ভিন্ন মাত্রায় পালন শাহজালাল (রহ.) বার্ষিক ওরস
Published: 19th, May 2025 GMT
দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার ভিন্ন মাত্রায় পালিত হচ্ছে ইসলামী মহাসাধক শাহজালাল (রহ.)-এর ৭০৬তম বার্ষিক ওরস। প্রতিবছর হিজরি সনের জিলকদ মাসের ১৯ ও ২০ তারিখ ওরস অনুষ্ঠিত হয়।
চিরায়ত নিয়ম অনুযায়ী সকালে মাজারে গিলাফ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে দু’দিনব্যাপী ওরসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এবার মাজার কর্তৃপক্ষ ছাড়া অন্য কেউ সরাসরি মাজারে গিলাফ ছড়ানোর সুযোগ পায়নি। তবে ভক্তরা আগের মতো উৎসব করে গিলাফ নিয়ে মাজারে প্রবেশ করেন।
অন্যান্য বছর ওরস উপলক্ষে দিন-রাত মাজার প্রাঙ্গণেই থাকতেন ভক্তরা। চলত শামিয়ানা টানিয়ে ভক্তিমূলক গানের অনুষ্ঠান। এবারের আয়োজন সেখানে ছিল কিছুটা ব্যতিক্রম। ওরসকে কেন্দ্র করে গানবাজনার পাশাপাশি প্রচলিত অনেক উদযাপনই রহিত করা হয়।
ওরস সামনে রেখে ভক্ত-আশেকানরা শনিবার থেকেই এই মহান দরবেশের মাজার প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন। রোববার বিকেলে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন মাজারে জড়ো হচ্ছেন। হাজার হাজার ভক্তের মিলনমেলায় পরিণত হয় মাজার এলাকা।
মাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওরসে মিলাদ মাহফিল, জিকির আসকার, খতমে কোরআন চলবে রোববার গভীর রাত পর্যন্ত। সোমবার ভোররাতে আখেরি মোনাজাত ও শিরনি বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দু’দিনব্যাপী ওরসের আনুষ্ঠানিকতা।
এদিকে, ওরস উপলক্ষে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। মাজার এলাকায় সিসিটিভিসহ প্রতিটি ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকেও রাখা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। এ ছাড়া মাজার কর্তৃপক্ষ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রেখেছে।
এসএমপি কমিশনার রেজাউল করিম জানিয়েছেন, এবার মাজারে সুশৃঙ্খল ও সুন্দর পরিবেশে ওরস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ সবাই সহায়তা করছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাবির ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’।
বুধবার (১ জুলাই) সকাল ১০টায় টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টায় বিভিন্ন হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে একত্রিত হন। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে ক্যাম্পাস জুড়ে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
আরো পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
সকাল সাড়ে ১০টায় টিএসসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এক আলোচনা সভা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ।
এছাড়াও পায়রা চত্বরে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী আয়োজনে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং কেক কাটা হয়। এ সময় সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান। বিদেশি শিক্ষার্থীরাও এতে বিশেষ সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুজ্জামান দুদু বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবসময় মুক্ত চিন্তা, স্বাধীনতা, মুক্তির পথ দেখিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছে, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের পতাকাও এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উড়ানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্ররা পথ দেখান। আজ এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে সব মহলকে শ্রদ্ধা জানাই।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অ্যালামনাইরা অংশ নেন।
আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে প্রকাশিত ‘স্মরণিকা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে কেন্দ্র করে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন ও টিএসসি-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং সড়কসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।
এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ ছিল। তবে পরীক্ষাসমূহ পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯২১ সালের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠান জ্ঞান, চিন্তা ও মুক্তচিন্তার আলো ছড়িয়ে দেশের অগ্রগতিতে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী