ক্ষমা চাইলেন প্রকাশ্যে কান ধরে উঠবস করানো সেই ব্যবসায়ী নেতা
Published: 13th, March 2025 GMT
রমজান মাসে দিনের বেলা হোটেলে খাবার খাওয়ায় কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের চকবাজার এলাকার বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল আজিজ। ভুক্তভোগী দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে সদর থানা এলাকায় এক ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চান তিনি।
ভিডিও বার্তায় আব্দুল আজিজ বলেন, ‘কয়েকজন হোটেলে খাবারের জন্য ঢুকেছেন। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তাৎক্ষণিক আমি গিয়ে উনাদের বলেছি, আপনারা কেন খাচ্ছেন। আপনারা তো মুসলমান। সেক্ষেত্রে তারা বলেছেন, রোজা রাখেননি। আমি বলেছি, আপনারা রোজা রাখবেন। আমি আসলে যে কাজটি করেছি, এটি অন্যায়, অপরাধ। এটা ধর্মীয় অনুভূতি, সেজন্য এটা আমার করা ঠিক হয়নি। এজন্য আমি উনাদের কাছে ক্ষমা চাই। উনারা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি এ ধরনের পুনরাবৃত্তি আর কখনও করব না। এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত হব না।’
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘আবদুল আজিজকে থানায় ডেকে আনা হয়। তবে ভুক্তভোগী কেউ তার বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ দেননি। এছাড়া আব্দুল আজিজ এ ঘটনায় নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। কোন অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় বুধবার রাতে সদর থানায় তাকে বেশ কিছুক্ষণ আটক রাখা হয়। আবদুল আজিজ জানিয়েছেন, তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন। পরে কয়েকজন ব্যবসায়ীর অনুরোধে রাত ১২টার দিকে মুচলেকা নিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুচলেকায় লেখা আছে- পুলিশ যেকোনো সময় তাকে থানায় হাজির হতে বললে তিনি হাজির হবেন। এছাড়া দেশের আইন মেনে চলবেন। এমন শর্তে তার জামিন হয় বলে ব্যবসায়ীদের কয়েকজন জানান।
বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর শহরের থানা রোড এলাকায় হিন্দুদের কয়েকটি পর্দা লাগানো খাবার হোটেলে লাঠি হাতে বণিক সমিতি নেতা আজিজকে অভিযান চালাতে দেখা যায়। ওই সময় তিনি কয়েকজন যুবকসহ এক বৃদ্ধকে হোটেল থেকে বের করে রাস্তায় এনে প্রকাশ্যে কানে ধরে উঠবস করতে বাধ্য করেন। সেই সঙ্গে দিনের বেলায় মুসলিম কেউ দোকানে খেলে সে দোকান পুরো রমজান মাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনাটির কিছু ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অনেক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে শুরু হয় নানা সমালোচনা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যক্তিরা বলেন, ‘আমরা প্রকাশ্যে খাবার খাইনি। পর্দার আড়ালে খাবার খেয়েছি। দোষের কি? এ জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব। তাই বলে প্রকাশ্যে কান ধরে এভাবে সাজা দিল ভাবতে পারিনি। ওনি প্রশাসনের লোক ছিলেন না।’
এ ঘটনা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ইতিবাচক হিসেবে নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। তারা বলেন, এমনিতে বেচাকেনা কম, তার উপর ক্রেতাদের সঙ্গে এমন আচরণ। এতে বেচাকেনা কমে গেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দ ল আজ জ ব যবস য় ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কার দিয়ে ইনফান্তিনো কি ‘ফেঁসে’ যাচ্ছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়ে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো সংস্থাটির রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নিয়ম ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ফিফা নৈতিকতা কমিটির কাছে তদন্তের অনুরোধ জানিয়েছে একটি মানবাধিকার সংস্থা।
গত সপ্তাহে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে ‘ফিফা শান্তি পুরস্কার’ তুলে দেন ইনফান্তিনো। ফিফাপ্রধান এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট এবং সাক্ষাৎকারও দেন। এর মাধ্যমে ইনফান্তিনো ফিফার নিরপেক্ষতার নিয়মের ‘চারটি স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন’ বলে অভিযোগ মানবাধিকার সংস্থা ফেয়ারস্কয়ারের।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিফার এথিকস কমিটিতে ফেয়ারস্কয়ার একটি অভিযোগপত্র পাঠিয়েছে। চিঠিতে ফিফা শান্তি পুরস্কারের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘একজন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক নেতাকে এ ধরনের একটি পুরস্কার প্রদান করা, ফিফার নিরপেক্ষতার কর্তব্যের স্পষ্ট লঙ্ঘন।’
ফিফা সভাপতির সংস্থার কৌশলগত দিকনির্দেশনা, নীতি ও মূল্যবোধ নির্ধারণ করার কোনো একক কর্তৃত্ব নেই বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। বিবিসি স্পোর্টস মন্তব্যের জন্য ফুটবলের বিশ্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তবে এ প্রতিবেদন প্রকাশ পর্যন্ত সাড়া পায়নি।
২০২৬ সালের জুন-জুলাইয়ে কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে বিশ্বকাপ ফুটবলের যৌথ আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। ৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনের কেনেডি সেন্টারে বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত হয়। ড্র শুরুর আগে ট্রাম্পকে ‘শান্তির জন্য ব্যতিক্রমী ও অসাধারণ পদক্ষেপ গ্রহণ’ এবং ‘বিশ্বজুড়ে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার’ স্বীকৃতি হিসেবে ফিফা শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে একটি সোনালি ট্রফির পাশাপাশি ট্রাম্পকে একটি পদক ও সনদ তুলে দেন ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো।
আরও পড়ুনট্রাম্পকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলো, বিশ্বকাপ ফিফার টুর্নামেন্ট, সিদ্ধান্তও ফিফাই নেয়০২ অক্টোবর ২০২৫পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে একটি ভিডিও দেখানোর পর ইনফান্তিনো তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘একজন নেতার কাছ থেকে আমরা এটাই চাই’ এবং ‘প্রেসিডেন্ট সাহেব, আপনি সব সময় আমার সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে পারেন।’
এর আগে অক্টোবরে ইনফান্তিনো ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে বলেছিলেন ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার ‘নিশ্চিতভাবেই পাওয়ার যোগ্য’। গত মাসে মায়ামিতে আমেরিকান বিজনেস ফোরামে একটি সাক্ষাৎকারের সময় ইনফান্তিনো বলেন, ‘আমাদের সবারই (ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে) যা করছেন, তাঁকে সমর্থন করা উচিত। কারণ, আমি মনে করি তিনি বেশ ভালো করছেন।’
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ট্রাম্প ও ইনফান্তিনো