সারা দিনে ১০ হাজার কদম হাঁটবেন নাকি জাপানি পদ্ধতিতে মাত্র ৩০ মিনিট? কোনটা সেরা
Published: 19th, May 2025 GMT
সুস্থতার জন্য ব্যয় করা একটা মিনিটও গুরুত্বপূর্ণ। হাঁটার মতো সহজ ব্যায়াম আর নেই। ছাদে, গ্যারেজে, এমনকি বারান্দা বা ঘরেও রোজ খানিকটা হাঁটাহাঁটি করা সম্ভব। কীভাবে হাঁটলে সবচেয়ে বেশি উপকার মিলবে, জানালেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিন।
কদম গুণে হাঁটার উপকারিতাআপনি যতবারই পা ফেলছেন, ততবারই ক্যালরি পুড়ছে। কতটা পুড়ছে, তা নির্ভর করছে আপনার ওজন এবং হাঁটার গতির ওপর। বুঝতেই পারছেন, ওজন কমাতে চাইলে আপনাকে দ্রুত হাঁটতে হবে এবং যতটা বেশিবার সম্ভব, পা ফেলতে হবে। তবে আপনি যদি হালকা গতিতেও ১০ হাজার কদম হাঁটেন, তা-ও আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ খানিকটা উপকারে আসবে। কারণ, প্রতি পদক্ষেপেই কিছু না কিছু ক্যালরি পোড়ে।
১০ হাজার কদমের মধ্যে কয়েক হাজার কদম যদি একটু দ্রুত হাঁটেন, তাহলে আরও একটু বেশি ক্যালরি পুড়বে। যেকোনো গতিতেই আপনি ১০ হাজার কদম হাঁটুন না কেন, সারা দিনে এতটা হাঁটার অর্থই হলো আপনি আপনার বসে থাকার সময়টা কমিয়ে দিচ্ছেন। আর হাঁটার জন্য অনেকটা সময় ব্যয় করছেন। হয়তো কাজের ফাঁকে সময় পেলেই একটু হেঁটে নিচ্ছেন অফিস কিংবা বাসার করিডরে, হয়তো দুটি তলা সিঁড়ি ভাঙছেন, কিংবা হয়তো গাড়িতে বসে না থেকে খানিকটা পথ হাঁটছেন।
এভাবে আপনার বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমছে। তবে সংখ্যাটা যে ১০ হাজারই হতে হবে, তা নয়। সুস্থ থাকতে রোজ সাড়ে সাত হাজার কদম হাঁটাই যথেষ্ট। গবেষণার ফলাফল এমনটাই জানাচ্ছে। রোজ পাঁচ হাজার কদম হাঁটলে বিষণ্নতাও কমে।
আরও পড়ুনএকটু জোরে হাঁটলেই পা ব্যথা করে, কী করি?১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫জাপানি পদ্ধতিতে হাঁটার গুণজাপানি পদ্ধতিতে হাঁটা বা ইন্টারভাল ওয়াকিং ট্রেনিংয়ের জন্য তুলনামূলক কম সময় প্রয়োজন, মাত্র ৩০ মিনিট। প্রথমে আপনাকে ধীরে অর্থাৎ আপনার স্বাভাবিক গতিতে হাঁটতে হবে তিন মিনিট। এরপর দ্রুতগতিতে তিন মিনিট। এ সময়টা আপনাকে এমন দ্রুতগতিতে হাঁটতে হবে, যাতে আপনার হৃৎপিণ্ডের গতি দ্রুত হয়ে ওঠে এবং শ্বাস ভারী হয়ে আসে। এভাবে আপনাকে পর্যায়ক্রমে ধীরে ও দ্রুতগতিতে হাঁটতে হবে, মোট ৩০ মিনিট। সবশেষে কয়েক মিনিট কুলডাউন করতে হয়।
এই পদ্ধতির অনেক উপকার; উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। বয়সজনিত পেশিক্ষয় কম হয়। আর এতে সব মিলিয়ে যে ক্যালরি পোড়ে, তা আপনার ওজনকে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় ধরে রাখতেও সহায়তা করে। সময় কম লাগে বলে এই পদ্ধতির চর্চা চালিয়ে যাওয়া সহজ। যেকোনো ব্যায়ামের উপকার পেতে নিয়মিত ব্যায়াম চালিয়ে যাওয়া আবশ্যক। তিন মিনিটের ১০টি অডিও ক্লিপ দিয়ে প্লে–লিস্ট সাজিয়ে নিলে এই তিন মিনিটের হিসাবও করা যায় অনায়াসে। তা ছাড়া এই চর্চায় জয়েন্টের ওপরেও বাড়তি চাপ পড়ে না।
আরও পড়ুন১ মিনিট, ৫ মিনিট, আধা ঘণ্টা—কতক্ষণ হাঁটলে কী উপকার৩০ জানুয়ারি ২০২৫সিদ্ধান্ত আপনারদীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি সরাসরি কমিয়ে আনতে পারে বলে সুস্থ থাকার জন্য জাপানি পদ্ধতিটিই বেশি ভালো। আপনি চাইলে কেবল এটির চর্চাই করতে পারেন। তবে সারা দিনে বহু কদম হাঁটার উপকারিতাও অস্বীকার করার উপায় নেই। আপনি চাইলে এমনভাবে জীবনধারা সাজিয়ে নিতে পারেন, যাতে ৩০ মিনিট জাপানি পদ্ধতিতে হাঁটা হয়, আবার সারা দিনের অন্য সময়েও বেশ খানিকটা হাঁটা হয়। ৩০ মিনিট জাপানি পদ্ধতিতে হাঁটার সময়ই তো আপনি কদম গণনায় বেশ খানিকটা এগিয়ে যাবেন। সারা দিনের বাকি সাড়ে ২৩ ঘণ্টায় দৈনন্দিন কাজের মধ্যেও বেশ খানিকটা হাঁটার চর্চা রাখতে পারেন। আর অবশ্যই যেকোনো ব্যায়ামের ক্ষেত্রেই খেয়াল রাখুন সঠিক দেহভঙ্গির দিকে। সব মিলিয়ে সুস্থ থাকবেন আপনি।
আরও পড়ুনহাঁটার নিয়মগুলো মানছেন তো?০৪ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ জ র কদম হ ৩০ ম ন ট র জন য আপন ক আপন র উপক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল
মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।”
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”
এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/চন্দন/এস