লিচুর রাজ্য হিসেবে খ্যাত দিনাজপুরে গাছে গাছে ঝুলছে নানা জাতের লিচু। এরই মধ্যে হালকা সবুজ থেকে লাল-হলুদ রং ধারণ করতে শুরু করেছে। চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে বাজারে পাওয়া যাবে রসালো এই ফল। কৃষি বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দিনাজপুরে এবার ৭০০ কোটি টাকার লিচু বিক্রি হবে।
চাষের উপযোগী বেলে-দোআঁশ মাটি থাকায় এবং লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে লিচুর আবাদ বেশ জনপ্রিয়। ঠিক কবে থেকে এ অঞ্চলে লিচুর আবাদ শুরু হয়েছে, তা বলতে না পারলেও বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ শুরু হয়েছে বিগত কয়েক দশক আগে, জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়েছে লিচুর চাষ। মাদ্রাজি, বেদানা, হাড়িয়া বেদানা, বোম্বাই, চায়না-থ্রি, চায়না–টু, কাঁঠালি এবং মোজাফফরি জাতের লিচুর বাগান করছেন চাষিরা। সম্প্রতি দিনাজপুরের লিচু যুক্ত হয়েছে জিআই পণ্যের তালিকায়।
■ মে মাসের মধ্যভাগ থেকে জুনের মধ্যভাগ পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যাবে মাদ্রাজি জাতের লিচু। ■ জুনে প্রথম সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যাবে বেদানা লিচু।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, জেলায় ৫ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান আছে ৯ হাজার ৯৮টি। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৬২৮ মেট্রিক টন। জেলায় সবচেয়ে বেশি ৩ হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে বাগান আছে বোম্বাই জাতের লিচুর।
কোন লিচু কখন পাওয়া যাবেমে মাসের মধ্যভাগ থেকে জুনের মধ্যভাগ পর্যন্ত বাজারে পাওয়া যাবে মাদ্রাজি জাতের লিচু। মাদ্রাজি লিচুই প্রথম বাজারে আসে। এই লিচুর বীজ বা আঁটি আকারে বড় হয়। দেখতে লম্বাকৃতির, নিচের দিক সরু। খোসা খানিকটা পুরু ও শক্ত। রসালো শ্বাস বিদ্যমান। সাধারণত এক হাজার লিচুর দাম থাকে দেড় হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা।
দিনাজপুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি লিচু হচ্ছে বেদানা। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারে দেখা মিলবে বেদানা লিচুর। দেখতে গোলাকার। লাল–খয়েরি রঙের এই লিচুর খোসা পাতলা। এর বীজ বা আঁটি আকারে ছোট ও শাঁস বড় হয়। অনেক বেশি রসালো ও মিষ্টি হয়। প্রতি হাজার বেদানা জাতের লিচুর দাম থাকে সাড়ে ৫ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা।
জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে বাজারে পাওয়া যাবে বোম্বাই জাতের লিচু। দেখতে লম্বাকৃতির ও উজ্জ্বল গোলাপি রঙের। শাস রসালো ও সুঘ্রাণযুক্ত। বীজ বা আঁটি ছোট হয়, শাঁস বেশি থাকে।
বোম্বাই লিচুর সঙ্গে একই সময়ে বাজারে পাওয়া যাবে চায়না–থ্রি জাতের লিচু। আকারে বড়। দেখতে অনেকটা আপেল আকৃতির। বীজ বা আঁটি ছোট হয়। শাস অনেক বেশি থাকে এবং রসালো হয়। অভিজাত শ্রেণির লিচু হিসেবেও পরিচিতি আছে চায়না–থ্রির।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইন জুয়ার এজেন্ট যবিপ্রবির ছাত্র গ্রেপ্তার
অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থী আশিকুল হক অন্তুকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি (গোয়েন্দা) পুলিশ। পুলিশ জানায়, অন্তু অনলাইন জুয়ার এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার পর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আদালতে সোপর্দ করা হয়। অন্তু ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আমতলী গ্রামের এনামুল হকের ছেলে।
আরো পড়ুন:
শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় কর্মবিরতির নেপথ্যে রাকসু বানচালের চেষ্টার অভিযোগ
২৫ তারিখেই রাকসু নির্বাচন চায় ছাত্রশিবির
ডিবি পুলিশের ওসি মঞ্জুরুল হক ভুঁইয়া জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে ডিবি পুলিশের একটি দল সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি বাজারে অভিযান চালায়। এ সময় অন্তুসহ ৩-৪ জন ডিভাইসের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ায় লিপ্ত ছিলেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অন্যরা পালিয়ে গেলেও অন্তুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৫ আল্ট্রা মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। মোবাইলের বিভিন্ন লেনদেন ও ট্রানজেকশন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত।
ওসি জানান, অন্তু অবৈধ এজেন্ট হিসেবে জুয়া পরিচালনা করতেন এবং ‘আরমান খান’ নামে ফেসবুক আইডি থেকে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিতেন।
ডিবি পুলিশের এএসআই আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলায় অন্তু এবং অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) অন্তুকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শিবু মণ্ডল বলেন, ‘‘অন্তুর সঙ্গে থাকা অন্যরাও জুয়ার সঙ্গে জড়িত। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। তবে তাদের নাম ও ঠিকানা শনাক্ত করার কাজ চলছে।’’
যবিপ্রবির একটি সূত্র জানায়, আশিকুল হক অন্তু কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী ছিলেন। তাকে মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শহিদ মশিউর রহমান হল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ঢাকা/রিটন/বকুল