পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইটের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিগগিরই সক্রিয় স্যাটেলাইটের সংখ্যা পৃথিবীর কক্ষপথের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। আন্তর্জাতিক মহাকাশ নিয়ম চালু না করা পর্যন্ত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সংখ্যা কমানোর পরামর্শও দিয়েছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, গত মে মাস পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার ৭০০ সক্রিয় স্যাটেলাইট পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। এই সংখ্যা দ্রুত লাখ ছাড়িয়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসএক্সের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কারণে মহাকাশে স্যাটেলাইটের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে পৃথিবীর কক্ষপথে স্টারলিংকের ৭ হাজার ৪০০টির বেশি স্যাটেলাইট রয়েছে, যা মোট সক্রিয় স্যাটেলাইটের প্রায় ৬০ শতাংশ। গত বছর গড়ে ৩৪ ঘণ্টায় ১টি রকেট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য। এর ফলে মাত্র ১ বছরের মধ্যে পৃথিবীর কক্ষপথে ২ হাজার ৮০০টির বেশি নতুন স্যাটেলাইট যুক্ত হয়েছে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, মহাকাশে স্যাটেলাইটের উত্থান সবে শুরু হয়েছে। দ্রুত এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। তখন মহাকাশে যানজট, ধ্বংসাবশেষ ও দূষণ বাড়বে। এর ফলে জ্যোতির্বিদ্যাসংক্রান্ত গবেষণার ওপর চাপ তৈরি হবে। বর্তমানে মহাকাশে নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য স্পেসএক্সের পাশাপাশি অ্যামাজনের প্রজেক্ট কুইপার, ওয়ানওয়েব ও চীনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইট পাঠানোর জন্য কাজ করছে।

এ বিষয়ে কানাডার বিজ্ঞানী অ্যারন বোলি জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্যাটেলাইটের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মহাকাশের ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি জ্যোতির্বিদ্যাচর্চায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া বায়ুমণ্ডলও দূষিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহাকাশ নিয়মকানুন কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পরিমাণ কমানো প্রয়োজন।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স য ট ল ইট র স খ য

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ