অপরিণত শিশু ও তাদের মায়েদের জন্য বিশেষ যত্ন নিশ্চিত করতে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চালু হয়েছে ‘জাহানারা নবজাতক ওয়ার্ড’।

মায়ের নামে ৮ শয্যার এই বিশেষ ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠায় অর্থায়ন করেছেন চাঁদপুরের দুবাইপ্রবাসী জাকির হোসেন। এতে সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন জাকির হোসেনের মামা চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া এলাকার শেখ মনির হোসেন।

আজ সোমবার দুপুরে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ওয়ার্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান। এখানে অপরিণত বা অপুষ্ট শিশু এবং তাদের মায়েদের যত্নসহ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে, যত দিন না তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।

শেখ মনির হোসেন বলেন, ‘চাঁদপুরসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। রোগীর চাপ সব সময় শয্যার তুলনায় দ্বিগুণ থাকে। বিশেষ করে নবজাতক ও তাদের মায়েদের চিকিৎসার জন্য ওয়ার্ডটি প্রয়োজন ছিল। আমার বড় বোন জাহানারা হারুনের নামে তার ছেলে দুবাইপ্রবাসী জাকির হোসেন ওয়ার্ডটি স্থাপন করে।’

উপকারভোগীদের একজন মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী ইউনিয়নের গৃহবধূ নাসরিন আক্তার বলেন, ‘১ মে সিজারের মাধ্যমে আমার সন্তানের জন্ম হয়। বাচ্চাটি জন্মের পরই জন্ডিসে আক্রান্ত হয় এবং দুধ খেতে পারছিল না। এখন আমরা এখানে উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছি।’

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে সব সময় দ্বিগুণ, কখনো তিন গুণ রোগী থাকে। শিশু ওয়ার্ডে ৪৪ জনের স্থলে বর্তমানে ভর্তি ৭৮ জন। এনআইসিইউতে ৮ শয্যার মধ্যে বর্তমানে ৬ জন অপরিণত শিশু ভর্তি রয়েছে। তাদের জন্য ৩ জন চিকিৎসক ও ১৫ জন নার্স নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিচ্ছেন। তিনি জানান, অপরিণত ও অপুষ্ট শিশুদের জন্য পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশেষ ওয়ার্ডটি স্থাপন করা হয়েছে।

উদ্বোধনের আগে হাসপাতাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আবদুল আজিজ, শেখ মনির হোসেন, চিকিৎসক আছমা আক্তার এবং জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স মিতুন আহমেদ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলের ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণায় ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ

যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে ১০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে অ্যাপল। নতুন এ বিনিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কিছু উৎপাদন কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমেরিকান ম্যানুফ্যাকচারিং প্রোগ্রাম’(এএমপি)।

ভারত বর্তমানে অ্যাপলের পণ্যের চূড়ান্ত সংযোজনের (অ্যাসেম্বল) অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এটি যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোর একটি। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি তিনটি আইফোনের একটি ভারতে তৈরি হয়। যদি অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে এর প্রভাব ভারতেও পড়তে পারে। ভারত ও অন্যান্য দেশে অ্যাপলের উৎপাদন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু বক্তব্যের কারণে এ উদ্বেগ আরও বেড়ে গেছে।

ভারত থেকে আসা পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর অ্যাপলের বিনিয়োগের বিষয়টি সামনে এসেছে। ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার অর্থনৈতিক সম্পর্ককে কারণ দেখিয়ে ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপ করেছেন।

ভারতের ওপর প্রভাব

অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে তাদের উৎপাদন বাড়াতে চায় এবং সেখানে ভালো মানের সরবরাহকারীদের একটি শক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায়। বর্তমানে ভারতে অ্যাপলের কর্মযজ্ঞ মূলত শেষ ধাপে পণ্যের সংযোজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাদের বেশির ভাগ কাঁচামাল চীন ও তাইওয়ান থেকে আসে। তবে ভারত সরবরাহব্যবস্থাকে মজবুত করে সরবরাহকারীর সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। স্বল্প সময়ে অ্যাপলের এই পদক্ষেপ দেশটির পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে পারে।

২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের স্মার্টফোন রপ্তানি বেড়ে ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে। ২০২৪ সালে এই হার ছিল মাত্র ১১ শতাংশ। একই সময়ে স্মার্টফোনের বাজারে আধিপত্য ধরে রাখা চীনের রপ্তানি ৮২ থেকে কমে ৪৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

মূল্যমানের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের শীর্ষ রপ্তানি পণ্য হলো স্মার্টফোন। তবে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন যে ভারতে তৈরি অ্যাপল আইফোনের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের মুঠোফোন রপ্তানির বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে এই আইফোন।

এপ্রিলে একাধিক দেশের ওপর পাল্টা শুল্কের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন মুঠোফোন, কম্পিউটার ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক পণ্যকে শুল্কের বাইরে রাখে। তবে নতুন করে এসব পণ্যের ওপর শুল্ক বসানোর আশঙ্কা এখনো রয়ে গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ