শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) বিশ্ব মৌমাছি দিবস ২০২৫ উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (২০ মে) ‘খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার লক্ষ্যে মৌমাছির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করি’ প্রতিপাদ্যে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে বাকৃবির কৃষি গবেষক, শিক্ষক, বিভিন্ন মৌচাষিসহ পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় শেকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
ইবিতে পরীক্ষা দিতে এসে ছাত্রলীগ নেতা আটক
গোবিপ্রবিতে প্রথমবারের মতো উপাচার্য সম্মাননা পেলেন শিক্ষার্থীরা
কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, “খাদ্য উৎপাদনে মৌমাছির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের পরাগায়নের মাধ্যমেই ফল ও শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। তাই মৌমাছির সুরক্ষায় আমাদের টেকসই পরিবেশ গড়ে তোলা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “বর্তমানে জলবায়ুর পরিবর্তনে মৌমাছি খাদ্য সংকটে ভুগছে। অনেক গাছে নির্দিষ্ট সময় ফুল না ফোটায় তাদের জীবনচক্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সমাধান হিসেবে ফুলবহুল গাছ যেমন—লিচু, আম, কলা, পেঁপে, সাজনা, কনকচূড়া ইত্যাদি রোপণ করতে হবে। জুন মাস ফলজ গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময়।”
তিনি আরও বলেন, “থাইয়োমিথাক্সন জাতীয় কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার মৌমাছির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই দিনে নয়, বরং সন্ধ্যায় কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। দেশে মানসম্পন্ন রাণী মৌমাছির ঘাটতির কারণে মৌচাষে বিঘ্ন ঘটছে। এ সমস্যা সমাধানে বিদেশ থেকে উন্নত জাতের রাণী মৌমাছি আমদানির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।”
তিনি মৌপণ্যের বাজারজাতকরণে প্রশাসনিক জটিলতা দূর করে মৌচাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, “এই দিবসের মাধ্যমে মৌচাষ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো গেলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাও হবে আরো সমৃদ্ধ। খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশ রক্ষায় মৌচাষ এখন আর শুধু বিকল্প পেশা নয়, এটি ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য কৌশল।”
ঢাকা/মামুন/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ দ বস ম হ ম মদ
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক