আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ছাড়া কোনো সংগঠনের অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে। প্রশাসন, শ্রেণিকক্ষ, ছাত্রাবাস—সর্বত্র তাদের দৌরাত্ম্য ছিল। ছাত্রলীগের উৎপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী এক দফার আন্দোলনে রূপ নেয় এবং গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর সবার প্রত্যাশা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্বস্তি ও শান্তি ফিরে আসবে। ক্লাস-পরীক্ষা ঠিকমতো চলবে। শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকবেন। এই লক্ষ্যে সরকার সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য, সহ–উপাচার্য নিয়োগ দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে গত ৯ মাসে একের পর এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা চলছে। কোথাও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন, আবার কোথাও শিক্ষকেরা আছেন কর্মবিরতিতে।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে ক্যাম্পাসের কাছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খুন হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। শাহরিয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক। গত ৯ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এটাই প্রথম খুন নয়। গত জানুয়ারি মাসে ফজলুল হক হলে তোফাজ্জল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেন শিক্ষার্থীরা।

সেই হত্যার পেছনে কোনো রাজনীতি ছিল না। কিন্তু সাম্য হত্যার পেছনে ‘রাজনীতির’ প্রশ্ন উঠেছে। এই হত্যার দায়ে যেই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা ভবঘুরে। ছাত্রদলের নেতাদের অভিযোগ, কয়েক দিন আগে জাতীয় সংগীত গাওয়ায় বাধাদানকারীদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বার্তা দিয়েছিলেন সৌম্য। তার হত্যার পেছনে সেই বার্তাও কাজ করেছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের  আমলে ফেসবুকে  বার্তাকে কেন্দ্র করে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের ফটকে নানা স্লোগান লিখে দিয়েছেন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। এ সময় ‘দফা এক দাবি এক, ভিসির পদত্যাগ’, ‘আমার ভাইয়ের লাশ পড়ে, প্রশাসন কী করে’, ‘নয় মাসে দুই খুন, ভিসি-প্রক্টরের অনেক গুণ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্রদলের কর্মীদের সঙ্গে উপাচার্য উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করছেন। একপর্যায়ে তিনি মেজাজ হারিয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন,   “তোমরা যদি মনে করো, তুমি আর আমি আলাদা পক্ষ, আমি এখানে দাঁড়ায়ে আছি; আমাকে মার বেটা, মার।” বুধবার সকালে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারও পদত্যাগ দাবি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘অতি দ্রুত আমরা এই ভিসি ও প্রক্টরকে সরানোর অনুরোধ করছি সরকারের কাছে। না হলে আমরা এই ইন্টেরিম সরকারকেই সরাতে বাধ্য হব।’

লংমার্চ টু যমুনা

একযাত্রায় দুই ফল। কয়েকদিন আগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবিতে এনসিপিসহ কয়েকটি সংগঠন যমুনার সামনে সমাবেশ করতে গেলে তাঁদের সাদরেই বরণ করা হয় এবং তাঁরা সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায় করেই ঘরে ফেরেন।
কিন্তু বুধবার আবাসনসংকটসহ তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার পর যমুনার অভিমুখে জবি শিক্ষার্থীদের লংমার্চ মৎস্য ভবন এলাকায় গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। এর আগে বেলা ১১টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়ো হতে শুরু করেন এবং পরে যমুনার উদ্দেশে পদযাত্রা শুরু করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত প্ল্যাটফর্ম ‘জবি ঐক্য’ তিন দফা দাবিতে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। লংমার্চে অংশ নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

জনগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি সরকারের। এ কারণে পুলিশ তাদের মাঝ পথে আটকে দিয়েছেন। আর এনসিপিসহ কয়েকটি সংগঠনের দাবিকে গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে বলে উপদেষ্টা পরিষদ জরুরি বৈঠক ডেকে তা মেনে নিয়েছে।

রেললাইন অবরোধ

ছয় দফা দাবিতে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৩ মে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়সংলগ্ন রেললাইনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির দুটি না মানায় ১৩ মে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। ‘কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল জব্বার মোড়সংলগ্ন রেললাইন অবরোধ করেন। প্রায় ২ ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, কৃষিবিদদের অধিকার রক্ষা ও পেশাগত বৈষম্য নিরসনে ছয় দফা দাবির যৌক্তিকতা কৃষিসচিবের কাছে তুলে ধরা হয়। আলোচনা চলাকালে কৃষিসচিব কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের প্রথম ও চতুর্থ দাবি নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কথা বলতে থাকেন। দাবি নিয়ে পরিষ্কার সিদ্ধান্ত না দিয়ে তিনি আন্দোলনকারীদের ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছেন। বাকি চারটি দাবির সঙ্গে সচিব একমত পোষণ করলেও প্রথম ও চতুর্থ দাবি মানতে তিনি রাজি হননি। এ অবস্থায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

কুয়েটে অচলাবস্থা চলছেই

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) অচলাবস্থা কাটেনি। শিক্ষক লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতিতে অনড় শিক্ষকেরা। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) কর্তৃপক্ষ ৩৭ শিক্ষার্থীকে শোকজ করার প্রতিবাদে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার সপ্তম দিনেও ক্লাসে যাননি কুয়েটের শিক্ষকেরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ হলো, কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে যে ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে, তা ভিত্তিহীন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়েছিল, সেই হামলাকারীদের এখনো কোনো শাস্তি হয়নি।

কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড.

মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকেরা ক্লাস-পরীক্ষা নেবেন না। প্রসঙ্গত, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের পর থেকে বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু দিন ধরে অস্থিরতা চলছিল। উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের বিরোধে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও বিভক্ত হয়ে পড়েন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য সহকর্মীদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা  না পাওয়ায় তাঁকে অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। বরিশাল বিশ্ববিদ্যরলয়ের দুর্ভাগ্য হলো বেশির ভাগ উপাচার্যকে আন্দোলনের মুখে যেতে হয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশন করার পর উপাচার্য শুচিতা শরমিন, সহ-উপাচার্য গোলাম রব্বানি ও কোষাধ্যক্ষ মামুনুর রশিদকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শুচিতা শরমিনকে গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তিনি ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী উপাচার্য। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক গোলাম রব্বানিকে গত বছরের ৩১ অক্টোবর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এই দুজনের দ্বন্দ্বের কারণেই সেখানে অচলাবস্থা চলছিল।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিলেও কুয়েট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা কেন ঝুলিয়ে রাখছে, সেটাই প্রশ্ন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় খুনের ঘটনা ঘটল গত ৯ মাসে। প্রথম খুনের আসামিদের আইনের আওতায় এনেছে সরকার। দ্বিতীয় খুনের আসামিদের খুঁজে বের করার দায়িত্বও সরকারের।

সোহরাব হাসান কবি ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপ চ র য র ছ ত রদল র সরক র র হত য র প রথম আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ