শেফিল্ড ইপিএলে গেলে হামজা কি থাকবেন লেস্টারে?
Published: 10th, May 2025 GMT
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন লেস্টার সিটির মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী বর্তমানে ধারে খেলছেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে। এবার তার ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে, কারণ প্রিমিয়ার লিগে ফেরার এক ধাপ দূরে আছে শেফিল্ড।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজার দল বৃহস্পতিবার রাতে চ্যাম্পিয়নশিপ প্লে-অফ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রিস্টল সিটিকে। এই জয়ে ফাইনালে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেছে ক্রিস ওয়াইল্ডারের শিষ্যরা। প্রিমিয়ার লিগে ওঠার লড়াইয়ে ২৪ মে ওয়েম্বলিতে মুখোমুখি হবে সান্দারল্যান্ড বা কভেন্ট্রি সিটির।
গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ থেকে নামা শেফিল্ড এবার চ্যাম্পিয়নশিপে তৃতীয় স্থানে থেকে লিগ শেষ করে প্লে-অফে জায়গা করে নেয়। সরাসরি প্রমোশন পেয়েছে লিডস ইউনাইটেড ও বার্নলি। শীর্ষ স্তরে ফেরার লড়াইয়ে এবার প্লে-অফই শেফিল্ডের শেষ আশ্রয়।
শেফিল্ড যদি শেষ পর্যন্ত প্রিমিয়ার লিগে উঠতে পারে, তাহলে হামজার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। লেস্টারে এখনো তার চুক্তি থাকলেও, নিয়মিত খেলার সুযোগ না পাওয়ায় ধারে পাঠানো হয় তাকে। লেস্টারের হয়ে ১৩১ ম্যাচ খেলেছেন হামজা, যার মধ্যে ৯১টি ম্যাচ ছিল ইপিএলে। ছয় মৌসুমে ইপিএলে তার মোট খেলার সময় ২৫৯৩ মিনিট।
শেফিল্ড যদি প্রিমিয়ার লিগে ফিরে যায়, সেক্ষেত্রে তারা হামজাকে স্থায়ীভাবে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে পরের মৌসুমে ইংলিশ লিগের সর্বোচ্চ মঞ্চে আরও বেশি সময় মাঠে দেখা যেতে পারে বাংলাদেশি ফুটবলপ্রেমীদের প্রিয় তারকাকে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিলের মাঝে যাত্রীশূন্য রেলস্টেশন
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে ৮টি আধুনিক ও নান্দনিক রেলস্টেশন তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি হলো– সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ও ঈদগাঁওয়ের ইসলামাবাদ। এসব স্টেশনের আংশিক সুফলও পাচ্ছেন না যাত্রীরা। চারটি স্টেশনই তৈরি করা হয়েছে কিছুটা জনমানবহীন এলাকায়, বিলের মাঝে, যেখানে আসা-যাওয়ার ভালো কোনো রাস্তা নেই। যোগাযোগ ও নিরাপত্তাজনিত শঙ্কার কারণে যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াতে আগ্রহী নন। দুর্গম ও নিরিবিলি এলাকায় হওয়ায় অপরাধীদের আস্তানা হয়ে উঠছে এসব স্টেশন, ঘটছে ছোটখাটো অপরাধের ঘটনাও।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনে ট্রেন চালুর দেড় বছর পার হলেও এসব স্টেশন এখনও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। স্টেশনে নেই যাত্রীসুবিধা। বিশ্রামাগারে নেই আসবাব, শৌচাগার থাকে তালা মারা। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, স্টেশনে যাওয়া-আসার জন্য সড়ক তৈরি হয়নি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্টেশন তৈরি করে দায় সেরেছে। তারা বলছে সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের। সড়ক নির্মাণেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ কেউ নিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইনের সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবুল কালাম আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিটি রেলস্টেশনে সরকারের অধিগ্রহণকৃত জায়গায় সংযোগ সড়কের গড়ে ১০০ ফুট পাকা করে দেওয়া হয়েছে। এলজিইডি বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যাত্রীদের সুবিধার জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে পারে। প্রকল্পের বাইরে কাজ করার সুযোগ আমাদের ছিল না।’
সাতকানিয়া রেলস্টেশনে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য এলজিইডিকে চিঠি দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এলজিইডি সড়ক নির্মাণে উদ্যোগ নেয়নি। এখন যাত্রীরা ধানক্ষেতের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া আলপথে হেঁটে রেলস্টেশনে যান। আবার ফেরার সময় অর্ধ কিলোমিটার হেঁটে সাতকানিয়া-বাঁশখালী সড়কে গিয়ে গাড়িতে ওঠেন।
লোহাগাড়ায় হাজি রাস্তার মাথায়, যেখানে রেলস্টেশন করা হয়েছে সদর থেকে সেখানে যেতে ট্রেন ভাড়ার তিনগুণ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া দিতে হয়। তার ওপর অর্ধনির্মিত কালভার্টের কারণে সড়ক বন্ধ। ওই অংশে হেঁটে স্টেশনে পৌঁছাতে হয়।
বড় হাতিয়া এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল করিম বলেন, ‘সাতকানিয়া-লোহাগাড়া হলো ব্যবসায়ীদের এলাকা। রেলস্টেশনে সহজে যাতায়াত করা গেলে আমরা স্বল্প করেছে ট্রেনেই মালপত্র আনা-নেওয়া করতে পারতাম। তাতে ব্যবসায় লাভ বাড়ত। সেই সুযোগ আমরা পাচ্ছি না। অনেকটা দুর্গম এলাকায় কেন লোহাগাড়া স্টেশন তৈরি করা হয়েছে তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়।’
সবচেয়ে নাজুক অবস্থা চকরিয়ার হারবাং স্টেশনের। এটি একটি বড় বিলের সঙ্গে লাগোয়া দুর্গম জায়গায় তৈরি করা হয়েছে, যেখানে আশপাশে ভালো কোনো সড়ক নেই। যে সড়কটি রেলস্টেশনের পাশা দিয়ে চলে গেছে সেটির প্রস্থ মাত্র ৫/৬ ফুট। কাঁচা এই সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশাই কেবল চলতে পারে। তাও একটা আরেকটাকে পাশ কাটাতে গেলে ছোট গাড়ির জট লেগে যায়।
সাতকানিয়া আদর্শ মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রুহুল কাদের বলেন, ‘চকরিয়ায় তিনটি স্টেশন করা হয়েছে, তবুও মানুষ ট্রেনের সুবিধা পাচ্ছেন না–এটা দুঃখজনক। যদি হারবাং স্টেশনটি আরও এক কিলোমিটার দক্ষিণে বরইতলী একতাবাজার–পেকুয়া সড়কের পাশে করা হতো তাহলে শুধু চকরিয়া নয়, পেকুয়া, বাঁশখালী ও কুতুবদিয়ার মানুষও উপকৃত হতেন।’
ঈদগাঁওয়ের ইসলামাবাদ স্টেশনের সঙ্গে সদরের দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। এত দূরের স্টেশন থেকে উপজেলার বিভিন্ন গন্তব্যে আসা–যাওয়া করা দুষ্কর। সন্ধ্যা ও রাতে রয়েছে নিরাপত্তার শঙ্কা।
রেলওয়ে চট্টগ্রাম পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখনো রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প আমাদের বুঝিয়ে দেয়নি। তাই এ বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারছি না।’