সোনাদিয়ায় তিনটি চিংড়িঘেরের স্থাপনা উচ্ছেদ, সরঞ্জামসহ মোটরসাইকেল জব্দ
Published: 17th, May 2025 GMT
কক্সবাজারের মহেশখালীর পরিবেশ সংকটাপন্ন সোনাদিয়া দ্বীপে আরও তিনটি চিংড়িঘেরের স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে চার ঘণ্টাব্যাপী চলা অভিযানে প্যারাবন কেটে নির্মিত ঘেরগুলোর অস্থায়ী স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়।
অভিযানে গাছ কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম, একটি মোটরসাইকেল ও একটি ইঞ্জিনচালিত নৌযান জব্দ করা হয়েছে। তবে এবারও প্যারাবনের দখলদার ও অবৈধ চিংড়িঘেরের মালিকদের কাউকে আটক করা হয়নি। কোনো চিংড়ি ঘেরের বাঁধও কেটে দেওয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
এর আগে শুক্রবারও সেখানে অভিযান চালিয়ে তিনটি চিংড়িঘেরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তবে দুই দিনব্যাপী অভিযানে কারও বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার বা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ইউএনও মো. হেদায়েত উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজকের অভিযানে তিনটি চিংড়িঘেরের চারটি অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ এবং পানি চলাচলের তিনটি স্লুইসগেট নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’
তবে ঘেরগুলোর বাইরের বেড়িবাঁধগুলো এখনো অপসারণ করা হয়নি। এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘সোনাদিয়ায় গড়ে ওঠা ৪৮টি চিংড়িঘেরের প্রায় ২০ কিলোমিটার বাঁধ স্থায়ীভাবে অপসারণে আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকার প্রয়োজন। এর জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রাক্কলন তৈরির কাজ চলছে।’
ইউএনও বলেন, এর মধ্যে প্যারাবন ধ্বংস করে চিংড়িঘের নির্মাণ এবং আগুন দিয়ে প্যারাবন পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বন বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন বিভাগ মামলা করছে না।
এ প্রসঙ্গে মহেশখালীর গোরকঘাটা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আয়ুব আলী বলেন, প্যারাবন কেটে যেসব চিংড়িঘের তৈরি হয়েছে, এসব প্যারাবন বেজার আওতাধীন ছিল। বেজা থেকে এখনো তা বন বিভাগকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়নি। তাই মামলা করতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে মামলা করতে ইউএনও বন বিভাগকে চিঠি দিলেও মামলা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে ইউএনওকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে।
সোনাদিয়ায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চিংড়িঘের। আজ দুপুরেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরের সেই নারীকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস উপদেষ্টার
কুমিল্লার মুরাদনগরে পাশবিক নির্যাতনের শিকার সেই নারীকে সরকার সার্বিক সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
উপদেষ্টা বুধবার মুরাদনগরে এসে এই আশ্বাস দেন। অবশ্য ভুক্তভোগী নারী ঘটনাস্থল বাবার বাড়িতে না থাকায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি উপদেষ্টার। পরে তিনি মুঠোফোনে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে এ আশ্বাস দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন রাতে ফজর আলী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ সময় স্থানীয় কিছু লোক ফজর আলীর পাশাপাশি ওই নারীকেও মারধর করেন। বিবস্ত্র করে নির্যাতনের পর ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় থানায় দুটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।
বুধবার বিকেলে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ মুরাদনগরে আসেন। এ সময় ভুক্তভোগী বাড়িতে না থাকায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমীনের মুঠোফোনে তিনি নির্যাতনের শিকার ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে বসে উপদেষ্টা মুঠোফোনে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন।
‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠনের ঘোষণাবুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদের কবি নজরুল মিলনায়তনে উপজেলার কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপদেষ্টা। এ সময় নারী নির্যাতন ও হয়রানি রোধ এবং নারী ও শিশুদের দ্রুততম সময়ে উদ্ধার, আইনি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে ইউএনওকে প্রধান করে মুরাদনগর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘কুইক রেসপন্স টিম’ গঠনের ঘোষণা দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, মুরাদনগর থেকেই ‘কুইক রেসপন্স টিমের’ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
মুরাদনগরের ইউএনও মো. আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনএ-ল্যাবরেটরি ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, উপদেষ্টার একান্ত সচিব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব সারাওয়াত মেহজাবীন, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা মতিন, মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ সাইফুল মালিক, মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান।