‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের হরিয়ানা রাজ্য পুলিশ। ওই নারীর নাম জয়তি রানি (৩৩)। পর্যটন নিয়ে ব্লগ করেন তিনি। শুক্রবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, ইউটিউবে জয়তি রানির ৩ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি অনুসারী রয়েছে। ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ১ লাখ ৩২ হাজারের বেশি। দিল্লিতে পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তাকে ‘সংবেদনশীল তথ্য’ দেওয়ার পর তাঁকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

জয়তি রানিকে হরিয়ানার হিসার জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর শনিবার তাঁকে আদালতে তোলে পুলিশ। পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে তাঁকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। জয়তিকে ভারতের গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, জয়তি রানির বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আনা হয়েছে। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, তিনি পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছিলেন এবং তাঁর বিভিন্ন আধেয়র (কন্টেন্ট) মাধ্যমে পাকিস্তানের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরেছিলেন। গত মার্চ ও এপ্রিলে নিজের পাকিস্তান ভ্রমণের ভিডিও শেয়ার করেছিলেন জয়তি।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জয়তি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে পর্যটন ভিসার জন্য পাকিস্তান হাইকমিশনের গিয়েছিলেন তিনি। তখন দিল্লির পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তা এহসান–উর–রহিমের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়। পরে তিনি ওই কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন জয়তি।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ বলেছে, পাকিস্তানে গিয়ে এহসান–উর রহমানের প্ররোচনায় আলী এহওয়ান নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন জয়তি। তিনি আবার জয়তিকে পাকিস্তানের দুজন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করান। সন্দেহ এড়াতে তাঁদের একজনের নাম নিজের মুঠোফোনে ভিন্ন নামে সংরক্ষণ করে জয়তি। পরে ওই তিনজনের কাছে ভারত সংক্রান্ত ‘সংবেদনশীল তথ্য’ সরবরাহ করেন তিনি।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৩ মে এহসান-উর-রহিমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ভারত সরকার। তাঁর বিরুদ্ধেও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়। এরপর তাঁকে অবিলম্বে ভারত ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ প তচরব ত ত কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

উড়োজাহাজ কেউ বিনা মূল্যে দেয় না, বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা অবশ্যই থাকে: হিলারি ক্লিনটন

কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বিলাসবহুল উড়োজাহাজ (বোয়িং জেট) উপহার হিসেবে নেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন।

ডেমোক্রেটিক দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি গত বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘কেউই ৪০০ মিলিয়ন (৪০ কোটি) ডলারের একটি উড়োজাহাজ বিনা মূল্যে দেয় না, এর বিনিময়ে কিছু না কিছু প্রত্যাশা অবশ্যই থাকে।’

বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে বলেছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি।

কাতারের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে ট্রাম্পকে ব্যবহারের জন্য ৪০ কোটি ডলার মূল্যের একটি বোয়িং ৭৪৭-৮ উড়োজাহাজ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের ওই উপহার গ্রহণ এবং বর্তমান এয়ারফোর্স ওয়ানের পরিবর্তে সেটি ব্যবহারের পরিকল্পনার খবর ক্যাপিটল হিলে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের বহনে ব্যবহৃত সরকারি উড়োজাহাজকে এয়ারফোর্স ওয়ান বলা হয়।

মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাঁরা একে দুর্নীতির প্রমাণ বলেও উল্লেখ করেন।

এটা মেনে নিতে আমার অস্বস্তি হচ্ছে। আমার মনে হয়, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় এখানে রয়েছে, যেমন শ্রবণযন্ত্র (লিসেনিং ডিভাইস), নিরাপত্তা–সংক্রান্ত মানদণ্ড এবং সম্ভাব্য অন্যান্য বিষয়, এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজনসিনেটর টড ইয়াং, সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্য

এ সপ্তাহে ৯ জন ডেমোক্রেটিক সিনেটর পেন্টাগনকে প্রেসিডেন্টের ওই উড়োজাহাজ গ্রহণের সম্ভাব্য পরিকল্পনা এবং এতে প্রতিরক্ষা বিভাগের ভূমিকা কী হবে, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী কাতারের কাছ থেকে কি ট্রাম্প উড়োজাহাজ উপহার নিতে পারেন১৬ মে ২০২৫

ট্রাম্প কাতারের উপহারের উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ান হিসেবে ব্যবহার করার এবং প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সেটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহারের জন্য রেখে দেওয়ার কথা বলেছেন বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

ট্রাম্পের এই ইচ্ছা নিয়ে তাঁর দলের কয়েকজন সিনেটরও আপত্তি তুলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে একজন প্রেসিডেন্টকে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর ব্যবহার করা সবকিছু প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরিতে হস্তান্তর করতে হয়।

এ সপ্তাহে ৯ জন ডেমোক্রেটিক সিনেটর পেন্টাগনকে প্রেসিডেন্টের ওই উড়োজাহাজ গ্রহণের সম্ভাব্য পরিকল্পনা এবং এতে প্রতিরক্ষা বিভাগের ভূমিকা কী হবে, তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।

সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটির সদস্য সিনেটর টড ইয়াং বলেন, ‘এটা মেনে নিতে আমার অস্বস্তি হচ্ছে।’

আরও পড়ুনকাতারের কাছ থেকে বিলাসবহুল উড়োজাহাজ নিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প: মার্কিন গণমাধ্যম১২ মে ২০২৫

ইয়াং জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয় এখানে রয়েছে, যেমন শ্রবণযন্ত্র (লিসেনিং ডিভাইস), নিরাপত্তা–সংক্রান্ত মানদণ্ড এবং সম্ভাব্য অন্যান্য বিষয়। এগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।’

এই উপহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি ও নজরদারির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারেটেড ক্রুজ, মার্কিন সিনেটর

সিনেটর টেড ক্রুজ মঙ্গলবার সিএনবিসিকে বলেছেন, এই উপহার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুপ্তচরবৃত্তি ও নজরদারির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ঝুঁকির সৃষ্টি করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানেও ট্রাম্পের এই উপহার গ্রহণের সিদ্ধান্ত আটকে যাওয়ার কথা। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা কোনো রাজা–বাদশাহ, যুবরাজ বা বিদেশি রাষ্ট্র থেকে উপহার গ্রহণ করতে পারবেন না।

আরও পড়ুনআমি এমন একটা প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার মতো লোক নই: ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উড়োজাহাজ কেউ বিনা মূল্যে দেয় না, বিনিময়ে কিছু প্রত্যাশা অবশ্যই থাকে: হিলারি ক্লিনটন