চৌদ্দগ্রামে মারধরে আহত যুবকের মৃত্যু, থানায় অভিযোগ
Published: 4th, February 2025 GMT
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে প্রতিপক্ষের মারধরে আহত মো. আতিক নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকার একটি হাসপাতাল মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের বাবা থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহতের নানা পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশীদ মজুমদার।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে ৪ সাংবাদিককে আটকে মারধর, ‘গুলি’
শেরপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২
মারা যাওয়া আতিক পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সোনাকাটিয়া গ্রামের ব্যাপারী বাড়ির আবদুল মান্নান মিয়ার ছোট ছেলে। তিনি চৌদ্দগ্রাম সরকারি পাইলট বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের বাবা আবদুল মান্নান মিয়া থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করেন, আতিক সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে সোনাকাটিয়া গ্রামের মধ্যমপাড়ায় মোতালেবের দোকানে যান। সেখানে পূর্ব থেকে যোগসাজশে উপস্থিত থাকা একই গ্রামের নূরে আলম, আমান ও নেয়ামত উল্লাহর নেতৃত্বে নাম না জানা আরো ৫-৬ জন আতিককে মারধর করেন। হত্যার উদ্দেশ্য লোহার রড, এসএসপাইপ, বিদেশি বড় টর্চ লাইট, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আতিকের মাথা, কান, নাক ও মুখ জখম করে তারা। এ সময় আতিক ও উপস্থিত একরাম হোসেন রনি, আসিফ ও আল আমিনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। তারা হামলাকারীদের কবল থেকে তাকে (আতিক) উদ্ধার করে।
পরিবারের লোকজন আতিককে দ্রুত চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আতিককে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলেও আইসিইউ সঙ্কটে পরে ঢাকার বিএনকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয় আতিককে। ওই হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন মঙ্গলবার বিকেলে আতিকের মৃত্যু হয়।
এদিকে, আতিকের মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে বিকেল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মারা যাওয়া যুবকের পরিবার থানায় অভিযোগ দিয়েছে।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
তফসিলের পরদিন ‘প্রার্থী’ গুলিবিদ্ধ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকায় দিনের বেলায় গুলি করা হলো ভোটে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে (৩৩)। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছিলেন। হাদি ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।
গুলি করার পর আহত হাদিকে রিকশায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলি তাঁর মাথায় লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলনে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখার পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। সাংস্কৃতিক এই প্ল্যাটফর্ম তাদের লক্ষ্য ঠিক করে, ‘সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ’। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী বক্তব্য হাদিকে আলোচনায় আনে। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার সময় হাদি সক্রিয় ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দিতে বলেছিলেন।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনী তহবিলের হিসাব প্রকাশ এবং তাঁর ওপর ময়লা পানি নিক্ষেপের ঘটনায় ‘অসুবিধা নেই’ উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েও আলোচনায় আসেন হাদি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে একটি ব্যাটারির রিকশায় ছিলেন হাদি ও তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি। তাঁদের পেছনে পেছনে আসে একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে চলন্ত অবস্থায় সেই মোটরসাইকেল থেকেই একাধিক গুলি করা হয় হাদিকে।
ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান