Samakal:
2025-11-03@10:46:30 GMT

নুয়ে পড়া ধান নিয়ে বিপদে কৃষক

Published: 20th, May 2025 GMT

নুয়ে পড়া ধান নিয়ে বিপদে কৃষক

জ্যৈষ্ঠ মাসে ধান পাকতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও পাকা ধান কাটা শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় কৃষকদের মুখে হাসি থাকার কথা। এর বদলে শ্রমে-ঘামে ফলানো সোনার ধান নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তারা। টানা বৃষ্টির কারণে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের চলনবিল অঞ্চলের বেশির ভাগ জমিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নিমজ্জিত হয়েছে বেশ কিছু ক্ষেত। তিন-চার দিনের মধ্যে না কাটলে এ ধান থেকে কিছুই পাওয়া যাবে না বলছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, ১৫ থেকে ২০ দিন আগেও চলনবিলে প্রতি বিঘা ধান কাটতে চার থেকে পাঁচজন শ্রমিক হলেই চলত। শ্রমিকরা দূরত্বভেদে প্রতি বিঘায় (মণপ্রতি ৫ থেকে ৮ কেজি ধান) ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন। বৃষ্টিতে ধান নুয়ে পড়ায় ১০ জন শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন। তাদের পারিশ্রমিকও দিতে হচ্ছে দ্বিগুণ। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
তাড়াশের কুন্দইল গ্রামের কৃষক আবু হানিফ ১৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে পাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন। এখন বিপত্তি বেধেছে বৃষ্টিতে। গত বুধবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দিনে ও রাতে থেমে থেমে ঝড়, বাতাস, বৃষ্টিতে পাকা ও আধপাকা ধান নুয়ে পড়েছে। জমিতে হারভেস্টার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে কৃষি শ্রমিকের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। সুযোগ পেয়ে শ্রমিকরাও চড়া মজুরি চাইছেন। 
আবু হানিফ বলেন, নুয়ে পড়া ধান কাটতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শ্রমিক প্রয়োজন হয়। কষ্টও অনেক। এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিকরা ১১-১২ কেজি ধান পারিশ্রমিক চাচ্ছেন। অনেক দরদাম করে ১১ কেজিতে রাজি করিয়েছি। ১৬ বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিককে ৪ বিঘার ধান দিতে হচ্ছে। 
একই অবস্থা মাকড়শোন এলাকার কৃষক আলেপ আলীর। প্রতি মণে কৃষককে ১০ কেজি করে ধান দিতে হচ্ছে তাঁকে। শুধু আবু হানিফ বা আলেপ আলীর না, চলনবিল এলাকার বেশির ভাগ কৃষককে অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। 
রুহাই এলাকার কৃষক আয়নাল হোসেন জানান, সরিষা তোলার পর বোরো আবাদ করেছেন। নাবী জাতের ধান হওয়ায় ধান পাকতেও দেরি হচ্ছে। এর মধ্যে ঝড়, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। এতে জমির ধান নুয়ে পড়ছে। জমিতে বৃষ্টির পানি জমে যাচ্ছে। আছে কাদাও। এ সুযোগে ধান কাটা শ্রমিকরা পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা দূরত্বভেদে প্রতি মণে ৭ থেকে ১১-১২ কেজির কমে ধান কাটতে চাচ্ছেন না।
বিপদ দেখে শ্রমিকরা মোট উৎপাদনের কমপক্ষে চার ভাগের এক ভাগ ধান নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান ধাপতেঁতুলিয়া এলাকার কৃষক ফরহাদ আলী। আক্ষেপ করে বলেন, ১২ বিঘা জমির আংশিক ধান নুয়ে পড়েছে। এসব ধান কাটতে ৬০ থেকে ৬৫ মণ ধান শ্রমিকদের পারিশ্রমিক বাবদ দিতে হবে। তিন-চার সপ্তাহ ঝড়-বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পারিশ্রমিক আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বর্তমানে ধানের বাজারদর ভালো। তাই শ্রমিকের পারিশ্রমিক বাবদ একটু বেশি খরচ হলেও কৃষক পুষিয়ে নিতে পারবেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ধ নক ষ ত এল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

সিরাজগঞ্জের গ্রামটি শত শত পাখিতে মুখর

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে উলিপুর গ্রাম। চলনবিলের শান্ত এ গ্রামে বহু শতাব্দী প্রাচীন শত বিঘা আয়তনের একটি দিঘির চারপাশে গড়ে উঠেছে মানুষের ঘরবসতি। এখানকার প্রাচীন একটি বটগাছসহ বিভিন্ন গাছে বাসা করেছে শত শত শামুকখোল পাখি। পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে গ্রামটি।

আলো ফুটতে না ফুটতেই অবারিত চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় খাবারের খোঁজে যেতে থাকে পাখির দল। তাদের এই ওড়াউড়ি মুগ্ধ করে আশপাশের বাসিন্দাদের।

গতকাল শনিবার পাখিদের গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, শামুকখোল পাখিদের কোনোটি বটগাছের কচি পাতায় ঠোকর দিচ্ছে, আবার কোনোটি ছানাদের আগলে রাখছে। এক ডাল থেকে আরেক ডালে ওড়াউড়ি করছে।

উলিপুর গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আরশেদ আলী বলেন, প্রায় এক যুগ আগে শামুকখোল পাখিরা এখানে এসে গাছে বাসা বাঁধে। এরপর প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে বাচ্চা ফোটায়। ফলে তাদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকায় গ্রামবাসী সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা কেউ পাখিদের বিরক্ত করবেন না। অন্যরা যেন না করেন, সেটাও নিশ্চিত করবেন। দর্শনার্থীরা এলে তাঁরা নিজেরাই মানুষকে সচেতন করেন।

মাহফুজা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, আগে শুধু তাঁদের আত্মীয়রা এ গ্রামে বেড়াতে আসতেন। এখন পাখি দেখতে অনেক মানুষ আসেন। পাখিদের বিশ্রামের জন্য গ্রামের মানুষ দিঘির পানিতে বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে গড়ে তুলেছেন আবাস। মাঝেমধ্যে খাবারও দেওয়া হয়।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘স্বাধীন জীবন’–এর পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, এ মৌসুমে তিনি একাধিকবার পাখি দেখতে উলিপুর গ্রামে গেছেন। শামুকখোলের দুটি প্রজাতির মধ্যে একটি এশীয়, আরেকটি আফ্রিকান। এই গ্রামে আসা শামুকখোল পাখিগুলো এশীয় প্রজাতির। এই শামুকখোল পাখি সংরক্ষিত প্রাণীর তালিকায় আছে।

শামুকখোল পাখিদের যাতে কেউ বিরক্ত না করেন, সেটা নিশ্চিত করেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার উলিপুর গ্রামের বাসিন্দারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিরাজগঞ্জের গ্রামটি শত শত পাখিতে মুখর