দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজার সংস্কারে যেসব উদ্যোগ নেওয়া আছে, সেগুলো দীর্ঘ মেয়াদে একটা টেকসই ও শক্তিশালী পুঁজিবাজার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে শেয়ারবাজারের এখন যে পরিস্থিতি, তাতে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কারের পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ, এই মুহূর্তে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা সবচেয়ে কম। প্রতিদিনই বাজার ছেড়ে যাচ্ছেন অনেক বিনিয়োগকারী। এ কারণে বাজেটে এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বিনিয়োগকারীদের বাজার ছেড়ে যাওয়া থামে। পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে আসতে উৎসাহিত হন। শুধু কথা দিয়ে বিনিয়োগকারীদের বাজারে ধরে রাখা যাবে না। এ জন্য বাজেটে প্রণোদনা থাকতে হবে। বাজেটে সে ধরনের কোনো ব্যবস্থা না থাকলে বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি বাজারবিমুখ হবেন। তখন বাজারে ফ্রি ফল বা বড় ধরনের পতন শুরু হতে পারে। 

শেয়ারবাজারে ভালো বিনিয়োগকারী আনতে হলে ভালো কোম্পানি বাজারে আনতে হবে। বিদ্যমান কর কাঠামো দিয়ে সেটি সম্ভব হবে না। তাই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির মধ্যেকার করপোরেট কর হারের ব্যবধান বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছি আমরা। আশা করছি বাজেটে তার প্রতিফলন থাকবে। সেটি হলে ভালো কোম্পানি বাজারে আসতে উৎসাহিত হবে। পাশাপাশি বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের বাজারে ধরে রাখতে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর লেনদেন কর কমানোর পাশাপাশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীর মূলধনি মুনাফাকে করমুক্ত করতে হবে। বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর লেনদেনের ওপর থেকে লাখে ৫০ টাকা অগ্রিম আয়কর বা এআইটি কাটা হয়। সেটি কমিয়ে লাখে ১৫ টাকায় নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেছি আমরা। তাতে বিনিয়োগকারীদের লেনদেন মাশুলও কমবে। বর্তমানে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত মূলধনি মুনাফা করমুক্ত। ৫০ লাখ টাকার বেশি মুনাফায় কর রয়েছে। আগামী বাজেটে সেটি তুলে নেওয়া হলে তাতে বড় ও সম্পদশালী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।

তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ