২০২৪ সালে মুনাফা বেড়েছে ডিবিএইচ ফিন্যান্সের। গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫ টাকা ০৭ পয়সা। আগের বছর যেখানে তাদের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৪ টাকা ৯৫ পয়সা, ২০২২ সালে যা ছিল ৫ টাকা ১১ পয়সা।

ডিবিএইচ ফিন্যান্সের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ২০২৪ সালের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। সেই সঙ্গে ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মোট ১৭ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে কোম্পানিটি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

আগামী ১৯ জুন ডিবিএইচের বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম অনুষ্ঠিত হবে। সে জন্য রেকর্ড তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ২৭ মে। ২০২৪ সালে ডিবিএইচের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ছিল ৪৭ টাকা ২৫ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং নগদ প্রবাহ ছিল মাইনাস ৩৮ পয়সা। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ছিল ৪৩ টাকা ৬৩ পয়সা। ২০২৩ সালে কোম্পানির নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো পার শেয়ার বা শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থের প্রবাহ ছিল ৪৩ টাকা ১৮ পয়সা।

শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ ঋণাত্মক হয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, গত বছর কোম্পানিটির ঋণ ও আগাম অর্থ গ্রহণের পরিমাণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাংক ও অন্যান্য গ্রাহকের আমানতের পরিমাণ কমেছে।

এদিকে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডিবিএইচ। সেখানে বলা হয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে। এই সময় ইপিএস হয়েছে ৭৮ পয়সা, যেখানে আগের বছর ইপিএস ছিল ৮৭ পয়সা।

২০২৩ সালের জন্য ডিবিএইচ ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ২০২২ সালে মোট ১৭ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল ডিবিএইচ। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ ছিল নগদ লভ্যাংশ; বাকি ২ শতাংশ ছিল বোনাস লভ্যাংশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড ব এইচ

এছাড়াও পড়ুন:

ছোট উদ্যোগ, বড় দিগন্ত

প্রকল্পের বরাদ্দ ৬২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। সময় পাঁচ বছর। এই স্বল্প অর্থ ও সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় কৃষিপণ্য আমকে রপ্তানিযোগ্য পণ্যে রূপান্তরে উদ্যোগ বাস্তবায়ন হচ্ছে। রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুলাইয়ে যাত্রা শুরু করে, মেয়াদ শেষ হবে ২০২৭ সালের জুনে। বাস্তবায়নে করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই)। যদিও এটি ডিএইর ৩২টি চলমান প্রকল্পের মধ্যে বরাদ্দের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন, তবুও কার্যক্রম ও সাফল্যের বিচারে এখন কৃষি উন্নয়নের রোল মডেল।

বাংলাদেশে আম চাষ বহু পুরোনো চর্চা। গ্রীষ্মকালের শুরুর ফলটি এতদিন মূলত দেশের বাজারেই সীমাবদ্ধ ছিল। এই প্রকল্পের হাত ধরে এখন সেই আমই পাড়ি দিচ্ছে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়াসহ বিশ্বের ৩৬টি দেশে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৩ হাজার ৯২ টন আম রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। আম রপ্তানির তালিকায় এ বছর নতুন করে যুক্ত হয়েছে চীন। দেশটিতে এরই মধ্যে তিন টন আম রপ্তানি হয়েছে। আর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আম রপ্তানির পরিমাণ ৭১০ টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ। চলতি মৌসুমে প্রায় ৪ হাজার টন আম রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
বিশ্ববাজারে ‘ক্ষীরসাপাতি’, ‘গোপালভোগ’, ‘ফজলি’, ‘হাঁড়িভাঙ্গা’ ও ‘আম্রপালি’র মতো দেশি জাতের আমের কদর বাড়ছে। এই প্রকল্পের প্রশিক্ষণে ইউরোপীয় মান অনুসারে চাষ, প্যাকিং ও রপ্তানির জন্য যা যা প্রয়োজন, তার সবই শিখছেন কৃষকরা।

প্রকল্পটির আওতায় দেশের ১৫টি জেলার ৪৬টি উপজেলায় স্থাপন করা হয়েছে ২৭৬০টির বেশি উত্তম কৃষি চর্চা (জিএপি) ভিত্তিক আম প্রদর্শনী প্লট। প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি আমচাষি, রপ্তানিকারক, পরিবহনকারী ও বাজারজাতকারীদের। শুধু প্রশিক্ষণ নয়, কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে হ্যান্ড স্প্রেয়ার, পাওয়ার স্প্রেয়ার, গার্ডেন টিলার, ম্যাংগো প্লাকারসহ নানা আধুনিক কৃষিযন্ত্র।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জেলার মাঠে এখন নিয়ম মেনে বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে রোপণ হচ্ছে আমগাছ। চাষিরা এখন জানেন, কখন আম তুললে তা রপ্তানিযোগ্য হয়, কতটুকু পেকে গেলে তা ইউরোপে রপ্তানির মানে পড়ে, কোন জাত রপ্তানির জন্য উপযুক্ত।
এই প্রকল্পের অনন্য একদিক হলো– নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ। গ্রেডিং, প্যাকিং, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ছে। ফলে শুধু উৎপাদন নয়, কর্মসংস্থানের নতুন ক্ষেত্রও তৈরি হচ্ছে।
প্রকল্পের অধীনে তৈরি হচ্ছে আম প্রক্রিয়াজাতকরণের ছোট প্লান্ট, ওয়াশিং-গ্রেডিং-কুলিং শেড এবং অনলাইনভিত্তিক বাজার সংযোগ প্ল্যাটফর্ম। রপ্তানির পাশাপাশি দেশের সুপারশপ ও পাঁচতারকা হোটেলেও মানসম্পন্ন এই আম সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই উদ্যোগ আরও বড় পরিসরে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। নওগাঁর আমচাষি আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমরা আগে জানতাম না রপ্তানির জন্য আলাদা মানদণ্ড আছে। এখন জানি এবং সে অনুযায়ী চাষ করি।’

রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা মাঠে থেকে কৃষকদের পাশে আছি। তাদের সক্ষমতা বাড়াতে আমরা প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করছি।’ আম রপ্তানিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে উল্লেখ করে প্রকল্প পরিচালক বলেন, আম রপ্তানির ক্ষেত্রে দু-তিনটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিমান ভাড়া যদি স্থিতিশীল থাকে ও বিমানের যদি সংকট না হয়, তাহলে আরও বড় পরিসরে আম রপ্তানি করা যাবে। এ বিষয়টি নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, সঠিক পরিকল্পনা, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং মাঠপর্যায়ের নিবিড় কার্যক্রম থাকলে কম বাজেটেও বিশাল পরিবর্তন আনা সম্ভব। আম রপ্তানি বাড়ার পাশাপাশি বদলে যাচ্ছে কৃষকের দৃষ্টিভঙ্গি, চাষাবাদের ধারা এবং বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান। এ বিষয়ের সরকারের উদ্যোগ আরও বড় করা দরকার। যেন ‘ফলের রাজা’ আম কেবল গাছ হিসেবেই নয়, বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। তিনি বলেন, আরও কৃষক বা উদ্যোক্তাকে এই কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। বিশেষ করে যেসব এলাকায় আগে কখনও রপ্তানিমুখী চাষ হয়নি, সেখানেও চাষ বাড়ানো যেতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব
  • ‘ক্রিকেট ট্যুরিজমকে ঘিরে পর্যটনকে উন্নত করে অর্থনীতিতে অবদানই মূল লক্ষ্য’
  • ছোট উদ্যোগ, বড় দিগন্ত
  • স্টার্টআপ বিনিয়োগ চাঙ্গা করতে হলে
  • শিশুদের ওপর মারাত্মক সহিংসতার জন্য আবারও জাতিসংঘের কালোতালিকায় ইসরায়েল
  • বিশ্বে বাংলাদেশি শরণার্থী পাঁচ বছর ধরে বাড়ছে
  • সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা অর্থ এক বছরে ৩৩ গুণ বেড়েছে
  • বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩%
  • ফাঁস হওয়া ফোনালাপে সংকটে থাই সরকার, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমাপ্রার্থনা
  • সরাসরি: যুদ্ধ বাধলে ইরান-ইসরায়েলের অর্থনীতির কী হাল হবে?