আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রাথমিকভাবে ৮ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। বাজেটের আকার এমন ধরেই আয়-ব্যয়ের খসড়া রূপরেখা তৈরি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সামনে এটি তুলে ধরা হবে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ সংক্রান্ত সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান উপস্থিত থাকবেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। 

সভায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে একটি সম্ভাব্য সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করবেন অর্থ সচিব। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঘোষিত বাজেটের আকার ধরা হয় ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয় ৬ লাখ ২ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা। এর ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্যও ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বিশাল বাজেট রেখে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার। 
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুসারে, আগামী অর্থবছরের যে বাজেট বরাদ্দ ধরা হয়েছে, তা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৪ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চেয়ে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে দেওয়া হয়েছিল চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট। গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সম্পদ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বৈঠকে আগামী অর্থবছরের জন্য ৮ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটের খসড়া তুলে ধরা হয়। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আকার খানিকটা কমানো হয়েছে। আগামী জুনে এ বাজেট চূড়ান্ত করার সময় কিছু পরিবর্তন হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি ও সরকারের আর্থিক সক্ষমতা বেশি না থাকায় আগামী বাজেটেও ব্যয় সাশ্রয়ী হওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, আগামী অর্থবছরের জন্য ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট হওয়া উচিত। 

জানা গেছে, আগামী বাজেটেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে কর্মসংস্থান বাড়ানো ও সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ব্যয় ৮ লাখ কোটি টাকার বেশিই ধরা হচ্ছে। কারণ অর্থ মন্ত্রণালয় মনে করছে, সরকারি ব্যয় বিশেষত উন্নয়ন ব্যয় একেবারে কমে গেলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না। 
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আগামী অর্থবছরে সরকারি ব্যয়ের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। তবে প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এডিপির বাস্তবায়ন মাত্র ১৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বেশ কিছু রাজনৈতিক প্রকল্প কাটছাঁট করা হয়েছে। আবার কিছু প্রকল্পে পর্যালোচনা করে কমানো হয়েছে ব্যয়। একই সঙ্গে সম্প্রতিক রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে উন্নয়ন কাজে কাঙ্ক্ষিত গতি না আসায় এডিপি বাস্তবায়ন কমে গেছে। অর্থ বিভাগ মনে করছে, অর্থবছর শেষে এডিপির বরাদ্দের ১ লাখ কোটি টাকার বেশি অব্যবহৃত থেকে যেতে পারে। তাই আগামী বাজেটে বরাদ্দ যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনা হচ্ছে।

জানা গেছে, বাজেট ঘাটতি কমিয়ে আনতে আগামী অর্থবছর দেশের অভ্যন্তরীণ খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে এবারই প্রথম করজাল সম্প্রসারণের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সম্ভাব্য আয়করদাতাদের চিহ্নিত করা হবে। বাজেটে আয়কর খাত থেকে বেশি রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করা হবে।
সূত্র জানায়, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য এনবিআরকে অন্তত ৫ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হতে পারে। চলতি বাজেটে সংস্থাটির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। অবশ্য প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন থেকে সংস্থাটি প্রায় ৫৭ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে।  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

যৌন হয়রানির অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য বাধ্যতামূলক করার আহ্বান

যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ–২০২৫–এর খসড়ায় অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অভিযোগ তদন্ত করা ও পদক্ষেপ নেওয়া বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সংগঠনটি অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘যৌন হয়রানির অভিযোগ কমিটি: বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা নেই’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকে জানা যায়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রস্তুত করা যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ–২০২৫–এর খসড়াতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে গঠিত অভিযোগ কমিটিতে বাইরের কাউকে রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রাপ্যতা সাপেক্ষে বাইরের সদস্য রাখা যাবে।

বিবৃতিতে বলা হয় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এক রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ করতে অভিযোগ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়। ওই অভিযোগ কমিটিতে প্রতিষ্ঠানের বাইরের দুজন সদস্য রাখার কথা বলা হয়েছে। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, যৌন হয়রানির ঘটনায় বস্তুনিষ্ঠ তদন্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণে অনেক সময় ব্যত্যয় ঘটে। অভিযোগ কমিটির কাজ বস্তুনিষ্ঠ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালনার জন্য কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বাধ্যবাধকতা থাকা প্রয়োজন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমতাবস্থায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ–২০২৫–এর খসড়াতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধকল্পে গঠিত অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য রাখার বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে হেবা সম্পত্তী সাইনবোর্ড উপড়ে ফেলায় থানায় অভিযোগ 
  • গার্ডিয়ানে কাজ করা গাজার সাংবাদিক পেলেন ব্রিটিশ জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ডস
  • ট্রাম্প অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দিলেও থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে লড়াই চলছে
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা শুরু আজ
  • ড্রাগন ফল বিক্রি করে কারও আয় ১০ লাখ, কারও ১৫ লাখ টাকা
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫)
  • সংসদ নির্বাচনের একই দিনে পৃথক ব্যালটে গণভোট, প্রজ্ঞাপন জারি
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১২ ডিসেম্বর ২০২৫)
  • যৌন হয়রানির অভিযোগ কমিটিতে বাইরের সদস্য বাধ্যতামূলক করার আহ্বান
  • ডিসেম্বরে ১০ দিনে প্রবাসী আয় ১২৯ কোটি ডলার