চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে জাহানারা নবজাতক ওয়ার্ডের যাত্রা শুরু
Published: 5th, May 2025 GMT
অপরিণত শিশু ও তাদের মায়েদের জন্য বিশেষ যত্ন নিশ্চিত করতে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চালু হয়েছে ‘জাহানারা নবজাতক ওয়ার্ড’।
মায়ের নামে ৮ শয্যার এই বিশেষ ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠায় অর্থায়ন করেছেন চাঁদপুরের দুবাইপ্রবাসী জাকির হোসেন। এতে সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন জাকির হোসেনের মামা চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া এলাকার শেখ মনির হোসেন।
আজ সোমবার দুপুরে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ওয়ার্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান। এখানে অপরিণত বা অপুষ্ট শিশু এবং তাদের মায়েদের যত্নসহ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে, যত দিন না তাঁরা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।
শেখ মনির হোসেন বলেন, ‘চাঁদপুরসহ আশপাশের কয়েকটি জেলার মানুষ এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন। রোগীর চাপ সব সময় শয্যার তুলনায় দ্বিগুণ থাকে। বিশেষ করে নবজাতক ও তাদের মায়েদের চিকিৎসার জন্য ওয়ার্ডটি প্রয়োজন ছিল। আমার বড় বোন জাহানারা হারুনের নামে তার ছেলে দুবাইপ্রবাসী জাকির হোসেন ওয়ার্ডটি স্থাপন করে।’
উপকারভোগীদের একজন মতলব দক্ষিণ উপজেলার উপাদী ইউনিয়নের গৃহবধূ নাসরিন আক্তার বলেন, ‘১ মে সিজারের মাধ্যমে আমার সন্তানের জন্ম হয়। বাচ্চাটি জন্মের পরই জন্ডিসে আক্রান্ত হয় এবং দুধ খেতে পারছিল না। এখন আমরা এখানে উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছি।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে সব সময় দ্বিগুণ, কখনো তিন গুণ রোগী থাকে। শিশু ওয়ার্ডে ৪৪ জনের স্থলে বর্তমানে ভর্তি ৭৮ জন। এনআইসিইউতে ৮ শয্যার মধ্যে বর্তমানে ৬ জন অপরিণত শিশু ভর্তি রয়েছে। তাদের জন্য ৩ জন চিকিৎসক ও ১৫ জন নার্স নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিচ্ছেন। তিনি জানান, অপরিণত ও অপুষ্ট শিশুদের জন্য পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশেষ ওয়ার্ডটি স্থাপন করা হয়েছে।
উদ্বোধনের আগে হাসপাতাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আবদুল আজিজ, শেখ মনির হোসেন, চিকিৎসক আছমা আক্তার এবং জ্যেষ্ঠ স্টাফ নার্স মিতুন আহমেদ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়া হোমিওপ্যাথিক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে মারধর করে পুলিশে দিলেন এনসিপির নেতাকর্মীরা
বগুড়া হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এস এম মিল্লাত হোসেনকে মারধর করা হয়েছে। সোমবার রাত আটটার দিকে বগুড়া শহরের ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মার্কেটে নিজ চেম্বারে রোগী দেখছিলেন তিনি। এ সময় তাঁকে সেখান থেকে ধরে নিয়ে মারধর করা হয়। এরপর তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা। এস এম মিল্লাত স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বিকেল থেকে ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মার্কেটের নিজ চেম্বারে রোগী দেখছিলেন এস এম মিল্লাত হোসেন। রাত আটটার দিকে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ আল সানীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন নেতাকর্মী চেম্বারে গিয়ে তাঁকে ধরে বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর তাঁকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়সংলগ্ন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কার্যালয়ে সোপর্দ করা হয়। শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, কালিবাড়ী মোড় ও পৌরসভা লেন হয়ে ডিবি কার্যালয় পর্যন্ত নেওয়ার সময় এস এম মিল্লাতকে থেমে থেমে মারধর করা হয় এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। একটি ভিডিওতে এনসিপির শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় সংগঠক আবদুল্লাহ আল সানীকে বলতে শোনা যায়, ‘অ্যাক (এস এম মিল্লাত) ছয় মাস আগে আলটেমেটাম দিয়েছিলাম, আমাকে দুর্বল মনে করেছে। আমি স্পষ্ট কথা বলে দিতে চাই। বেশি কথার মানুষ আমি না, এক কথার মানুষ। একবার বলেছি মানে ওইটা ওয়ার্নিং হয়ে গেছে। সময়মতো ধরে ফেলে দিয়েছি। তুই আমার ভাইগরক ২০-২৫ বছর ধরে মারচু। দীলিপ রায়ের (স্বাধীনতা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি) কোনো সিন্ডিকেট রাখব না, আমরা আসতেছি। হাসনাতের ওপর হামলা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ আল সানী বলেন, ৫ আগস্টের পর এস এম মিল্লাত ফেসবুকে অপপ্রচার চালাচ্ছেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে নানাভাবে সহায়তা করছে। নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগকে অর্থ সহায়তা করছেন।
বগুড়া ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, রাত সোয়া আটটার দিকে এনসিপির নেতাকর্মীরা এম এস মিল্লাতকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে সোপর্দ করেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।