মাদ্রাসাশিক্ষার্থী সানিম হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগে মানববন্ধন
Published: 18th, May 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সানিম হোসেন হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘শিশু নিপীড়নবিরোধী ছাত্র–জনতার’ ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আবু রহমান খান বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থীকে তার শিক্ষক পড়াশোনা না পারার কারণে বা অন্য কারণে পিটিয়েছে। এমন মারাত্মকভাবে পিটিয়েছে যে সেই শিক্ষার্থী মারা গেছে। এটাকে আসলে মৃত্যু বলার চাইতে হত্যা বলাটা বেশি জরুরি।’
আবু রহমান খান বলেন, ‘২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একটা পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। সেই পরিপত্রে বলা হয়েছিল, স্কুল বা মাদ্রাসায় কোনো শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে আঘাত করা যাবে না। তো মাদ্রাসা কি সেই পরিপত্রের বাইরে? মাদ্রাসা বাইরে না। তাহলে সেই পরিপত্র মানা হচ্ছে না কেন? এটা নিয়ে সরকারের ভূমিকা কী?’
মানববন্ধনে প্রাক্তন মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ও বুয়েটের বর্তমান শিক্ষার্থী আব্বাস আব্দুল্লাহ (সামির) নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘হেফজখানায় যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটত এবং আমরা যদি তা বাসায় বলতে চাইতাম বা বাসায় বিচার দিতে চাইতাম, তখন আমাদের শিক্ষকেরা ভয় দেখাতেন। তাঁরা বলতেন, তুই যদি বাসায় এ কথা বলিস তাহলে তোকে আমরা এমন বদদোয়া দেব যে তোর জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে। এমনভাবে বলতেন যে আমরা ছিলাম ছোট মানুষ, আমরা কিছু বুঝতাম না।’
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (একাংশ) সভাপতি মেঘমল্লার বসু দাবি করেন, বাংলাদেশে গত জুলাই-আগস্টের পরে চারজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নিজেদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিহত হয়েছে। এসব ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার, এসব ঘটনা এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই খুবই স্পষ্ট ভাষায়, খুব স্পষ্ট করে বলে দিতে হবে যে বাংলাদেশে যদি আর একজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর ওপরও এই ধরনের নিপীড়ন হয়, তাহলে ছাত্রসমাজ বসে থাকবে না। স্কুল-কলেজসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুগপৎ আমাদের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং আমাদের মধ্যে যে কৃত্রিম বিভাজন তৈরি করা হয়েছে, তা থেকে বের হতে হবে।’
গত মঙ্গলবার (১৩ মে) লক্ষ্মীপুর শহরের আল মঈন ইসলামি একাডেমি নামের মাদ্রাসার শৌচাগার থেকে গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় সাত বছর বয়সী সানিমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র এবং আবাসিকে থেকে পড়াশোনা করত।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুটি আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু শিশুটিকে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ করে তার পরিবার থানায় মামলা করেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুনমাদ্রাসার শৌচাগারে গলায় গামছা প্যাঁচানো শিশুর লাশ, শিক্ষক গ্রেপ্তার১৪ মে ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন ঘিরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী লেখক সমাজের ব্যানারে একদল লেখক নির্বাচন স্থগিতের দাবিতে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন লেখক ও সাহিত্যিক এম ফরিদুল ইসলাম, চর্যাপদ একাডেমির মহাপরিচালক রফিকুজ্জামান রনি, হিলশা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংসদের পরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, সহকারী পরিচালক সুলতান মাহমুদুল হাসান, কবি মিজানুর রহমান, মোহনা সাহিত্য শিল্পীগোষ্ঠীর পরিচালক আবদুল মাজেদ প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, চাঁদপুরের লেখকেরা ১৫ বছর ধরে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। তাঁদের সাহিত্য একাডেমির সদস্য করা হয়নি। ফ্যাসিবাদের দোসররা একাডেমি দখল করে রেখেছে। সেই ফ্যাসিবাদী সময়ের পুরোনো ভোটার তালিকা দিয়ে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে ফ্যাসিবাদকেই পুনর্বাসন করা হবে। তাঁরা বলেন, অবিলম্বে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং তারপর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসকের কাছে।
মানববন্ধনে চাঁদপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের লেখক, কবি ও সাহিত্যিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ১৩ মে তাঁরা একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেন।
অন্যদিকে একই দিন বেলা দুইটার দিকে চাঁদপুর শহরের জোড়পুকুরপাড় সাহিত্য একাডেমি প্রাঙ্গণে চাঁদপুর লেখক সমাজের ব্যানারে অপর একটি পক্ষ পাল্টা মানববন্ধন করে। তারা বলে, তারা চায় চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমির নির্বাচন হোক এবং সাহিত্যচর্চা আরও বেগবান হোক। তাদের অভিযোগ, একটি পক্ষ নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন লেখক মাহবুব আনোয়ার, আবদুল্লাহ হিল কাফি, নুরুন্নাহার মুন্নি, পলাশ দে প্রমুখ।