সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
Published: 18th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রদলের নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদল।
রবিবার (১৮ মে) বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সংগঠনটি।
মিছিলে ‘আমার ভাই কবরে, খুনী কেন বাহিরে’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছেই চলবে’, ‘ছাত্রদলের সংগ্রাম, চলছেই চলবে’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় নেতাকর্মীরা।
আরো পড়ুন:
নড়াইলে হত্যা মামলায় বিএনপি নেতাসহ আসামি ৩৬, গ্রেপ্তার ২
হত্যার তিন বছর পর রহস্য উদঘাটন
এ সময় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজ, যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু দাউদ, আহসান হাবীব, আনারুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিন, রাকিব হোসেন সাক্ষর, উল্লাস হোসেন, রুকনুজ্জামান, রিফাত, আলীনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে মাসুদ রুমী মিথুন বলেন, “জুলাই আন্দোলনে সাম্যের যে অবদান, তা ভুলে যাওয়ার মতো না। কিন্তু আমরা শুধু ছাত্রদল ছাড়া অন্য কোনো সংগঠনকে এই হত্যার প্রতিবাদ মিছিল মিটিং করতে দেখিনি। আমরা সরকারের কাছে সাম্য হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি এবং জড়িত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। ছাত্রদলের কোনো কর্মীর উপর আঘাত এলে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাহেদ আহম্মেদ বলেন, “আমাদের যে ভাই জুলাইয়ের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ছিল, তাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হত্যা করেছে একটি চক্র। এখনো তার হত্যাকারীদের বিচার করা হয়নি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দ্রুত বিচারের দাবি জানাই। একটা হত্যাকাণ্ড ঘটতেই পারে। কিন্তু তার বিচার করতে হবে। আমরা চাই মানুষ নির্বিঘ্নে চলাফেলা করুক, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে একটি পাকিস্তানি বা গুজরাটি চক্র জন্ম নিয়েছে। যারা বলছে সাম্য সেখানে মাদক সেবন করতে গিয়েছিল। যে যত অপরাধী হোক না কেন, সে যেভাবেই মরুক- তার তদন্ত হতে হবে। কিন্তু এই গুজরাটি চক্র বলছে, কেন ওখানে গেছে? শুধু তাই নয়, তারা ছাত্রদলের মেয়েদের পতিতা বলছে।” তিনি প্রশাসনকে তাদের চিহ্নিত করার দাবি জানান।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ছ ত রদল র হত য র
এছাড়াও পড়ুন:
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’: অফুরান কল্যাণের দোয়া
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’, একটি ছোট্ট দোয়া, কিন্তু অফুরানের কল্যাণবাহী। এর অর্থ: ‘হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে আফিয়া (কল্যাণ) প্রার্থনা করি।’
আফিয়া শব্দটি স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, পাপ থেকে মুক্তি এবং দুনিয়া-আখিরাতের সকল কল্যাণকে ধারণ করে। নবীজি (সা.)-এর শেখানো এই দোয়া আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমাদের আধ্যাত্মিক আশ্রয়।
দোয়ার উৎসদোয়াটি হাদিসে বর্ণিত একটি প্রামাণ্য দোয়া। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর কাছে “আফিয়া” প্রার্থনা করো, কারণ আফিয়ার চেয়ে উত্তম কিছু কাউকে দেওয়া হয়নি।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস ৩৫১৪)
আরেকটি হাদিসে, তিনি তাঁর চাচা হজরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)-কে বলেন, ‘আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতে আফিয়া চাও।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস ২,৬৩৫)
‘আফিয়া’ অর্থ কী‘আফিয়া’ একটি বিস্তৃত শব্দ। মাওলানা আশরাফ আলী থানভি তাঁর ‘মুনাজাতে মকবুল’-এ ব্যাখ্যা করেন, ‘আফিয়া’ দুনিয়ার ফিতনা, রোগব্যাধি, পাপাচার এবং আখিরাতের শাস্তি থেকে মুক্তি কামনা করে। এটি শারীরিক সুস্থতা, মানসিক শান্তি এবং আধ্যাত্মিক পবিত্রতার সমন্বয়। (মুনাজাতে মকবুল, পৃষ্ঠা ১৫৬, দারুল ইশাআত, ২০০৫)
দোয়ার তাৎপর্যএই দোয়া ছোট হলেও এর গভীরতা অপরিসীম। নবীজি (সা.) দোয়াটি প্রায়ই পড়তেন এবং সাহাবিদের শিখিয়েছিলেন। মুফতি তাকী উসমানীর মতে, ‘আফিয়া‘ দোয়া মুমিনের জন্য একটটা ঢাল, যা তাঁকে দুনিয়ার ফিতনা ও আখিরাতের কষ্ট থেকে রক্ষা করে। (ইসলামি জিন্দেগি, পৃষ্ঠা ৪১২, ইদারাতুল মাআরিফ, ২০১০)
আফিয়া শুধু ব্যক্তির কল্যাণ নয়, বরং পরিবার, সমাজ এবং উম্মাহর জন্যও কল্যাণ কামনা করে। একই সঙ্গে এই দোয়া আমাদের আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে এবং তাঁর রহমতের ওপর ভরসা রাখতে শেখায়।
হাদিসে এসেছে, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন তিনবার বলে, ‘আউজু বিল্লাহিস সামি’ইল আলিমি মিনাশ শাইতানির রাজিম’ এবং আফিয়ার দোয়া পড়ে, সে বিপদ থেকে রক্ষা পায়।’ (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩,৮৭১)।
কখন পড়বেনদোয়াটি যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায় পড়া যায়। তবে নির্দিষ্ট কিছু সময়ে পড়লে ফজিলত বেশি পাওয়া যায়:
১. নামাজের পর: ফরজ নামাজের পর তাসবিহ ও দরুদের সঙ্গে এই দোয়া পড়া উত্তম।
২. সকাল-সন্ধ্যার জিকির: সকালে ফজরের পর ও সন্ধ্যায় মাগরিবের পর এই দোয়া পড়লে দিনভর রক্ষা পাওয়া যায়।
৩. বিপদের সময়: অসুস্থতা, মানসিক চাপ বা ফিতনার সময় এই দোয়া পড়া শান্তি দেয়।
৪. নিয়মিত আমল: প্রতিদিন তিনবার পড়লে বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা পাওয়া যায়।
আধুনিক জীবনের তাড়াহুড়া, মানসিক চাপ, রোগব্যাধি এবং ফিতনার মধ্যে ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল আফিয়া’ দোয়াটি হতে পারে আমাদের মানসিক শান্তির জপমালা।
আরও পড়ুননবীজি (সা.)–এর দোয়া০১ মে ২০২৫