন তহবিল (এসএফডি) ও বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করে।

২০২২ সালের ১০ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত নাসিম ওসমানের নামে সেতুটি নামকরণ করে উদ্বোধন করা হয়। গত বছরের ৫ আগস্টের পর স্থানীয়রা সেতুর নাম পরিবর্তন করে তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নামকরণ করেন। 

শীতলক্ষ্যার ওপর নির্মিত এই সেতু নারায়ণগঞ্জের সদর ও বন্দরকে সংযুক্ত করার পাশাপাশি পদ্মা সেতু থেকে মুন্সিগঞ্জ হয়ে ঢাকায় প্রবেশ না করেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যুক্ত হবার পথ সুগম করে। এর ফলে যেমন দূরত্ব কমে আসে, তেমনি স্থানীয় বাসিন্দাদের যোগাযোগের সুবিধা বৃদ্ধি পায়। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.

আল রাজী লিয়ন বলেন, “সেতুর ওপরের অংশে একাধিক স্থানে পানি সরানোর জন্য পাইপ বসানো হলেও সেগুলোর প্রতিটির মুখ স্থানীয়রা বন্ধ করে দিয়েছেন। এর ফলে পানি সড়কের ওপর দিয়ে সরে যেত। ভারী বর্ষণের ফলে সড়কটির একটি অংশ ভেঙে গেছে। দ্রুতই সংস্কার কাজ করা হবে। কাজ শেষে সড়কটি পুরোপুরি চলার উপযোগী হয়ে যাবে।”

ঢাকা/অনিক/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ত র স য গ সড়ক ন র য়ণগঞ জ শ তলক ষ য র জন য সড়ক র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

কাজ না করেই অর্ধেক টাকা তুলে নেন ঠিকাদার

সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রতিবাদে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এমনকি ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন তারা। গতকাল সোমবার দুপুরে সদর ইউনিয়নের সূর্য নারায়ণপুর এলাকার কর্মসূচিতে শতাধিক মানুষ অংশ নেন। তারা সড়কটির কাজ যথাযথভাবে করার দাবি জানান। 
স্থানীয় সূত্র জানায়, সূর্য নারায়ণপুরের আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে বক্তারটেক পর্যন্ত ২৮০ ফুট দীর্ঘ রাস্তাটিতে ইট বিছিয়ে (সলিং) ৮ ফুট চওড়া করার কথা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় এ কাজের প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সদর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আল আমিন পালোয়ান এ কাজের ঠিকাদার। কিন্তু এলাকাবাসী সড়কটিতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার ও বালু না দিয়েই কাজ শুরুর অভিযোগ করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আল আমিন পালোয়ান একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যে কারণে গত সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর একাধিক মামলায় আসামি হয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু সম্প্রতি এলাকায় এসে ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। নিম্নমানের সামগ্রী বসানোর প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির গুজব ছড়িয়েছেন তিনি। এমনকি নানা মাধ্যমে আল আমিন হুমকিও দিচ্ছেন। 
সেখানে বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার কাজল, মো. রানা শেখ প্রমুখ। তাদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আল আমিন পালোয়ানের নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ মেলেনি। 
কাপাসিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. তামান্না তাস্‌নীম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরেজমিন পরিদর্শনে যেতে বলেছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাজ না করেই অর্ধেক টাকা তুলে নেন ঠিকাদার
  • ‘এদেশে কেউ বিয়ে করতিও চায় না, দিতিও চায় না’
  • ১০ বছরে সড়কে ধুয়েমুছে সাফ ৪ হাজার কোটি টাকা
  • চালকের কষ্ট তিন গুণ তাই গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ
  • রাঙামাটির ৭ সড়কই ভালো
  • দরবেশ হাট ডিসি সড়কে শত শত গর্ত
  • ৩০ সড়কে যানবাহন চলাচলই কঠিন
  • আধা কিলোমিটার সড়কে ছয় গ্রামের মানুষের কষ্ট
  • সীমান্ত বাণিজ্যে নতুন আশা ‘প্রশস্ত’ বিলোনিয়া সড়ক
  • ছোট সড়কে বড় যানবাহন দুর্ভোগ চরমে