নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান জানতে চান ৪৯ বিশিষ্ট নাগরিক
Published: 6th, May 2025 GMT
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চেয়েছেন দেশের ৪৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। একই সঙ্গে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবির পাশাপাশি নারীবিদ্বেষ তৈরিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ‘অপপ্রচার ও অপতৎপরতার’ প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা এ অবস্থান জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সুব্রত চৌধুরী, সালমা আলী ও সারা হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, লেখক রেহনুমা আহমেদ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ, অধ্যাপক নায়লা জামান খান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, লেখক পাভেল পার্থ প্রমুখ।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে কয়েক দিন ধরে হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীসহ কিছু ধর্মীয় নামধারী সংগঠনের প্রতিনিধি ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে আসছে। তাঁদের কেউ কেউ এই কমিশন বাতিল না করা হলে সরকার উৎখাত, দেশ অচল করে দেওয়ার মতো হুমকি দিয়েছেন। এসব দাবি শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, একই সঙ্গে এটি জনমনে নারীবিদ্বেষ উসকে দিচ্ছে। এসব বক্তব্যকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, ‘আমরা অনতিবিলম্বে বিষয়টি নিয়ে সরকারের সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চাই। সাম্প্রদায়িক ও নারীবিদ্বেষী গোষ্ঠীর এমন বক্তব্য শুধু নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন কিংবা সরকারের জন্য নয়, দেশের জনগণ ও তাদের অধিকারের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
আরও পড়ুনহেফাজতে ইসলামকে আইনি নোটিশ দিলেন এনসিপির তিন নেত্রীসহ ৬ নারী০৫ মে ২০২৫বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পুরো কমিশনকে বাতিল করার দাবির পেছনে গভীর দুরভিসন্ধি এবং রাজনৈতিক ও কায়েমী স্বার্থ জড়িত। প্রকাশ্যে নারীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার ও কমিশনের সদস্যদের চরিত্র হনন করায় ওই গোষ্ঠী এবং অন্তর্বর্তী সরকার উভয়কেই জবাবদিহি করতে হবে।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন, যাঁরা নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল চাইছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্য নারীকে অবদমিত রেখে, বৈষম্যকে জিইয়ে রেখে নিজেদের গোষ্ঠীগত ও কায়েমী স্বার্থ হাসিল করা। দেশ অচল করার হুমকি দিয়ে তাঁরা কার এজেন্ডা বাস্তবায়নে নেমেছেন, সেটি তদন্তের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। একই সঙ্গে সরকারকে তদন্তের মাধ্যমে এসব উসকানিদাতা ও তাঁদের ইন্ধনদাতাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুনমহাসমাবেশে দুই বক্তার ‘আপত্তিকর’ শব্দচয়নের জন্য দুঃখ প্রকাশ হেফাজতের৬ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ ন জ ন সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
কুবিতে শহীদ আব্দুল কাইয়ূমের শাহাদাত বার্ষিকী পালন
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ শিক্ষার্থী আব্দুল কাইয়ূমের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলে এ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ ও ইংরেজী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হারুনসহ হলের হাউজ টিউটর, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যা: তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি
জবি প্রশাসনের ‘দায়সারা’ জবাবের প্রতিবাদ শিক্ষার্থীদের
এ সময় শিক্ষার্থীরা শহীদ আব্দুল কাইয়ূমের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
দোয়া মাহফিলে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, “কাইয়ূম ভাই আমার পাশের রুমেই থাকতেন। তার সঙ্গে যখন দেখা হত, তখন তিনি সবাইকে আপনি করে সম্বোধন করতেন। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন এবং সবাইকে নামাজ পড়ার জন্য আহ্বান করতেন। তিনি বেশিরভাগ সময় নিজের বাসায় থাকতেন এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন। আমরা চাই পরবর্তীতে যেই প্রশাসন আসুক, এই দিনটি যেন পালন করা হয়।”
কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ মো. হারুন বলেন, “যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় তার (আব্দুল কাইয়ূম) ছবি দেখতে পাই, তখন মনে হয়েছিল ছেলেটি অসম্ভব ভালো ছেলে। পরবর্তীতে বিভিন্ন আলোচনা অনুষ্ঠানে মাধ্যমে তার সম্পর্কে জানতে পারি, আমার ধারণা ঠিক ছিল। আজকে যখন তার বাবার সঙ্গে দেখা হয়, তখন একজন পিতা হিসেবে তাকে স্বান্তনা দিতে পারিনি। জানি না তিনি কীভাবে সহ্য করছে একজন সন্তান হারানোর কষ্ট।”
তিনি বলেন, “আমরাও কারো না কারো সন্তান। তাই কোনো কিছু করার আগে আমাদের চিন্তা করা উচিত আমাদের পিতা-মাতার কথা। আমরা এখানে একটি পরিবার হিসেবে আছি। তাই সবাই সবার বিপদে এগিয়ে যাব ও সহোযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আব্দুল কাইয়ূম কুবির কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন।
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী