একজন আইনজীবীর রিটে ২০১৯ সালে হাইকোর্ট সাত দিনের মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন ওয়াসার পানির নমুনায় মলমূত্র এবং অ্যামোনিয়ার উপস্থিতি কেন পাওয়া গেছে? যার উত্তর আজ প্রায় সাত বছরেও পাওয়া যায়নি। এই তথ্য জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরীন সুলতানা। তিনি বলেন, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত।

আজ রোববার দুপুরের দিকে ‘ওয়াসার দূষিত পানি, ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নগরবাসী’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন নাসরীন সুলতানা। এবি পার্টির বিজয়নগরে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, রাজধানীর কল্যাণপুর, তেজগাঁও, মালিবাগ, মগবাজার, মধুবাগ, বাসাবো, মানিকনগরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে ওয়াসার পানির সঙ্গে পোকা আসছে।

এবি পার্টির আজকের সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্যে নাসরীন সুলতানা বলেন, প্রতিবছরই গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষার শুরুতে ওয়াসার পানি হয়ে ওঠে নোংরা ও পোকামাকড়ের প্রজননক্ষেত্র। দূষণের পরিমাণ এতটাই বাড়ে যে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। কিন্তু এ নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি কোনো সমাধান চিন্তা করা হয়নি।

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ডামাডোল আর স্মার্ট বাংলাদেশের ভিড়ে সুপেয় পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন করা যায়নি, যা সামগ্রিক ব্যর্থতা—এমন মন্তব্য করে এবি পার্টির এই নেত্রী বলেন, হাজার হাজার নাগরিকের যেখানে ই-কোলাই জীবাণু ও পোকামাকড় দিয়ে পূর্ণ পানি খেয়ে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় তখন ওয়াসার এমডির পক্ষ থেকে সমাধান তো দূরের কথা, কোনো বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

নাসরীন সুলতানা বলেন, জুরাইন, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এ নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এই এলাকার বাসিন্দারা। জুরাইনের স্থানীয় মসজিদের গভীর নলকূপ এখন শেষ ভরসা। সেখান থেকে নামমাত্র মূল্যে পানি কিনে তাঁরা চলছেন বছরের পর বছর। ওয়াসার বিল দেওয়ার পরেও এ রকম নাগরিক ভোগান্তি জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সম্পূর্ণ বিপরীত।

সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে কেঁচো বা এ ধরনের পোকামাকড় পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ময়লা ও দুর্গন্ধ। গত সরকারের সময় ২২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প পুরোটাই পানি শোধনের পরিবর্তে আওয়ামী লুটেরাদের পকেটে ঢুকেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

কোনো সরকারই জনগণের মৌলিক অধিকার বিশুদ্ধ সুপেয় পানির নিশ্চয়তা তৈরি করতে পারেনি দাবি করে আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ওয়াসার পানিতে ভয়াবহ ই–কোলাই ভাইরাস পাওয়ার পরও ওয়াসা নির্বিকার। ওয়াসার কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে যেসব দুর্নীতিবাজ কেঁচো বা পোকামাকড় বসে আছে তাদের অপসারণ ছাড়া নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব আহমেদ বারকাজ নাসির, সহকারী প্রচার সম্পাদক রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদ, সহকারী দপ্তর সম্পাদক শরণ চৌধুরী, সহকারী অর্থ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, নারীবিষয়ক সহকারী সম্পাদক শাহিনুর আক্তার শীলা প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ফেটে যাওয়া পাইপলাইন মেরামত হয়নি, গ্যাস সরবরাহ বন্ধে ভোগান্তি

দুই দিনেও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় পঞ্চবটী-মুক্তারপুর উড়ালসড়কের পাইলিংয়ের সময় ফেটে যাওয়া পাইপলাইন মেরামত করতে পারেনি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এতে জেলার অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গ্যাস না থাকায় আবাসিক গ্রাহকের ভোগান্তির পাশাপাশি শিল্পকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

আরও পড়ুনউড়ালসড়কের পাইলিংয়ের সময় তিতাসের পাইপলাইনে ফাটল, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ২৩ নভেম্বর ২০২৫

এ বিষয়ে আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে কথা হয় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের ব্যবস্থাপক মশিউর রহমানের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, চারদিকে লোহার পাতের ভারী সুরক্ষাবেষ্টনী দিয়ে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি খুঁড়ে ২৫ ফুট গভীরে প্রধান পাইপলাইন পাওয়া গেছে। পাইপলাইনের আশপাশের মাটি সরিয়ে অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত মেরামতকাজ শেষ করা হবে। দ্রুততম সময়ে গ্যাস সরবরাহ চালু করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

এদিকে গ্যাস সরবরাহ না থাকায় আবাসিক গ্রাহকদের রান্নার কাজে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রেস্তোরাঁগুলোয় খাবারের জন্য ভিড় বাড়ছে। অনেকে মাটির চুলা, ইলেকট্রিক চুলা ও সিলিন্ডার চুলায় রান্না সারছেন। ডাইং কারখানাসহ গ্যাসনির্ভর কারখানাগুলো অচল হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন।

পঞ্চবটী বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত ডাইং কারখানা এমএস ডাইংয়ের উপমহাব্যবস্থাপক কবির হোসেন প্রথম আলোকে জানান, গ্যাস না থাকায় গত দুই দিনে তাঁদের ডাইংয়ে ২০০ টন, ফিনিশিংয়ে ৪০০ টন, নিটিংয়ে ২০০ টন এবং প্রিন্টে ৪০ টন মাল উৎপাদন কমে গেছে। টার্গেট অনুযায়ী শিডিউল সম্পন্ন করতে না পারলে বায়ারদের নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য রপ্তানিতে সমস্যা হবে। কবির হোসেন বলেন, গ্যাসনির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো এই সংকটে পড়েছে। কখন গ্যাস আসবে, তা এখনো কেউ জানাতে পারেনি।

গত শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়নের শাসনগাঁও এলাকায় পাইলিংয়ের সময় ২২ ফুট গভীরে থাকা তিতাস গ্যাসের পাইপলাইনে আঘাত লাগে। সঙ্গে সঙ্গে পাইপ ফেটে তীব্র শব্দে গ্যাস বের হতে থাকে।

দুর্ঘটনা এড়াতে তাৎক্ষণিকভাবে জেলার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস কর্তৃপক্ষ।
উড়ালসড়কের প্রকল্প পরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, ‘মাটি খুঁড়ে তিতাসের গ্যাসের পাইপলাইন পাওয়া গেছে। আমরা সবাই সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি ফেটে যাওয়া পাইলাইন দ্রুত মেরামতের কাজ সম্পন্ন করতে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিন বিদ্যুৎ থাকবে না কালীগঞ্জের ৩ এলাকায় 
  • ৩০০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দক্ষিণ থাইল্যান্ডে একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টি
  • এক মাস পরও শৃঙ্খলা ফেরেনি, পণ্য পেতে সময় লাগছে বেশি
  • ঢাকা নয়, দেশের আরেকটি শহরের বায়ুদূষণ আজ ভারতের নয়াদিল্লির কাছাকাছি
  • অবশেষে তিতাসের পাইপলাইন মেরামত, নারায়ণগঞ্জে তিন দিন পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক
  • নাগরিক দুর্ভোগ দূর করুন
  • ‘উদাসীনতায়’ বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সংকটে যবিপ্রবি
  • ৫০ হাজার টন চাল কিনবে সরকার, ভারত থেকে সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি
  • নারায়ণগঞ্জে ফেটে যাওয়া পাইপলাইন মেরামত হয়নি, গ্যাস সরবরাহ বন্ধে ভোগান্তি