প্রযুক্তি, ইন্টারনেট কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাইরে জীবনযাপন করা এখন প্রায় অসম্ভব। ইন্টারনেট সুবিধা বিস্তৃত হওয়ায় এর বহুমাত্রিক ব্যবহার বেড়েছে বিশ্বজুড়ে। বাংলাদেশও বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে। ইন্টারনেটের অপব্যবহারও ব্যাপক হারে বেড়েছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে হাজারো সুফলের পাশাপাশি কিছু কুফলও পেয়ে বসেছে। সামাজিক মাধ্যমে ফেক নিউজ, গুজব, বিকৃতির সঙ্গে ইন্টারনেটে জুয়া, পর্নোগ্রাফি, অমূলক সব বিষয়ে শিশুকিশোররা জড়িয়ে পড়ছে। ইন্টারনেটের ফাঁদে সর্বস্ব হারাচ্ছেন অনেকে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ‘সাইবার নিরাপত্তায় সচেতনতা’বিষয়ক কর্মসূচি শুরু করেছেন সুহৃদরা। ১৫ মে পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের হলরুমে পঞ্চগড় সুহৃদ সমাবেশ এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
‘নিরাপদ ইন্টারনেট, দক্ষ প্রজন্ম’ প্রতিপাদ্যে জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে কর্মসূচি পালিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.
এতে সুহৃদ আবু বক্কর সিদ্দিক, রিদুয়ান রাহী আরমান, মোহাম্মদ স্বাক্ষরসহ সুহৃদরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা পর্বে বক্তারা ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহারের গুরুত্ব, মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতনতার পাশাপাশি প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন দিলু বলেন, এআই মানবসভ্যতায় গোপনীয়তার জন্য বড় ঝুঁকি। এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে মানব শরীরের সব তথ্য এমনকি হাতের আঙুলের ছাপ পর্যন্ত নকল করা যায়। ফলে যে কোনো মানুষের জিনতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য এবং ফরেনসিক পরিবর্তন করে তার হুবহু নকল বা প্রতিরূপ তৈরি করা যায়। এর ফলে সহজ হয়ে যাবে সাইবার প্রতারণা ও জালিয়াতি কর্মকাণ্ড। নানাভাবে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে এটি। তাই বাঁচতে হলে জানতে হবে। বুঝতে হবে সাইবার অপরাধ কী? কীভাবে এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
অনেক সময় টাকার লোভ দেখিয়ে দেওয়া হয় কিছু ফিশিং লিংক। এসব লিংকের মাধ্যমে বাগিয়ে নিতে পারে ব্যক্তিগত তথ্য এবং গোপন পাসওয়ার্ড, বিপুল পরিমাণ অর্থ। তাই বাঁচতে হলে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মো. মহসীন আলী বলেন, ইন্টারনেটের মতো সমসাময়িক বিষয়ে কর্মশালা এবং আলোচনা অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষার্থীদের জন্য সময়োপযোগী কর্মশালা আয়োজনের জন্য সুহৃদ সমাবেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আফজাল হোসেন বলেন, স্মার্টফোনের এলগারিদম এতটাই সংবেদনশীল আপনি যে ধরনের ছবি বা ভিডিও দেখতে থাকবেন ঠিক সেই ধরনের ছবি বা ভিডিও বারবার আপনার কাছে আসতে থাকবে। এগুলো আপনার তথ্যভান্ডারে জমা হতে থাকবে। কাজেই আপনার মোবাইল ফোন চেক করলে আপনার যাবতীয় তথ্য বেরিয়ে আসবে।
সফিকুল আলম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘মোবাইল আপনার আমার অগোচরেই সব ধরনের কর্মকাণ্ডের তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে এবং এসব তথ্য থেকে মানুষের গতিবিধি নিরূপণ করা যায়। কাজেই মোবাইল এবং ইন্টারনেটের ইতিবাচক ব্যবহার প্রত্যাশিত।’ v
সভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, পঞ্চগড়
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ ল ইসল ম ব যবহ র র জন য আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
পশুর হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধীর দুই নেতা গ্রেপ্তার
চাঁদাবাজির অভিযোগে কুড়িগ্রামের যাত্রাপুর পশুর হাটের ‘বৈধ’ ইজারাদার মাহাবুব রহমান ও তাঁর সহযোগী মো. আলমগীর গ্রেপ্তার হয়েছেন। গত মঙ্গলবার রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার সময় যৌথ বাহিনীর হাতে তারা আটক হন। গতকাল বুধবার সকালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায়। সেখানে বৈধতার কাগজপত্র দেখালে শুনানি শেষে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তার মাহাবুব রহমান কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বেলগাছা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। মো. আলমগীর কুড়িগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক। গত মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে যাত্রাপুর গরুর হাটে রসিদ ছাড়া চাঁদা তোলার অভিযোগ ওঠে। পরে ফেনী জেলার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন আজাদ হাটে টহলরত যৌথ বাহিনীর কাছে অভিযোগ করলে তাদের আটক করা হয়। আলমগীর পুরো ঘটনাকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এজাহারে বলা হয়, ফেনীর ছাগলনাইয়ার মহিষ ব্যবসায়ী আনোয়ার মঙ্গলবার যাত্রাপুর হাট থেকে ১৭টি মহিষ কেনেন। পরে অভিযুক্তরা তাঁকে (আনোয়ার) গরু-মহিষ বিক্রির রসিদ শেডঘরে নিয়ে যান এবং প্রত্যেক মহিষের জন্য ৫০০ টাকা করে ৮ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করেন। এ সময় আনোয়ার তাদের কাছে রসিদ চাইলে তারা তা দেখাতে পারেননি। আনোয়ার বিষয়টি যৌথ বাহিনীকে জানালে এ দু’জনকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, ‘মাহাবুব রহমান ওই হাটের ইজারাদার। তিনি চাঁদাবাজ নন। আমার সঙ্গে মাহাবুব রহমানের কথা হয়েছে। তারা কাগজ প্রদর্শনের সময় পাননি। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের আটক করে যৌথ বাহিনী। সকালে কাগজপত্র দেখালে তাদের জামিন হয়।’
কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মো. হাবিবুল্লাহ জানান, মাহাবুব রহমান যাত্রাপুর হাটের বৈধ ইজারা মালিক। তবে ওই সময়ে তাঁর কাছে কাগজপত্র না থাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক করা হয়। সকালে থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মো. আলমগীর বলেন, দুপুরে যথাযথ কাগজ আদালতে দাখিল করে জামিনে মুক্ত হয়েছি। এটি সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র ছিল।