কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বলতে গেলে আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এটি আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগযোগ, বিনোদন ইত্যাদি সবকিছুতেই কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে।

ইতিমধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তিসেবা চ্যাটজিপিটি সারা বিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা বিতর্ক। বিশেষ করে শিক্ষাক্ষেত্রে কোথায় এটির ব্যবহার কতটুকু সমীচীন, সমস্যা সমাধানের জন্য কতটুকু মাত্রায় ব্যবহার গ্রহণযোগ্য, সেটি নিয়েও দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে।

চ্যাটজিপিটি কী

চ্যাটজিপিটি মূলত ওপেনএআই নামের একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানের তৈরি ‘প্রাকৃতিক ভাষা প্রক্রিয়াকরণ’ (ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং) প্রযুক্তি, যেটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তারই একটি শাখা। এটিকে কোনো প্রশ্ন করা হলে এমনভাবে আচরণ করে, যেন প্রশ্নটি বুঝতে পেরেছে এবং সেই অনুযায়ী প্রশ্নের উত্তর বা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। অন্যান্য চ্যাটবটগুলো যেখানে নির্দিষ্ট কাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং শুধু পূর্বনির্ধারিত প্রম্পট বা কমান্ডের ভিত্তিতে সাড়া দেয়, চ্যাটজিপিটি সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহারকারীর সঙ্গে অর্থপূর্ণ ও পরিপ্রেক্ষিত অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক কথোপকথন পরিচালনা করতে পারে।

কোনো প্রশ্নের উত্তরে বিস্তারিত ব্যাখ্যা যেমন দিতে পারে, তেমনি আবার প্রয়োজন হলে উপস্থাপন করতে পারে বৃহৎ কিছুর সারাংশ। এটি এতটাই বাস্তব পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কাদার মধ্যে গরু-মহিষ আটকা পড়লে কীভাবে উদ্ধার করতে হবে, সেই উত্তর যেমন দিতে পারে, তেমনি রান্না করা মাংসে লবণ বেশি হলে কী করা উচিত, সেই পরামর্শও দিতে পারে। ব্যবহারকারী কোনো বিষয় বর্ণনা করে সেটির ওপর গল্প, কবিতা, নিবন্ধ লিখে দিতে বললে যেমন লিখতে পারে, তেমনি লিখতে পারে প্রোগ্রাম ও ই–মেইল, করতে পারে জটিল অঙ্কের সমাধান, আঁকতে পারে ছবি। চ্যাটজিপিটি ছাড়াও আরও কিছু অ্যাপ বা পরিষেবা আছে, যেগুলো একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। সাধারণত এগুলো লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল নামে পরিচিত। ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত বা পরিস্থিতিতে প্রতিটি মডেলরই রয়েছে নিজস্ব কিছু সবলতা ও দুর্বলতা।

যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয় যে স্বাভাবিক চিন্তা করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন, অপ্রয়োজনীয় কিছুর জন্যও চ্যাটজিপিটির দ্বারস্থ হচ্ছেন, তাহলে সেটি উদ্বেগজনক।আঁকা: আরাফাত করিম.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইয়াবা লুটের অভিযোগ: বিএনপির তিন নেতার পদ স্থগিত

কক্সবাজারের রামুতে ইয়াবা লুটের ঘটনায় বিএনপি, যুবদল ও শ্রমিক দলের তিন নেতার পদ স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়কও স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. নুরুল কবির, রাজারকুল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দানু মিয়া ও রাজারকুল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিক দলের সভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইলের পদ স্থগিত করা হয়েছে।  

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার রামু উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার বাবু সমকালকে বলেন, সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ব স্ব সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনজনের পদ স্থগিত করা হয়েছে। 

এদিকে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সানাউল্লাহ সেলিম স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা জানান তিনি।

পোস্টে সেলিম বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল রামু উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলাম। কারণ, সম্প্রতি ষড়যন্ত্র ও রাজনৈতিক রোষানলের শিকার হয়ে আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে, যা দিন দিন আমাকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করছে। তাই আমি এ সিদ্ধান্ত নিলাম। সুখে থাক প্রাণের সংগঠন ছাত্রদল, ভালো থাকুক সুবিধাবাদীরা।’

তবে তিনি ইয়াবা লুটে নিজের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেন, স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

জানা যায়, কক্সবাজারের রামুতে ৩০ হাজার ইয়াবা লুটের একটি ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি একাধিক অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রদল নেতা সানাউল্লাহ সেলিমের নেতৃত্বে ইয়াবার চালানটি লুট করা হয়। লুট করা ইয়াবা বিক্রির ২৮ লাখ টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন স্থানীয় ছাত্রদল ও বিএনপির ২৩ নেতাকর্মী। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালানটি আনা হচ্ছিল। এটির গন্তব্য ছিল রামু উপজেলা সদরের মন্ডল পাড়ার বাসিন্দা মনিরের বাড়ি। তবে রাস্তায় রাজারকুল ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পাঞ্জেগানা এলাকায় চালানটি লুট হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘চালানটি প্রথমে স্থানীয় কাট্টাইল্যা পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩০ হাজার ইয়াবার বাজার মূল্য অনেক বেশি হলেও মাত্র ২৮ লাখ টাকায় বিক্রি করে ২৩ জনের মধ্যে ভাগাভাগি করা হয়েছে। ভাগে ছাত্রদল আহ্বায়ক সানাউল্লাহ সেলিম একাই ১০ লাখ এবং অন্যান্য দলীয় ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ৮-১০ হাজার থেকে ২-৩ লাখ টাকা করে পেয়েছেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের তিন নেতার সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর তাদের পদ স্থগিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, ইয়াবার চালান লুটের ঘটনাটি শুনেছি, খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ