রমজান মাসে দিনের বেলা হোটেলে খাবার খাওয়ায় কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের চকবাজার এলাকার বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল আজিজ। ভুক্তভোগী দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে সদর থানা এলাকায় এক ভিডিও বার্তায় ক্ষমা চান তিনি। 

ভিডিও বার্তায় আব্দুল আজিজ বলেন, ‘কয়েকজন হোটেলে খাবারের জন্য ঢুকেছেন। রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় তাৎক্ষণিক আমি গিয়ে উনাদের বলেছি, আপনারা কেন খাচ্ছেন। আপনারা তো মুসলমান। সেক্ষেত্রে তারা বলেছেন, রোজা রাখেননি। আমি বলেছি, আপনারা রোজা রাখবেন। আমি আসলে যে কাজটি করেছি, এটি অন্যায়, অপরাধ। এটা ধর্মীয় অনুভূতি, সেজন্য এটা আমার করা ঠিক হয়নি। এজন্য আমি উনাদের কাছে ক্ষমা চাই। উনারা যেন আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি এ ধরনের পুনরাবৃত্তি আর কখনও করব না। এ ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত হব না।’

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘আবদুল আজিজকে থানায় ডেকে আনা হয়। তবে ভুক্তভোগী কেউ তার বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগ দেননি। এছাড়া আব্দুল আজিজ এ ঘটনায় নিজেও ক্ষমা চেয়েছেন। কোন অভিযোগ না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

পুলিশ জানিয়েছে, কান ধরে উঠবস করানোর ঘটনায় বুধবার রাতে সদর থানায় তাকে বেশ কিছুক্ষণ আটক রাখা হয়। আবদুল আজিজ জানিয়েছেন, তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন। পরে কয়েকজন ব্যবসায়ীর অনুরোধে রাত ১২টার দিকে মুচলেকা নিয়ে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুচলেকায় লেখা আছে- পুলিশ যেকোনো সময় তাকে থানায় হাজির হতে বললে তিনি হাজির হবেন। এছাড়া দেশের আইন মেনে চলবেন। এমন শর্তে তার জামিন হয় বলে ব্যবসায়ীদের কয়েকজন জানান।

বুধবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর শহরের থানা রোড এলাকায় হিন্দুদের কয়েকটি পর্দা লাগানো খাবার হোটেলে লাঠি হাতে বণিক সমিতি নেতা আজিজকে অভিযান চালাতে দেখা যায়। ওই সময় তিনি কয়েকজন যুবকসহ এক বৃদ্ধকে হোটেল থেকে বের করে রাস্তায় এনে প্রকাশ্যে কানে ধরে উঠবস করতে বাধ্য করেন। সেই সঙ্গে দিনের বেলায় মুসলিম কেউ দোকানে খেলে সে দোকান পুরো রমজান মাস বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। ঘটনাটির কিছু ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় অনেক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে শুরু হয় নানা সমালোচনা। 

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ব্যক্তিরা বলেন, ‘আমরা প্রকাশ্যে খাবার খাইনি। পর্দার আড়ালে খাবার খেয়েছি। দোষের কি? এ জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব। তাই বলে প্রকাশ্যে কান ধরে এভাবে সাজা দিল ভাবতে পারিনি। ওনি প্রশাসনের লোক ছিলেন না।’ 

এ ঘটনা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ইতিবাচক হিসেবে নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। তারা বলেন, এমনিতে বেচাকেনা কম, তার উপর ক্রেতাদের সঙ্গে এমন আচরণ। এতে বেচাকেনা কমে গেছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ ল আজ জ ব যবস য় ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতের হাই অ্যালার্ট

পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের সাথে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, “ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের কর্মকাণ্ড এবং সেখানে পাকিস্তানের আইএসআই ও পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তাদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সীমান্তে সংস্থাগুলোকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাকিস্তান তার বাংলাদেশি প্রতিপক্ষদের সাথে সাথে সেখানকার উগ্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলির সাথে সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করছে। দুই দেশের মধ্যে শত্রুতা শুরু হলে ভারতের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পাকিস্তান সম্ভবত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতীয় এলাকায় সমর্থনকারী এই উগ্রপন্থী গোষ্ঠীগুলোকে ব্যবহার করতে পারে।”

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের প্রতি বৈরী মনোভাব প্রকাশ করছে ভারত। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো বাংলাদেশ নিয়ে নিয়মিতভাবে ভুয়া নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করছে। এর পাশাপাশি ভারতে ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির নেতারা বাংলাদেশের ব্যাপারে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন।

ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলাকালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে দাঙ্গার পর ভারতীয় সংস্থাগুলো বাংলাদেশ সীমান্তের পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মুর্শিদাবাদ জেলায় সহিংসতায় তিনজন নিহত এবং শত শত আহত হয়। 

প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলায় ২২ জন নিহত হন। এ ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে ভারত। গত কয়েক দিন ধরেই দুই দেশের সীমান্তে গুলি বিনিময় হচ্ছে। বুধবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ভারত আগামী ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানে আক্রমণ করতে পারে।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ