মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

অভিযুক্ত এসএম সানবিম সিফাত বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার ওই পোস্টের বিষয়ে এক শিক্ষার্থী জিজ্ঞাসা করলে জবাবে তিনি বলেন, ‘আই ডোন্ট কেয়ার।’

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এ দাবি জানান। 

সম্প্রতি ফেসবুকে মহানবী হয়রত মুহাম্মদ (সা.

)-কে নিয়ে কটূক্তি ও অবমাননাকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া বিভিন্ন সময় ইসলাম নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করারও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম বলেন, “আমাদের সহপাঠী সানবিম সিফাত ক্লাসরুমেও অনেক সময় ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছে। ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হয়রত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে তার কটূক্তি ও অবমাননাকর মন্তব্য লক্ষ্য করেছি আমরা। ফেসবুকে দেওয়া তার পোস্ট নিয়ে আমরা জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ‘আই ডোন্ট কেয়ার’। তার ঔদ্বত্যপূর্ণ আচরণে আমরা সহপাঠী হিসেবে বেশ লজ্জিত। আমরা তাকে আমাদের ব্যাচ থেকে বয়কট করেছি এবং তার যথাযথ শাস্তির দাবি জানাই।”

রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও অনেক শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত এমন ঘৃণিত কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হাতিয়ার বানিয়ে সবসময় ইসলাম ধর্ম ও মহানবী হয়রত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করে বেড়ায়। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন এমন কটূক্তি করা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কার্যকর শাস্তির ব্যবস্থা করেন।”

আরবি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এএইচএম রিয়াদ বলেন, “প্রতিনিয়ত এমন ঘৃণিত কাজের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় তথা দেশব্যাপী ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হবে। যারা এসব কাজ করছে, তারা কাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে, তা খুঁজে দেখতে হবে। এটা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশও হতে পারে। আমরা চাই সানবিম সিফাতকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। যাতে আগামীতে কেউ ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করতে না পারে।”

এদিকে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রক্টর অফিসে গিয়ে সানবিম সিফাতকে বহিষ্কারের লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “আমরা বিষয়টি জেনেছি এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। সানবিম সিফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। দ্রুত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভা ডেকে তাকে যথাযথ শাস্তি দেওয়া হবে।”

গত বছর ১৪ আগস্ট এ নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “আজকে যেমন কিংবদন্তীর ইতিহাসে আসল রূপ ফাঁস হচ্ছে, ঠিক তেমনি সকল নেতা-মনিষীর জীবনীর নিরপেক্ষ ইতিহাস খুঁজে দেখুন তাদের কালো দিক প্রকাশ পাবে। এমনকি যাকে আপনারা সর্বকালের শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে দাবি করেন, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে তার ইতিহাস খুঁজলে দেখবেন তিনিও ধোয়া তুলসী পাতা না।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ভয়াবহ সেই সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন পবনদীপ

কয়েক মাস আগে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ইন্ডিয়ান আইডলের ১২তম সিজনের বিজয়ী পবনদীপ। এরপর গত ৭ মাস ধরে শয্যাশায়ী। দীর্ঘ সময় পর দুঃসহ সেই ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন পবনদীপ।

একটি পডকাস্টে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে পবনদীপ জানালেন, দুর্ঘটনায় তাকে বহনকারী গাড়িতে আগুন ধরে যায়, তার পা ও হাত ভেঙে যায়।  

আরো পড়ুন:

শাহরুখের নম্বরপত্র ভাইরাল, কোন বিষয়ে কত পেয়েছেন?

বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের তর্ক হওয়া দরকার: কাজল

ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর আগে কেউ তাদের সাহায্য করেননি। এ তথ্য উল্লেখ করে পবনদীপ বলেন, “পুলিশ না আসা পর্যন্ত আমাদের কেউই সাহায্য করেননি। গাড়িতে যখন আগুন ধরে যায়, তখন আমারা গাড়ির ভেতরেই ছিলাম। একজন আমাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ির ভেতর থেকে বাইরে ফেলে দেয়। আমি সঠিক জানি না, কথক্ষণ গাড়ির ভেতরে ছিলাম। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি গাড়ির বাইরে।” 

দুই পা ও এক হাত ভেঙে যায় পবনের। এ তথ্য উল্লেখ করে এই গায়ক বলেন, “এরপর আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার দুই পা ও এক হাত ভেঙে গিয়েছিল। আমি বাড়িতে ফোন করে পরিবারের সদস্যদের হাসপাতালে আসতে বলি। আমি শুধু ভাবছিলাম, যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়। এখন অনেক ভালো আছি।” 

দুঃসহ স্মৃতিচারণ করে পবনদীপ বলেন, “দুর্ঘটনার প্রথম মাসে এক পাশ থেকে অন্য পাশে নড়তে পারতাম না। এখন আমি মোটামুটি হাঁটতে পারি; যা আমাকে আনন্দ দেয়। হাঁটতে পারার যে সত্যিকারের আনন্দ এখন তা উপলব্ধি করতে পারছি। যখন এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তখন আপনাকে তা মেনে নেওয়া উচিত এবং ইতিবাচক থাকা জরুরি। আমি হাঁটতে শুরু করেছি। আশা করছি, দ্রুতই আরো সুস্থ হয়ে উঠব।” 

গত ৫ মে ভোররাত ৩টা ৪০ মিনিটে ভারতের আহমেদাবাদে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। বর্তমান শারীরিক অবস্থার বর্ণনা দিয়ে পবনদীপ বলেন, “দুর্ঘটনার পর শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলাম। ভাঙা পা নিয়ে যখন মুম্বাইয়ের আসি। তারপরও আরো এক মাস আমাকে অচল অবস্থায় থাকতে হয়েছিল। ধীরে ধীরে আমি আবার হাঁটা শুরু করেছি, এমনকি গিটার বাজানোও শুরু করেছি। আমার হাতে কিছুটা শক্তি ফিরে পেয়েছি। যদিও এখনো আরো সেরে ওঠা প্রয়োজন।” 

জনপ্রিয় টিভি রিয়েলিটি শো ‘ইন্ডিয়ান আইডল’। এই প্রতিযোগিতার ১২তম আসরে বিজয়ী হন ভারতের উত্তরখন্ডের পবনদীপ। অডিশনের পর থেকেই গান দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মন জয় করেন পবন। এ আসরে দ্বিতীয় রানারআপ নির্বাচিত হন অরুণিতা। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ