গাজা উপত্যকায় হামাসের কাছ থেকে জিম্মিদের মুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, নাকি সেখানে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর তথাকথিত ‘চিরস্থায়ী যুদ্ধ’ চলবে, এ প্রশ্নে দিন দিন বিভক্ত হয়ে পড়ছেন ইসরায়েলের জনগণ। তবে দেশটির সরকার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে গাজায় পূর্ণ বিজয় চাইছে। সে ক্ষেত্রে সরকার দ্বিতীয় বিকল্পটিই বেছে নিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়ছে। প্রথমে এই বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ঠেকাতে না পারায় চাপের মুখে পড়েন নেতানিয়াহু। এরপর দীর্ঘ ১৯ মাস ধরে চলা যুদ্ধের অবসান না ঘটাতে পারা বা যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা কেমন হবে, তার রূপরেখা তুলে ধরতে না পারার চাপে আছেন তিনি।

গত মার্চে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু একতরফাভাবে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বাতিল করেন। চুক্তি অব্যাহত থাকলে গাজা থেকে জিম্মিদের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। যুদ্ধবিরতি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তটি যেন ইসরায়েলি সমাজের অভ্যন্তরীণ বিভক্তি আরও প্রকট করে তুলেছে। কারণ, সরকারবিরোধীরা বুঝে গেছেন, গাজা থেকে জিম্মিদের জীবিত ফেরার সম্ভাবনা দিন দিন ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একাধিক ইউনিট থেকে সরকারের উদ্দেশে একের পর এক খোলাচিঠি লেখা হয়েছে। এগুলোতে সরকারের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

ইসরায়েলের সাধারণ জনগণের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা গেছে। মে মাসের শুরুর দিকে হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক তেল আবিবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। গাজায় সামরিক অভিযান জোরদার করতে ৬০ হাজার অতিরিক্ত রিজার্ভ সেনা (আপৎকালের জন্য মজুত সেনা) মোতায়েনে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

সমালোচকদের মতে, যুদ্ধ চলমান থাকায় নেতানিয়াহু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা বিতর্ক ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে রাখার সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থী দলগুলোর সমর্থনও ধরে রাখতে পারছেন। এই দলগুলো স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে, ‘পূর্ণাঙ্গ বিজয়’ অর্জিত না হওয়ার আগপর্যন্ত তারা যুদ্ধের সমাপ্তি মেনে নেবে না। ‘পূর্ণাঙ্গ বিজয়’ অর্জিত না হলে তারা জোট থেকে সরে যাবে ও নেতানিয়াহু সরকারের পতন ঘটাবে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ইতিমধ্যে ৫২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের বড় অংশই নারী ও শিশু।

গত এপ্রিলের মাঝামাঝি ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর বর্তমান ও সাবেক সদস্যরা একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করেন। চিঠিতে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে কোনো জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুর জন্য নয়; বরং নেতানিয়াহুর ‘ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থ’ রক্ষার জন্যই এ যুদ্ধ চালানো হচ্ছে।

এই চিঠির পর ইসরায়েলের নৌবাহিনী, সামরিক বাহিনীর অন্যান্য অভিজাত ইউনিট, এমনকি ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদস্যরাও নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে শুরু করেন।

নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

মোদিকে কাপুরুষ বললেন ইমরান খান

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘কাপুরুষতা’র প্রতি প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য পাকিস্তানের জনগণ এবং সশস্ত্র বাহিনীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। বুধবার এক্স-এ এক পোস্টে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

কারাগারে আটক ইমরান খান সরাসরি তার এক্স অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন না। কারাগারে আইনজীবীর মাধ্যমে পাঠানো মন্তব্য তার দলের সংশ্লিষ্ট নেতা এক্স অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন।

ইমরান খান বলেছেন, “আমি সবসময় বলেছি, এই দেশ আমার এবং সেনাবাহিনীও তাই। আমাদের সেনারা যেভাবে আকাশ ও স্থল উভয় ফ্রন্টেই মোদিকে পরাজিত করেছে, তেমনি পাকিস্তানের জনগণ, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিশ্বব্যাপী মোদি এবং আরএসএসের আখ্যানকে উন্মোচিত ও ভেঙে দিয়েছে।”

ইমরান বলেছেন, “পাকিস্তানের শিশু, মহিলা, বয়স্ক এবং বেসামরিক অবকাঠামোর মতো নিরীহ বেসামরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে মোদি কাপুরুষতা প্রদর্শন করেছেন।”

তিনি আরো বলেছেন, “আমরা এই কাপুরুষোচিত হামলায় শহীদ বেসামরিক ও সামরিক কর্মীদেরপরিবারের সাথে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি।”

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শি-পুতিন দৃঢ় ঐক্যে চ্যালেঞ্জের মুখে পশ্চিমা বিশ্ব
  • মোদিকে কাপুরুষ বললেন ইমরান খান
  • আইসিসির এপ্রিলের সেরা খেলোয়াড় মিরাজ
  • হাইকোর্টে জামিন পেলেন ডা. জুবাইদা রহমান
  • বাংলাদেশে মানব উন্নয়নের বিকল্প নেই কেন
  • দেশে দুর্যোগে বাস্তুচ্যুত মানুষ ২৪ লাখ
  • চীন কেন চায় না ইউক্রেন যুদ্ধ থামুক
  • জুবাইদা রহমানের দুর্নীতির মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি  
  • চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রযোজনায় গুগলের নতুন উদ্যোগ