ইউটিউবার, টিকটক কিংবা ফেসবুকে প্রতিনিয়তই ভাইরাল হচ্ছেন অনেকে। তাঁরা ভাইরাল হলেই পরবর্তী সময় সহজেই নাম লেখাচ্ছেন অভিনয়শিল্পী হিসেবে। ভিউকে টার্গেট করে এসব ভাইরাল ব্যক্তিকে কাজে লাগাচ্ছেন প্রযোজক ও পরিচালকেরা। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা অভিনয়শিল্পীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই চর্চায় সহজে শিল্পী হওয়ার প্রবণতা তৈরি হলে, যে কেউ যেকোনো উপায়ে ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা করবেন, যা নাট্য অঙ্গনের শিল্পচর্চাকে অসুস্থ প্রতিযোগিতার দিকে নিয়ে যাবে। কেউ অভিনয় শিখতে চাইবেন না।

সম্প্রতি তরুণ অভিনেতা ফরহাদ লিমন ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘অসুস্থতার শেষ সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে না তো আমাদের মানসিকতা? আজ আমরা দুটো ভিউ পাওয়ার আশায় যাকে–তাকে ধরে এনে নাটকে যুক্ত করছি।’

প্রতিবাদ জানিয়ে পোস্টটি করেছেন অভিনেতা ফরহাদ লিমন। ছবি: ফেসবুক.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে জরুরি সাক্ষাৎ, কী ঘটছে বিএসইসির চেয়ারম্যানের ভাগ্যে?

দেশের শেয়ারবাজারে ক্রমাগত ধসে সমালোচনা মুখে পড়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মকসুদ। সাধারণ বিণিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন। এ অবস্থায় সোমবার (১৯ মে) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে দেখা করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মকসুদ অর্থ উপদেষ্টা সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইলে তাকে ১০ মিনিটের সময় দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী সকাল ৯-৫০ মিনিটে বিএসইসি চেয়ারম্যান অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন। এ সময়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের পত্র অর্থ উপদেষ্টার কাছে দিতে পারেন। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এ পদে তার আর থাকা সম্ভব হচ্ছে বলে তিনি পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

গত বছরের ১৮ আগস্ট রাশেদ মকসুদকে বিএসইসি চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয় সরকার। এরপর থেকে  তিনি কঠোর হস্তে বিএসইসি অসৎ কর্মকর্তাদের অপসারণ করেন। চলতি বছরই তিনি বিএসইসি ১৬ কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন। এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তাদের অনেকে বিএসইসি সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমানে দুর্নীতি অভিযোগে কারাগারে থাকা শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের ঘনিষ্ঠও ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সরকার পুঁজিবাজারের সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছে: ড. আনিসুজ্জামান

এপেক্স ট্যানারির প্রয়াত উদ্যোক্তার শেয়ার হস্তান্তর

এদিকে, পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের প্রতিবাদে কফিন নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন দেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা।

রবিবার (১৮ মে)  রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে এ ব্যতিক্রমী বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকালে বিএসইসি চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি করেন আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভের আয়োজক বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে বিনিয়োগকারীরা প্রথমে কফিন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে একটি মিছিল বের হয়ে হাটখোলা মোড় হয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে তারা প্রতীকী কফিন নিয়ে গায়েবানা জানাজা পড়েন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া বিনিয়োগকারীরা বলেন, শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক দরপতনের কারণে লাখো বিণিয়োগকারী পথে বসেছেন। মাকসুদের নেতৃত্বে বাজার থেকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা মূলধন উধাও হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, পুঁজি হারিয়ে অনেক বিণিয়োগকারী হতাশায় পড়েছেন।

বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ পুঁজিবাজার বোঝেন না, তার নেতৃত্বে বাজারে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।

তারা আরো বলেন, গতকাল (শনিবার) এক বৈঠকে তিনি অংশীজনদের হুমকি দিয়েছেন, যাতে পুঁজিবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক তথ্য গণমাধ্যমে না আসে এবং তার বিরুদ্ধে কেউ আন্দোলন না করে। বিনিয়োগকারীদের মতে, এই মানসিকতা দায়িত্বশীল পদে থাকা কারো হতে পারে না।

এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের পুঁজিবাজার রক্ষা করা আমাদের কাজ নয়- মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের মতে, অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এ খাতকে রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সব সংস্থার দায়িত্ব রয়েছে।

বিণিয়োগকারীরা বলেন, সামনে কোরবানির ঈদ। এর আগে বাজারের এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে আরো অনেক বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হবে।

তারা বলেন, বাধ্য হয়ে কফিন নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে। এখন যদি পরিবর্তন না আসে, তাহলে আন্দোলনের মাত্রা আরো বাড়ানো হবে। তাদের একটাই দাবি, বাজার বাঁচাতে হলে খন্দকার রাশেদ মাকসুদকে দ্রুত অপসারণ করতে হবে।

ঢাকা/হাসনাত/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ