লক্ষ্মীপুরের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সানিম হোসেন হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘শিশু নিপীড়নবিরোধী ছাত্র–জনতার’ ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আবু রহমান খান বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীকে তার শিক্ষক পড়াশোনা না পারার কারণে বা অন্য কারণে পিটিয়েছে। এমন মারাত্মকভাবে পিটিয়েছে যে সেই শিক্ষার্থী মারা গেছে। এটাকে আসলে মৃত্যু বলার চাইতে হত্যা বলাটা বেশি জরুরি।’

আবু রহমান খান বলেন, ‘২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটা পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। সেই পরিপত্রে বলা হয়েছিল, স্কুল বা মাদ্রাসায় কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত করা যাবে না। তো মাদ্রাসা কি সেই পরিপত্রের বাইরে? মাদ্রাসা বাইরে না। তাহলে সেই পরিপত্র মানা হচ্ছে না কেন? এটা নিয়ে সরকারের ভূমিকা কী?’

মানববন্ধনে প্রাক্তন মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থী আব্বাস আব্দুল্লাহ (সামির) নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘হেফজখানায় যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটত এবং আমরা যদি তা বাসায় বলতে চাইতাম বা বাসায় বিচার দিতে চাইতাম, তখন আমাদের শিক্ষকেরা ভয় দেখাতেন। তাঁরা বলতেন, তুই যদি বাসায় এ কথা বলিস তাহলে তোকে আমরা এমন বদদোয়া দেব যে তোর জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনভাবে বলতেন যে আমরা ছিলাম ছোট মানুষ, আমরা কিছু বুঝতাম না।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (একাংশ) সভাপতি মেঘমল্লার বসু দাবি করেন, বাংলাদেশে গত জুলাই-আগস্টের পরে চারজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিহত হয়েছে। এসব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার, এসব ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই খুবই স্পষ্ট ভাষায়, খুব স্পষ্ট করে বলে দিতে হবে যে বাংলাদেশে যদি আর একজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর ওপরও এই ধরনের নিপীড়ন হয়, তাহলে ছাত্রসমাজ বসে থাকবে না। স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুগপৎ আমাদের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং আমাদের মধ্যে যে কৃত্রিম বিভাজন তৈরি করা হয়েছে, তা থেকে বের হতে হবে।’

গত মঙ্গলবার (১৩ মে) লক্ষ্মীপুর শহরের আল মঈন ইসলামি একাডেমি নামের মাদ্রাসার শৌচাগার থেকে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় সাত বছর বয়সী সানিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র এবং আবাসিকে থেকে পড়াশোনা করত।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু শিশুটিকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ করে তার পরিবার থানায় মামলা করেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুনমাদ্রাসার শৌচাগারে গলায় গামছা প্যাঁচানো শিশুর লাশ, শিক্ষক গ্রেপ্তার১৪ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা

নারায়ণগঞ্জ শহরের শায়েস্তা খান সড়কে অবস্থিত জনতা ব্যাংক বিবি রোড কর্পোরেট শাখার এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহককে হয়রাণির অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী ওই নারী গ্রাহক খুরশিদা জানান, বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে ডিপিএসের টাকা তুলতে গেলে নানা টালবাহানা করেন ওই কর্মকর্তা। এর আগে বড় বোনের ডিপিএস ভাঙ্গানোর সময়ে টাকা চেয়ে না পেয়ে ক্ষিপ্ত ছিলেন তিনি। গুণধর ওই কর্মকর্তার নাম আশরাফ। তিনি ওই শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জনতা ব্যাংকের ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্টের উপ মহাব্যবস্থাপক বরাবর ইমেইলে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে খুরশিদা জানান, গত ১৪-০৯-২০২৫ তারিখে আমি আমার ডিপিএস ৮৩০০০০৯৯ নম্বর এর টাকা আমার বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে উত্তোলন করতে যাই। আমার বোনকে দেখে একজন কর্মকর্তা আমাকে পরে আসতে বলে। অনেকক্ষন পর আমার বোন জামাই এসে ওই কর্মকর্তাকে বললে তিনি বলেন, দরখাস্ত করতে হবে। জবাবে আমার বোন জামাই বলেন, দরখাস্ত দেন, সবতো আপনাদের কাছে। এরও কিছুক্ষন পর তিনি একটি কাগজ দিয়ে বলেন আমি পূরণ করতে পারবো না। পরে আমি অন্য একজনকে দিয়ে পূরণ করে তার কাছে জমা দিলে তিনি খুব ধীরলয়ে কাগজটি নাড়াচাড়া করতে থাকেন। বিভিন্ন কিছু গুছাতে থাকেন।

এরপর বলেন, কাকে দিয়ে ফিলাপ করিয়েছেন। আমি একজনের নাম বলি। ওই সময়ে আমার বোন জামাই বলে, কে ফিলাপ করলো এটা জানার কি খুব দরকার। সঠিক হয়েছে কি-না তা দেখেন।

এ নিয়ে আমার বোন জামাইয়ের সঙ্গে তার তর্ক হলে তিনি এক পর্যায়ে কাগজ নিয়ে ম্যানেজার সাহেবের রুমে ঢুকেন। তখন ম্যানেজার সাহেব আমাদের ডেকে নেন, ঘটনা শুনেন। পরে তিনি বলেন, আজ হিসেব করে আপনার সেভিংস একাউন্টে টাকা জমা হবে আপনারা চলে যান।

ম্যানেজার সাহেবের কাছে ওই কর্মকর্তার পরিচয় জানতে পারি, ওনার নাম আশরাফ উনি ওই ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার।

এখানে উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১০ জুলাই আমার বড় বোন পারভীন ডিপিএসের টাকা তুলতে গেলে ওই কর্মকর্তা আশরাফ সাহেব তার কাছে টাকা চান। বিষয়টি আমার বোন জামাই শুনতে পেয়ে তার কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি (আশরাফ সাহেব) তখন বলেন, টাকা চাই নাই পেয়ারা খেতে চেয়েছি। তখন তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনার কারনেই তিনি আমার বোনকে দেখে সেদিন আমাকে নূন্যতম সহযোগীতা না করে হয়রাণি করতে চেয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোররাতে রণক্ষেত্র: নরসিংদীতে নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৫
  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন