রূপগঞ্জে মহাসড়ক আটকিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ, ভোগান্তি
Published: 23rd, May 2025 GMT
রূপগঞ্জে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক আটকিয়ে গণঅধিকার পরিষদের গনসমাবেশের আয়োজন। যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন গণপরিবহন ও যাত্রি সাধারণ। শুক্রবার (২৩ মে) ভোর থেকেই উপজেলার ভুলতা গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা সিলেট মহাসড়কটি বন্ধ করে সমাবেশের আয়োজন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
এতে করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। ঢাকা সিলেট মহাসড়কে ভুলতা গোলচত্ত্বরে গণসমাবেশের আয়োজন করা হয়। গণ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, গণঅধিকার পরিষদের চেয়ারম্যান ভিপি নুরুল ইসলাম নুর। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন কোন অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মহাসড়কের পাশে চেয়ার ও স্টেজের মালামাল এনে রাখা হয়। শুক্রবার ভোট থেকে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে সড়কের মাঝখানে স্টেজ তৈরির কাজ শুরু হয়। এতে করে সড়কের উভয় দিকে ভোর থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী সাধারণ থেকে পথচারীরাও।
এতে করে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ভুলতা গাউছিয়া মার্কেট, তাঁত বাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্স, রেদওয়ান টাওয়ারসহ হাট বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। মহাসড়কের একপাশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্য পাশ দিয়ে উল্টো পথে যানবাহন চলাচল করে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, সমাবেশ করার জন্য রূপগঞ্জে অনেক মাঠ রয়েছে৷ ঢাকা সিলেট মহাসড়ক দেশে অন্যতম একটি ব্যস্ততম মহাসড়ক। এ সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। এমন ব্যস্ততম একটি মহাসড়ক এভাবে দখল করে সমাবেশের আয়োজনের বিষয়টি নিন্দনীয়।
মহাসড়ক দখল করে সমাবেশের আয়োজন করায় ঢাকা সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে আমরা সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছি। এ সমাবেশের ব্যাপারে আমরা উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
রুপগঞ্জ উপজেলা গনঅধিকার পরিষদের সভাপতি কাউসার আহমেদ বলেন, আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে অনুমতি নিয়ে নিয়েছি। সড়কে স্টেজ করলেও আমরা বিকল্প হিসেবে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা রেখেছি। এতে কোন সমস্যা হবে না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার সি সার্কেল মেহেদী ইসলাম বলেন, গণ অধিকার পরিষদ এর পক্ষ থেকে একটি সমাবেশ করবে বলে আমাদের কাছে একটি চিঠি দিয়েছে। তবে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক বন্ধ করে স্টেজ করে সেখানে সমাবেশ করবে সেটা তো সম্পূর্ণ বেআইনি। বিষয়টি আমরা দেখছি।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
সীমান্ত বাণিজ্যে নতুন আশা ‘প্রশস্ত’ বিলোনিয়া সড়ক
ফেনী জেলার ব্যস্ততম আঞ্চলিক মহাসড়ক ফেনী-বিলোনিয়া সড়ক। ফুলগাজীসহ আশপাশের উপজেলার মানুষদের বিলোনিয়া স্থলবন্দরে যাওয়া-আসার একমাত্র মাধ্যম হলো এ সড়ক। অবশেষে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি দুই লেনে উন্নীত হচ্ছে। এতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্য বাড়বে।
জানা গেছে, বর্তমানে সড়কটির প্রস্থ ৫ দশমিক ৫০ মিটার (১৮ ফুট)। উভয় পাশে ৪ দশমিক ৮০ মিটার করে বাড়ানো হচ্ছে। এতে মোট প্রস্থ হবে ১০ দশমিক ৩০ মিটার (প্রায় ৩৪ ফুট)। তিনটি লটে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এর মধ্যে দুটি লটের কাজ পেয়েছে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ও একটি পেয়েছে মাইশা কনস্ট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড। তবে এখনও কাজ শুরু করেনি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং।
কাজ চলছে, দুর্ভোগও বাড়ছে: ফেনী শহরের টেকনিক্যাল মোড় থেকে কাজ শুরুর কথা থাকলেও শুরু হয়েছে ফুলগাজী বাজারের উত্তর প্রান্ত থেকে। ইতোমধ্যে মুন্সীরহাট থেকে আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম কলেজ পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশে কাজ চলছে। ফুলগাজী বাজারের একটি অংশে রিজিড পেভমেন্ট সম্পন্ন হওয়ায় সড়ক যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
তবে বিভিন্ন অংশে একসঙ্গে কাজ চলায় জনদুর্ভোগ বেড়েছে। বৈদ্যুতিক পিলার ও গাছ অপসারণ না করেই সড়ক প্রশস্ত করা হচ্ছে। ফলে কাজের গতি ধীর হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই দুর্ঘটনাপ্রবণ। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ, সংকীর্ণতা ও সংস্কারের অভাবে গত এক বছরে অন্তত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গত মে মাসে আনন্দপুরে, জুনে গাইনবাড়িতে এবং এপ্রিল মাসে ফুলগাজীর কলাবাগানে একজন নিহত হন। এসব দুর্ঘটনার পর সড়ক প্রশস্ত করার দাবি জোরালো হয়।
ভূমি অধিগ্রহণে অনিশ্চয়তা, ক্ষোভ: ফেনী-বিলোনিয়া সড়কের দুই পাশে রয়েছে কমপক্ষে ১০টি বাজার। রয়েছে অসংখ্য দোকান, ভবন, নাল জমি। কিন্তু এখনও ভূমি অধিগ্রহণ শুরু হয়নি। মালিক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘ক্ষতিপূরণের বিষয়ে এখনও কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি। ফলে তারা কিছুটা চিন্তিত।
ফুলগাজী বাজারের আবদুল আজিজ, কাজী আরাফা মঞ্জিলের মালিক আব্দুল জলিল বলেন, ‘সড়ক বড় করা হলে আমার ভবনের সামনের পিলার ভাঙা লাগতে পারে, তথন তো আমার ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।’ দোকান মালিক কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমার দোকানের অর্ধেকই চলে যাবে। আমি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।’ ফুলগাজী বাজারের ব্যবসায়ী মিলন ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার ছয়তলা ভবনের বড় অংশ ভেঙে পড়তে পারে। কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখনও কোনো নোটিশ পাইনি।’ ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে জায়গা ছেড়ে স্থাপনা তৈরি করেননি কেন? এই প্রশ্নের জবাবে অবশ্য তারা চুপ ছিলেন।
আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম কলেজের প্রভাষক জহিরুল ইসলাম রাজু বলেন, ‘সড়ক প্রশস্ত হচ্ছে, আমাদের
দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে। তবে প্রতিবছর ফুলগাজী বাজার অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। তাই পুরো বাজারে রিজিড পেভমেন্ট (কনক্রিট ঢালাই) করলে বন্যার পানি ব্যবসায়ীরা ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন।’
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য : ফেনী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ‘ফেনী-বিলোনিয়া সড়ক স্ট্যান্ডার্ড টু লেনে উন্নীত হচ্ছে। এটি সময়সাপেক্ষ কাজ। ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। প্রায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ বরাদ্দ রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’