ঐকমত্যের ভিত্তিতেই ‘জাতীয় সনদ’ হবে
Published: 20th, May 2025 GMT
‘দিনবদলের সনদ’ শীর্ষক ইশতেহারের ভিত্তিতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। তিনি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। যদিও ওই নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক আছে। বিদ্যমান সাংবিধানিক কাঠামো, প্রতিষ্ঠান ও রীতিনীতি তাঁকে স্বৈরাচারে পরিণত করে। ক্ষমতায় এসে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাস, আরও কিছু চরম নিবর্তনমূলক আইন প্রণয়ন ও বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিপূর্ণভাবে করায়ত্ত করার মাধ্যমে গত ১৫ বছরের শাসনকালে শেখ হাসিনা দানবে পরিণত হন। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করে। প্রথমে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এ ছয় কমিশনের তৈরি সুপারিশগুলোকে দুভাগে ভাগ করা যায়। কিছু সুপারিশের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর তেমন কোনো দ্বিমত নেই এবং এগুলো অধ্যাদেশ হিসেবে বা প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। অনেক ক্ষেত্রে কমিশনগুলো অধ্যাদেশের খসড়াও তৈরি করে দিয়েছে। সরকার এখন এগুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে।
অন্য কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান পরিবর্তন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি নেওয়া আবশ্যক। সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা; এক ব্যক্তি কতবার প্রধানমন্ত্রী হবেন; একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা ও দলীয় প্রধান না হওয়া; রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা; রাষ্ট্রপতি নিয়োগ; সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব; সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণ; দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন; সংবিধান সংশোধন—এসব সুদূরপ্রসারী সংস্কারের অন্তর্ভুক্ত। অতি গুরুত্বপূর্ণ এসব বিষয়ে সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা এবং তাদের সম্মতি অর্জনের লক্ষ্যে প্রথম ছয়টি কমিশনের প্রধানদের নিয়ে পরবর্তী সময়ে একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়, যার প্রধান অধ্যাপক ইউনূস নিজে।
৩৩টি রাজনৈতিক দল এবং জোটের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম পর্যায়ের আলোচনা গতকাল শেষ হয়েছে। সৌহার্দ্যপূর্ণ এই আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো কোন কোন সুপারিশের ব্যাপারে একমত, দ্বিমত এবং আংশিকভাবে একমত, তা জানা যায়। একই সঙ্গে জানা যায় তাদের দ্বিমতের কারণ। আনন্দের বিষয় হলো, এসব আলোচনার ভিত্তিতে বেশ কিছু দল প্রস্তাবিত সুপারিশের পক্ষে তাদের মত তাৎক্ষণিকভাবে পরিবর্তন করে এবং অন্য কিছু দল প্রস্তাবিত সুপারিশ সম্পর্কে তাদের দলীয় ফোরামে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে বলে কমিশনকে আশ্বস্ত করে।
রাজনৈতিক দল ও ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের মধ্যে প্রথম দফার আলোচনার মাধ্যমে অধিকাংশ দলের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বিষয়ে নীতিগতভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। যেমন অধিকাংশ দলই সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা, এক ব্যক্তি কতবার প্রধানমন্ত্রী হবেন, দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন, ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রদান, সংসদে নারীর আসন সংখ্যা ১০০—ইত্যাদি বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তবে কী প্রক্রিয়ায় তা অর্জিত হবে, সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, রাজনৈতিক দলগুলো ১০০ আসন নিয়ে সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে একমত হলেও উচ্চকক্ষের নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে হবে কি না, সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। দ্বিমত রয়েছে কী প্রক্রিয়ায় নারীদের জন্য ১০০ আসনে সরাসরি নির্বাচন হবে তা নিয়ে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা এ মাসের মধ্যেই শুরু হবে। সেখানে নীতিগতভাবে একমত হওয়া বিষয়গুলোতে বাস্তবায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে আশা করি। এই ঐকমত্যের ভিত্তিতেই একটি ‘জাতীয় সনদ’ প্রণীত ও স্বাক্ষরিত হবে বলেও আমরা আশাবাদী। সেই সনদ কোন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়িত হবে, তা রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করবে। দ্বিতীয় ধাপে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি আলোচ্য সুপারিশগুলো সম্পর্কে নাগরিক সমাজেরও মতামত নেওয়া হবে।
বদিউল আলম মজুমদার
সদস্য, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ব মত ক ষমত প রথম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে একমত, গঠন প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে একমত সংস্কারের সংলাপে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো। তবে গঠন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। গতকাল বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে দলগুলো সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে বিশেষায়িত সাংবিধানিক কমিটি গঠনেও একমত হয়েছে।
বিএনপি চায়, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে গঠন পদ্ধতি, তা ফিরিয়ে আনা হোক। অর্থাৎ সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। তবে দলটি জানিয়েছে, বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে দূরে রাখতে কোনো উত্তম প্রস্তাব এলে আলোচনা করবে। এ ব্যাপারে বিএনপিরও নিজস্ব প্রস্তাবনা রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামী জানিয়েছে, তারাও চায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হবেন সাবেক প্রধান বিচারপতি। তবে ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতার কারণে রাষ্ট্রপতিকে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে চায় না দলটি। জামায়াত স্থানীয় নির্বাচনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চায়।
এনসিপিও নির্বাচনকালীন সরকার চায়। দলটির প্রস্তাব, সংসদের নিম্নকক্ষে সরকারি ও বিরোধী দলের সমন্বয়ে গঠিত ১১ সদস্যের কমিটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে প্রাপ্ত নাম বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবে। কমিটির আট সদস্য যে নাম সমর্থন করবেন, তিনি হবেন প্রধান উপদেষ্টা। তা সম্ভব না হলে উচ্চকক্ষ ‘র্যাঙ্কড চয়েজ’ পদ্ধতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত নাম থেকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচিত করবে।
গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অষ্টম দিনের সংলাপে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, যতটা অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল, ততটা না হলেও হতাশ নই। সবাই মিলে চেষ্টা করলে চলতি মাসেই জুলাই সনদ সইয়ের পর্যায়ে যেতে পারব।
তত্ত্বাবধায়কের মেয়াদ, আসনের সীমানায় একমত
সংলাপের পর আলী রীয়াজ বলেছেন, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে সাংবিধানিক বিশেষায়িত কমিটি গঠন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে ঐকমত্য হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন, ক্ষমতা ও মেয়াদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে ১২০ দিন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তত্ত্বাবধায়কের মেয়াদ ৯০ দিনে সীমাবদ্ধ রাখতে সবাই মোটামুটি একমত। এ সময়ের মধ্যে যদি দৈব দুর্বিপাকে নির্বাচন না হয়, সে ক্ষেত্রে ৩০ দিন বাড়তি রাখা যেতে পারে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছিল, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে গঠন করা হবে স্বতন্ত্র কমিশন। যদিও সংবিধান অনুযায়ী এ দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। স্বতন্ত্র কমিশন গঠনে আপত্তি ছিল বিএনপির। তবে দলটি সাংবিধানিক কমিটি গঠনে রাজি হয়েছে। একমত হয়েছে জামায়াত, এনসিপিসহ অন্য দলগুলোও।
আলী রীয়াজ বলেন, আদমশুমারি বা প্রতি ১০ বছর অন্তর সীমানা নির্ধারণে বিশেষায়িত কমিটি গঠনে সংবিধানের ১১৯(১) অনুচ্ছেদের ‘ঘ’-এর শেষে আইনের বিধান যোগ করা হবে। সীমানা নির্ধারণ আইনে ২০২৫ সালে যে সংশোধন এসেছে, তাতে কমিটির বিধান যুক্ত করতে ৮(৩) ধারা সংশোধনে সরকার ও ইসিকে জানানো হবে।
সংলাপে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী নির্বাচনে ইসিকে সহায়তায় যথাযথ দক্ষতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়ে বিশেষায়িত কমিটি গঠন করা হবে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সীমানা নির্ধারণে কমিটি গঠনের প্রস্তাব তিনিই দিয়েছেন। তাতে সবাই একমত হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন বলেছেন, তাদের দলের প্রস্তাব ছিল স্বতন্ত্র কমিশন গঠন। কিন্তু ঐকমত্যের স্বার্থে কমিটি গঠনের প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেমন হবে
১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকার সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে প্রধান উপদেষ্টা করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধান করে। এ জন্য সংবিধান সংশোধনে ৫৮(ক) অনুচ্ছেদ যোগ করা হয়।
২০১০ সালে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। যদিও আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য পরবর্তী দুইবার তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা থাকতে পারবে। তবে বিচারপতিদের দূরে রাখতে হবে এ ব্যবস্থা থেকে। ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাই বিলোপ করে দেয়। গত বছরের ডিসেম্বরে হাইকোর্ট এই সংশোধনী বাতিল করে। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফেরাতে ত্রয়োদশ সংশোধনী পুনর্বহালে আপিল বিভাগে রিভিউ করেছে বিএনপি ও জামায়াত। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আশা করছেন আদালতের রায়ে ফিরবে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা।
২০০৬ সালে সর্বশেষ প্রধান বিচারপতি কে এম হাসানকে বিএনপিপন্থি আখ্যা দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিরোধিতায় আন্দোলন করেছিল আওয়ামী লীগ। এতে কে এম হাসান সরে দাঁড়ালে, পরবর্তী সময়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ নিজেই প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন।
জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, তাদের দল চায় সাবেক প্রধান বিচারপতিদের একজন হবেন প্রধান উপদেষ্টা। যদি সাবেক প্রধান বিচারপতিদের মধ্যে গ্রহণযোগ্য কাউকে না পাওয়া যায়, তাহলে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টা পদে গ্রহণযোগ্য কাউকে নিয়োগ করবেন। তবে ২০০৬ সালের অভিজ্ঞতায় রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে চান না তারা। ডা. তাহের বলেন, জামায়াতের দাবি, স্থানীয় সরকার নির্বাচনও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে হতে হবে।
এ প্রস্তাব নাকচ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক পাঁচ বছর হতে হবে। স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিচার বিভাগকে তত্ত্বাবধায়ক থেকে দূরে রাখার বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘জুডিশিয়ারিকে বাদ রেখে আরও দু-একটি পথ যদি রাখা যায়, যাতে সবার গ্রহণযোগ্যতায় প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ হয়, আলোচনা হতে পারে।’ তিনি জানান, বিএনপিরও প্রস্তাব রয়েছে। তবে এক্ষুণি প্রকাশ করা হবে না। আশা করছেন, ত্রয়োদশ সংশোধনীর রায় জনগণের পক্ষে আসবে। অতীত অভিজ্ঞায় রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়কে না রাখার প্রস্তাবের বিষয়ে সালাহউদ্দিন বলছেন, সর্বশেষ ব্যবস্থা হিসেবে রাষ্ট্রপতির কথা বলা হয়েছে। এটা শুধুই রাখার জন্য রাখা।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেছেন, যখনই ক্ষমতা হস্তান্তরের সময় হয়, তখনই দেশে সংঘাত হয়। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে এনসিপি নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছে।
রূপরেখা তুলে ধরে জাবেদ রাসিন বলেন, তত্ত্বাবধায়কে প্রধান বিচারপতিকে রেখে বিচারালয়ের রাজনীতিকরণ করা হয়েছিল। তাই নিম্নকক্ষের সর্বদলীয় কমিটির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বাছাইয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। তা ব্যর্থ হলে ভোটের অনুপাতে (পিআর) গঠিত উচ্চকক্ষ প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন করবে।
বিএনপির অবস্থা জানাল
সামাজিক এবং সংবাদমাধ্যমে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করা হচ্ছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেছেন, বিএনপিই সংস্কারে সবচেয়ে সহযোগিতা করছে। অথচ বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী হিসেবে দেখানোর একটি চেষ্টা চলছে। পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেছেন, ৯০ শতাংশের বেশি সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপি একমত। যদি শতভাগ প্রস্তাবে একমত হতে জোর করা হয়, তাহলে আলোচনা কীসের জন্য। এই দলই প্রস্তাব করেছে, কেউ যাতে স্বৈরাচার না হতে পারে, সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ১০ বছর।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কশিনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. আইয়ুব মিয়া।