গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৪ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে এক শিক্ষার্থীসহ তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, হোটেলে তল্লাশি চালাতে গিয়ে এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন। পরে এ ঘটনায় করা দুটি মামলায় বলা হয়, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের হত্যা করে। সেই সঙ্গে তাদের জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ দেখিয়ে নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আর্থিক সহায়তাও নেয় তাদের পরিবার।

তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার আগে ঠিক কী ঘটেছিল, তা অনুসন্ধান করেছে সমকাল। প্রত্যক্ষদর্শী ও হোটেলকর্মীদের ভাষ্য, তল্লাশি চালানোর পর ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ কারণে যাত্রাবাড়ী থানা পাহারার দায়িত্বে থাকা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তিনজনকে আটক করে পেটায়। এতে দু’জনের মৃত্যু হয়। তারা হলেন– যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী বড় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন (১৯) ও অনলাইনে পোশাক বিক্রেতা সাঈদ আরাফাত শরীফ (২০)। কিছু সময়ের ব্যবধানে আরেকটি ধর্ষণের অভিযোগে আবাসিক হোটেল রোজ ভিউর ব্যবস্থাপক রাহাত হাসান বিপুকে (৫৩) সায়েদাবাদ এলাকায় পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তখনকার কয়েকটি ভিডিওতে ভুক্তভোগী তরুণীর জবানবন্দি, অভিযুক্তদের নির্মমভাবে পেটানো এবং ক্ষমা চাওয়ার প্রমাণ রয়েছে। শিক্ষার্থীসহ দুই তরুণের পরিবারের দাবি, ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা। জুলাই আন্দোলনে যুক্ত থাকায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের হত্যা করে। 

এদিকে ধর্ষণের শিকার তরুণী তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ করলেও পরে এ নিয়ে কোনো মামলা করেননি। পুলিশও তাই এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না। ঘটনার বিষয়ে জানতে ভুক্তভোগীর ফোন নম্বরে কল করা হলে তা রিসিভ করেন এক পুরুষ। তিনি প্রতিবেদকের প্রশ্ন শোনার পর এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। 
ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ সমকালকে বলেন, ধর্ষণের অভিযোগ তুলে তাদের মারধর করা হয়। তবে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে কোনো ভুক্তভোগী আমাদের কাছে আসেনি। ওই সময় কোনো মামলাও হয়নি। সে ক্ষেত্রে ধর্ষণের ঘটনাটি প্রমাণসাপেক্ষ, এখনই আমরা বলতে পারছি না অভিযোগ সত্যি কিনা। আর ধর্ষণে জড়িত হলেও তো কাউকে পিটিয়ে মারা যায় না।
পুলিশ সূত্র জানায়, তিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আট আসামির মধ্যে তরিকুল ইসলাম তপন ও ইশান শাওন অতীতে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অন্য পাঁচজন হলেন– মীনাবাজারের বিক্রয়কর্মী মালাকুতুবের রহমান মাহিন, চাঁদপুরের মাদ্রাসা শিক্ষক মো.

আবদুল্লাহ, শিক্ষার্থী মুস্তাকিম, সাজিদ ওরফে সানজিদ ও সম্রাট এবং বেকার হোসাইন।
ঘটনার সময় স্বেচ্ছাসেবী ছাত্র-জনতার কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন বর্তমানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক রাকিব হোসেন। তিনি বলেন, আসামিদের দু’জন অতীতে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তারা জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে তারা পিটুনিতে নিহতদের সঙ্গে একত্রেই ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য দায়িত্ব পালন করেন। আর গ্রেপ্তার সম্রাট ওই রাতে থানায় ছিলেন না। সকালে তিনি পিটুনিতে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে সহায়তা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা যা বলছেন
ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থী শরীফ হোসেন পাপ্পু বলেন, ১৪ আগস্ট ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আমি যাত্রাবাড়ী থানায় আসি। তখন ধর্ষণে অভিযুক্ত তিনজনকে হাত বেঁধে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। আর ভুক্তভোগী নারী ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। আমি তাঁর অনুমতি নিয়ে ঘটনাটি ভিডিও করি। নারী স্পষ্টভাবে জানান, অভিযুক্ত তিনজন তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। থানা পাহারার দায়িত্বে থাকা তপন ও শাওনের কাছে ঘটনা জানতে চাই। তারা জানায়, ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা কয়েক শিক্ষার্থী তল্লাশি চালাতে গিয়ে কিছু ঝামেলা করেছেন বলে একটি আবাসিক হোটেল থেকে ফোন করে জানানো হয়। সেখানে গিয়ে জানা যায়, হোটেলে তল্লাশির সময় অভিযুক্তরা এক দম্পতিকে আটক করে। পরে পুরুষটিকে এক কক্ষে আটকে রেখে অন্য কক্ষে নারীকে ধর্ষণ করে তারা।
তিনি আরও জানান, ছাত্রদের দলটি ইয়াসিন, শরীফ ও সায়েমকে এক দফা মারধর করে থানায় নিয়ে আসে। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীকেও নিয়ে আসা হয়। পরে আবারও তাদের পেটানো হয়। সেনাবাহিনীর টহল দল একবার ঘটনাস্থলে যায়। তারা চলে যাওয়ার পর সকালে আরেক দফা পিটুনিতে তিনজন সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নেওয়ার পর দু’জনের মৃত্যু হয়।  
আরেক শিক্ষার্থী কাজী শিবলু বলেন, যাত্রাবাড়ী থানায় দিন ও রাত দুই পালায় দায়িত্ব পালন করতাম আমরা। আমি সকালে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে পারি। কুমিল্লা থেকে এক দম্পতি এসে হোটেলে উঠেছিলেন। সেখানে তল্লাশি চালানোর সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই অভিযোগে হোটেল থেকে তিন ছাত্র এবং একজন হোটেলকর্মীকে ধরে আনা হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থী সায়েম কৌশলে পালিয়ে যান। পিটুনিতে দু’জনের মৃত্যু হয়। 

পিটিয়ে বের করে দেওয়া হয় হোটেলকর্মীদের
সায়েদাবাদের ‘ফ্রেশ হোটেল আল নাহিদ আবাসিকে’ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়। সম্প্রতি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো কর্মীদের বেশির ভাগই এখন নেই। সেই রাতে দায়িত্ব পালন করা কর্মী মোখলেসুর রহমান বলেন, ১৩ আগস্ট দু’জন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে প্রথমে হোটেলের ৪০৫ নম্বর কক্ষে ওঠেন। পরে তারা ৪১৫ নম্বর কক্ষে যান। রাত ১০টা-১১টার দিকে ছাত্ররা এসে হোটেলে তল্লাশি চালায়। তখন ওই দু’জনকে সন্দেহ হওয়ায় তাদের ধরে নিয়ে যায়। পরে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ায় রাত ১২টার দিকে তাদের আবার হোটেলে রেখে যায় ছাত্ররা। ওই সময় তারা হোটেলকর্মীদের পিটিয়ে বের করে দেয়। তারা চারজন হোটেলে এবং একজন নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঘণ্টাখানেক পর হোটেল থেকে ছাত্ররা বের হয়ে আসে। আমরা ভেতরে ঢুকে শুনি, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তিনি জাতীয় জরুরি সেবা– ৯৯৯ নম্বরে কল করেছেন। রাত ২টার দিকে আবার ছাত্ররা এসে মেয়েটিকে যাত্রাবাড়ী থানায় নিয়ে যায়। 

ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন অভিযুক্তরা
গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী মুস্তাকিম পুলিশের কাছে ও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি বলেন, সেদিন যাত্রাবাড়ী থানা পাহারা দেওয়ার সময় রাত ১২টার দিকে এক নারী এসে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। সঙ্গে তাঁর স্বামীও ছিলেন। তিনি জানান, সায়েদাবাদের হোটেল আল-নাহিদে ছাত্ররা তাঁকে ধর্ষণ করে। তিনি ধর্ষকদের ছবিও দেখান। এর পর ছাত্ররা গিয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে অভিযুক্ত শরীফ, ইয়াসিন ও সায়েমকে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। তখন তাদের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পেটানো হয়। আমি সকাল ৭টায় বাসায় চলে যাই। তখন তারা জীবিত ছিল। পরে সন্ধ্যায় টিভির খবর দেখে জানতে পারি, শরীফ ও ইয়াসিন মারা গেছে।
মাদ্রাসাশিক্ষক হিজাজ হাসান তিহাম ওরফে আবদুল্লাহ জবানবন্দিতে জানান, ১৩ আগস্ট রাত পৌনে ১টার দিকে তিনিসহ কয়েকজন হোটেল আল-নাহিদে তল্লাশি চালান। সেখানে দুটি মেয়েকে পাওয়া যায়। তাদের যাত্রাবাড়ী থানায় আনা হয়। একটি মেয়ে অভিযোগ করেন– সায়েম, ইয়াসিন ও শরীফ তাঁকে ধর্ষণ করেছে। অন্য মেয়েটির অভিযোগ, হোটেল রোজ ভিউর ব্যবস্থাপক তাঁকে ১৫ দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে। এর পর তিন ছাত্রকে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করে জানতে চাওয়া হয়, তারা কেন ধর্ষণ করেছে? কিছু সময় পর আবদুল্লাহ বাসায় চলে যান। ফজরের নামাজ পড়ে থানায় গিয়ে দেখেন, স্টাম্প ও স্টিলের পাইপ দিয়ে তিন ছাত্রকে পেটানো হচ্ছে। পাঁচ মিনিট পর তিনিসহ কয়েকজন হোটেল রোজ ভিউয়ে যান। তিনি নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তার সঙ্গীরা হোটেলে ঢুকে টিভির মনিটর ও মোবাইল ফোন নিয়ে আসে। এর পর তারা আবারও গিয়ে হোটেলের ব্যবস্থাপকের হাত পেছনে বেঁধে মারতে মারতে নিচে এনে লেগুনায় ওঠায়। সেখানেও তাকে মারধর করা হয়। তিনি বাসায় চলে যান। পরে শুনতে পান, ইয়াসিন, সাঈদ ও হোটেল ব্যবস্থাপক মারা গেছেন।

ঘটনার বর্ণনা দেন তরুণী
অভিযুক্ত তিন ছাত্রকে বেঁধে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের সময়ের একাধিক ভিডিও সমকালের হাতে এসেছে। তাতে দেখা যায়, বোরকা পরা এক তরুণী বলেন, ‘ওরা (তিন তরুণকে দেখিয়ে) আমার হাজব্যান্ডকে থাপ্পড় মেরে পাশের ঘরে নিয়ে যায়। আমাকে আরেক ঘরে নিয়ে গেছে। ওই (এক তরুণকে দেখিয়ে) আমার কাছে গেছে, আমি অর হাত-পা ধরছি; কইছি আমার হাজব্যান্ড আছে, আমার লগে এরম করিস না। কয়, তুই যদি বেশি কথা কস্ তোর হাজব্যান্ডরে মাইরা ফেলামু। আমি অর পা ধইরা কান্দছি।’ পরে একে একে তিনজন তাঁকে ধর্ষণ করে বলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বর্ণনা দেন তরুণী। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, অভিযুক্তরা অন্য ছাত্রদের পা ধরে ক্ষমা চাইছে।

ধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা: পরিবার
ইয়াসিনের মা শিল্পী আক্তার বলেন, ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমার ছেলেকে পিটিয়ে মেরেছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী। যে মেয়েকে ভুক্তভোগী সাজানো হয়েছে, সে খারাপ মেয়ে। তাকে ব্যবহার করে ইয়াসিনসহ তিনজনকে ফাঁসানো হয়। তারা জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় থাকায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা এ ঘটনা ঘটায়।
শিল্পী আক্তার বাদী হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা করেন। সেখানে বলা হয়েছে, ১৪ আগস্ট সকাল সোয়া ৬টা থেকে সাড়ে ৭টার মধ্যে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালনের সময় তিন তরুণকে রড, লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে-কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন সমন্বয়ক সেজে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। 
সাঈদ হত্যার ঘটনায় তাঁর মা মোছা. মরিয়ম বাদী হয়ে প্রায় একই রকম অভিযোগ এনে আদালতে মামলা করেন। দুই মামলাতেই শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ ও স্থানীয় নেতাদের আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে আবদুল্লাহ, সম্রাট, মহিন, শান্ত, রোহান, নিরবসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ থেকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে। 
পিটুনিতে আহত শিক্ষার্থী সায়েম গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তাঁর ভাই মো. আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্ররা হোটেলে তল্লাশি চালানোর পর ওই তরুণী ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ তোলেন।

শহীদ বলার সুযোগ নেই: ফাউন্ডেশন
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান যাচাই কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী পরে পিটুনিতে মারা যান– এটি নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক। যেহেতু ওই ঘটনা ১৪ আগস্টের, তাই তাদের জুলাই শহীদ বলার সুযোগ নেই। এর পরও কোনোভাবে সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন ও সাঈদ আরাফাত শরীফকে শহীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর ভিত্তিতে তারা ফাউন্ডেশন থেকে নগদ ৫ লাখ করে টাকাও নেন। সেই সঙ্গে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের চেকও তাদের পাওয়ার কথা। এর মধ্যেই বিষয়টি আমাদের নজরে আসায় মার্চের শেষের দিকে জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, গণঅভ্যুত্থান-সংক্রান্ত বিশেষ সেল, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস), মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমরা জানতে চেয়েছি, কীভাবে তারা গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হলো।

বিপু হত্যা মামলায়ও নেই ধর্ষণের উল্লেখ
হোটেল ব্যবস্থাপক রাহাত হাসান বিপু হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন তাঁর স্ত্রী রুবিয়া আক্তার। এজাহারে তিনি হোটেলে ঢুকে কর্মীদের মারধর ও লুটপাটের কথা লিখেছেন। পরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গিয়ে স্বামীর লাশ খুঁজে পান। তবে এজাহারে ধর্ষণের ঘটনার কোনো উল্লেখ নেই। এ বিষয়ে জানতে রুবিয়া আক্তারের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
ঘটনার সময়ের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হাত পেছনে বেঁধে লেগুনায় তোলার পর দ্বিতীয় দফায় বিপুকে জুতা দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। আরেকটি ভিডিওতে ঘরের ভেতর তাঁকে লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। তিনি বারবার ক্ষমা চাচ্ছেন।

 


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ন ত কর ম হ ট লকর ম আবদ ল ল হ কর ম দ র ন র সময় ঘটন র ব ত নজনক ন র পর কর ছ ন য বল গ সময় র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান যে পাঁচজনকে নিয়ে কথা বলেছেন, তাঁরা দেশে আসেননি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের ‘জঙ্গি ট্যাগ’ দেওয়া ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘দেশে যে তিনজনকে পাঠানো হয়েছে, তাঁদের কেউ জঙ্গি না। এ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রেস রিলিজও দিয়েছিল। মূলত ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তিনজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’

আজ রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রপ্তানি কার্গো ভিলেজ ও সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের হিমাগার পরিদর্শন করেছেন। পরে সেখানে তিনি সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, ‘মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান যে পাঁচজনকে নিয়ে কথা বলেছে—সেই পাঁচজন দেশে আসেনি। তাদের সঙ্গে আমাদের সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা তদন্ত করে দেখব। তবে বাংলাদেশে এদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ নেই উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’

গত ১০ মাসে আপনারা জঙ্গিবাদের কোনো তথ্য দিতে পেরেছেন—এমন প্রশ্ন তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘যখন ছিল, তখন দিয়েছেন। এখন নেই, তাই দিতে পারেন না। বাংলাদেশে বর্তমানে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ নেই।’

রপ্তানি কার্গো ভিলেজ পরিদর্শন প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এখান থেকে শাকসবজি, ফলমূল প্রভৃতি বিদেশে রপ্তানি করা হয়। রপ্তানি প্রক্রিয়া দেখার জন্যই তিনি কার্গো ভিলেজ পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে আমাদের ফলমূল ও শাকসবজি রপ্তানি করতে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। সে সময় আমাদের ব্যবসায়ীদের অনেকেই কিছুটা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন।’ উপদেষ্টা এ সময় বলেন, ‘যেহেতু আমাদের দেশের রপ্তানির পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে, সেহেতু এখানে যে কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে, সেটিকে আরও বড় করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাইবান্ধায় মদসহ ৩ কারবারি আটক
  • সাংবাদিক এহসান মাহমুদের প্রতি অসম্মানজনক আচরণের প্রতিবাদ ৩২ নাগরিকের
  • মাশরুম খাইয়ে তিনজনকে হত্যার মামলায় অস্ট্রেলীয় নারী আদালতে দোষী সাব্যস্ত
  • মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান যে পাঁচজনকে নিয়ে কথা বলেছেন, তাঁরা দেশে আসেননি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • দেশে কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো ৩ জনের কেউ জঙ্গি নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা