বিশ রমজানের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার আহ্বান
Published: 13th, March 2025 GMT
শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, বোনাসসহ সব পাওনা বিশ রমজানের মধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিশোধ করতে হবে। একইসঙ্গে শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতনের কমপক্ষে পনেরো দিনের বেতন মালিকপক্ষকে তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী দিতে হবে।
আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর পূর্ববর্তী শ্রম পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং শিল্প সেক্টরের শ্রমিকগণের বেতন বোনাস ও ছুটি সংক্রান্ত বুধবার রাতে রাজধানীর বিজয়নগর শ্রম ভবনে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) ৮৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের সদস্য হিসেবে শ্রমিকপক্ষ, মালিকপক্ষ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিবৃন্দ, শিল্পাঞ্চল পুলিশ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সরকার পক্ষ, মালিকপক্ষ এবং শ্রমিকপক্ষ কর্তৃক শ্রমিকদের সকল বকেয়া, বেতন ও বোনাস পরিশোধ, ঈদে শ্রমিকদের ছুটি, শ্রমঘন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শ্রমঘন এলাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক টিসিভি পণ্য বিতরণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় ৭টি বিষয়ে যৌথ সিদ্ধান্ত হয়। তা হলো
১। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর এর পূর্বে কোন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত বা ছাঁটাই করা যাবে না।
২। কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক প্রতিনিধিগণ আলোচনা করে শ্রম আইন অনুযায়ী দ্রুত ঈদ-উল-ফিতরের ছুটি কখন থেকে শুরু হবে তা নির্ধারণ করবে। এ ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী কারখানার সাথে সামঞ্জস্যতা রক্ষা করা বাঞ্ছনীয়।
৩। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন, বোনাসসহ সব পাওনা বিশ রমজানের মধ্যে কারখানা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পরিশোধ করতে হবে। শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতনের কমপক্ষে পনেরো দিনের বেতন মালিকপক্ষ তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী প্রদান করবে।
৪। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএসহ মালিক পক্ষের ক্যাশ ইনসেটিভ বাবদ সরকারের নিকট পাওনা পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হবে।
৫। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ, ছুটি সংক্রান্ত বিষয়সহ সার্বিক পরিস্থিতির উপর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় সজাগ দৃষ্টি রাখবে।
৬। সার্বিক পরিস্থিতি কেন্দ্রীয়ভাবে মনিটরিং এর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গঠিত কমিটির পাশাপাশি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (শ্রম) এর নেতৃত্বে একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করা হবে। উক্ত কমিটিতে শ্রমিক-মালিক পক্ষের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থার প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
৭। বিভিন্ন শিল্প কারখানার শ্রমঘন এলাকায় ২৯ মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খোলা রাখতে হবে।
নঈমুদ্দীন//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ল কপক ষ পর স থ ত কর ত ক পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় হামাসের মুখপাত্র কানুয়া নিহত
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের মুখপাত্র আবদেল-লতিফ আল–কানুয়া নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে হামাস পরিচালিত গণমাধ্যমের খবরে এমনটা বলা হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি ইসরায়েলের নতুন অভিযান শুরু হওয়ার পর নিহত হামাস নেতাদের তালিকায় আরেকটি নাম যুক্ত হলো।
হামাস পরিচালিত আল–আকসা টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, জাবালিয়ায় আল–কানুয়ার তাঁবু লক্ষ্য করে হামলা চালানো হলে তিনি নিহত হন। চিকিৎসাকেন্দ্র–সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, একই হামলায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। আর গাজা নগরীতে আলাদা হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ছয়জন এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজার খান ইউনিস এলাকায় হামলার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সদস্য ইসমাইল বারহুম ও আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা সালাহ আল-বারদাউইল নিহত হন।
বারদাউইল ও বারহুম দুজনই হামাসের ২০ সদস্যবিশিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের সদস্য ছিলেন। হামাস সূত্রের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সংগঠনটির সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষের ১১ জন সদস্য নিহত হয়েছেন।
গাজা উপত্যকায় দুই মাস ধরে চলা যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত সপ্তাহে ইসরায়েল নতুন করে সেখানে বোমা হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করে। জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য হামাসের ওপর চাপ জোরদার করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ১৮ মার্চ গাজায় ইসরায়েল নতুন করে বড় ধরনের সামরিক হামলা শুরু করার পর থেকে কমপক্ষে ৮৩০ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের অর্ধেকই শিশু ও নারী।
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েল ও হামাস একে অপরকে দায়ী করে থাকে। গত জানুয়ারি থেকে গাজায় এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের তথ্য অনুসারে, সেদিন হামাস ২৫০ জনকে জিম্মি করেছে। মাঝে কিছু বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হলেও এখনো ৫৯ জন আটক আছেন।
হামাসের অভিযোগ, যুদ্ধ বন্ধের জন্য স্থায়ী চুক্তিতে পৌঁছাতে আলোচনার জন্য মধ্যস্থতাকারীরা যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তা বিপন্ন করছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তিনি হামলার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার তিনি আবারও হুমকি দিয়েছেন যে হামাস বাকি জিম্মিদের মুক্তি না দিলে গাজা উপত্যকা দখল করা হবে।