বিনা নোটিশে পল্লী বিদ্যুতের চাকরিচ্যুত ২৮ কর্মীর চাকরি পুনর্বহালের দাবি
Published: 4th, February 2025 GMT
দমন পীড়ন ও নির্যাতন বন্ধ এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারসহ চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুতের ভুক্তভোগী কর্মকর্তা–কর্মচারী সমিতি।
মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করা এবং যৌথ বাহিনী দ্বারা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেধড়ক মারধর ও ধরপাকড় করা হয়েছে।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে সরকারের নিকট ৫টি প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন সমিতির নেতারা। তাদের প্রত্যাশাগুলো হচ্ছে, মামলা প্রত্যাহারপূর্বক সব কর্মকর্তা–কর্মচারীকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা। দ্বৈতনীতি পরিহারপূর্বক আরইবি–পবিস একীভূতকরণ। অবশিষ্ট চুক্তিভিত্তিক অনিয়মিতদের চাকরি নিয়মিত করণ করা। বিগত সময়ে আরইবি’র দুর্নীতিবাজদের শাস্তির জন্য নিরপেক্ষ কমিশন গঠন করা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা আরও বলেন, দেশের ৮০ ভাগ অঞ্চলে প্রায় ১৪ কোটি মানুষের বিদ্যুৎ সেবায় নিয়োজিত ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। নিয়ন্ত্রক সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সীমাহীন দুর্নীতি, নিম্নমানের মালামাল ক্রয় ও নন-স্ট্যান্ডার্ড লাইন নির্মাণের কারণে সৃষ্ট গ্রাহক ভোগান্তি। মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সব ধরনের পলিসি প্রণয়নসহ আরইবি-পবিস দ্বৈত ব্যবস্থাপনা নিরসনে গত বছর জানুয়ারি থেকে অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং জরুরি সেবায় নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিক, অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের ২ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করা হয়।
এসময় সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে স্মারকলিপি প্রেরণ, বিভিন্ন দফায় গ্রাহক সেবা চালু রেখে কর্মবিরতি, লং মার্চ টু আরইবি, সারাদেশে একযোগে মানববন্ধন ইত্যাদি কর্মসূচি পালন করা হয়। এ অবস্থায় যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে সরকারের পক্ষ থেকে গত বছর আগস্টে বিদ্যুৎ বিভাগ, আরইবি এবং পবিসের সমন্বয়ে ০৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়।
কিন্তু সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা না করে বিদ্যমান কাঠামো বহাল রাখার বিষয়ে মতামত দেয় আরইবি। পরবর্তীতে উক্ত কমিটি বিলুপ্ত করে সরকারের পক্ষ থেকে পুনরায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। প্রায় সাড়ে ০৩ মাস অতিবাহিত হলেও কমিটির প্রতিবেদন সম্পন্ন হয়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে অনুমোদনহীন মেলায় জুয়া ও লটারি বাণিজ্য
গাজীপুরের শিমুলতলী এলাকায় বাণিজ্য মেলার আড়ালে বসেছে জুয়ার আসর, চলছে লটারি প্রতারণা।
প্রবেশমূল্যের নামে প্রতিটি দর্শনার্থীর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা। সেই টিকিট দিয়ে ‘লটারি কুপন’ বলে দাবি করে বড় পুরস্কারের লোভ দেখানো হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেউই পুরস্কার পাচ্ছেন না। ফলে সবচেয়ে বেশি প্রতারিত হচ্ছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় গুড়পুকুর মেলা হচ্ছে না
স্কয়ার ফার্মার উৎপাদন দেখে জাম্বিয়া শিল্প সচিবের প্রশংসা
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বাণিজ্য ও কুটির শিল্প মেলা নাম দেওয়া হলেও এটির মূল্য উদ্দেশ্য লটারি বাণিজ্য ও জুয়া (হাউজি) খেলা। প্রতিদিন শত শত অটোরিকশা দিয়ে মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় লাখ লাখ লটারি বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্ত চিত্র ভিন্ন। লটারি যারা পাচ্ছে তারা মেলার কর্তৃপক্ষের সাজানো লোকজন। দিনমজুর, রিকশাচালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ স্বল্প টাকার বিনিময়ে ভাগ্য ফেরানোর আশায় কুপন কিনলেও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের।
জানা গেছে, গাজীপুরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা বসানো হলেও তা জুয়ার আসর নামে পরিচিতি পেয়েছে। র্যাফেল ড্র এর নামে মোটরসাইকেল, স্বর্ণ, ল্যাপটপ, টিভি, ফ্রিজ, ডিনারসেটসহ নানা রকম পুরস্কারের প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রি হচ্ছে বিপুল সংখ্যক টিকিট।
আর এসব টিকিট বিক্রির জন্য টার্গেট করা হয়েছে খেটে খাওয়া মানুষদের। ফলে রিকশাচালক ও দিনমজুর শ্রেণির লোকজন অনেকে র্যাফেল ড্র ও জুয়ায় আসক্ত হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এর আগেও একই মেলায় নাগরদোলা হেলে পড়ে পাঁচজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল, যা এলাকাজুড়ে বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির পক্ষে একটি অবহিতকরণ চিঠি বিতরণ করা হয়। চিঠির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে- ‘বিএনপিএফ লিমিটেড আর্মি ফার্ম্মা ফ্যাক্টরি নির্ধারিত ফাঁকা স্থানে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার আয়োজন প্রসঙ্গে’। বেনারশী ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের স্বত্বাধিকারী বাদল মিয়া এ ‘ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প’ মেলার আয়োজন করে।
এই মেলার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে ডুয়েটের সচেতন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবরের একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে আর্মি ফার্মা মাঠে অনুষ্ঠিত মেলায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি প্রসঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানানো হয়। আবেদনে কয়েকটি সমস্যার কথা তুলে ধরে চার দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, মহানগরীর শিমুলতলী এলাকায় সেনানিবাসের কাছে বিএমটিএফ লিমিটেড আর্মি ফার্মা ফ্যাক্টরির জন্য নির্ধারিত স্থানে আয়োজিত ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাটি মূলত নামকাওয়াস্তে হলেও এর আড়ালে রয়েছে লটারি বাণিজ্য ও জুয়ার আসর।
গাজীপুর প্রশাসনের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, মেলা পরিপত্র অনুযায়ী জেলা ও মহানগর এলাকায় ১ মাসের জন্য মেলার অনুমতি দিতে পারেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু এ মেলা আয়োজনের জন্য অনুমতির চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর কোনো আবেদনই করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারা একটি অবহিতকরণ চিঠি দিয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর অননুমোদিত মেলা বন্ধ করার জন্য মহানগর পুলিশকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনরে পক্ষ থেকে।
গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সালমা খাতুন বলেন, “জেলা প্রশাসকের কাছে কেউ কোনো আবেদন করেনি। তাই মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়ার প্রশ্ন অবান্তর।”
এ বিষয়ে মেলা আয়োজকদের একজন বলেন, “আমরা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি।” তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ক্যান্টর্নমেন্ট বোর্ড।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মোহাম্মদ জাহিদুর হাসান বলেন, “জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল মেলার বিষয়ে। আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি মেলার অনুমতির জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেনি। তাই আমরা কোনো অনুমতি দেইনি।”
ঢাকা/রেজাউল/মেহেদী