পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে সুচিত্রা সেন ছাত্রী নিবাসের নাম এখন ‘জুলাই–৩৬ ছাত্রীনিবাস’
Published: 21st, May 2025 GMT
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ‘সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাস’–এর নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই–৩৬ ছাত্রীনিবাস’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে দুটি হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল মিয়া নাম পরিবর্তন করা তিনটি ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসের নতুন নামফলক উদ্বোধন করেন। এ সময় কলেজের উপাধ্যক্ষ আবদুল খালেক, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দুটি নিবাসের মধ্যে শেখ রাসেল ছাত্রাবাসের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিজয়-২৪’ ছাত্রবাস এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাসের নাম দেওয়া হয়েছে আয়শা সিদ্দিকা (রা.
কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি পাবনায়। সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর ভক্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও বিষয়টি নিয়ে অনেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাবেক সভাপতি ও আমেরিকা প্রবাসী সাংস্কৃতিক সংগঠন গোপাল সান্যাল তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের “সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাস”–এর নাম পাল্টে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাবনার সংস্কৃতিপ্রেমী জনতা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
জেলা শহরের সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক সংগঠক জাকির হোসেন বলেন, ‘সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা। এখনো বাঙালী নারীরা তাঁকে অনুকরণ, অনুসরণ করেন। বিশ্বব্যাপী তাঁর বহু ভক্ত–অনুরাগী রয়েছেন। তাঁকে নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই। তাঁর নামটি পরিবর্তনের তীব্র নিন্দা জানাই।’
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু বলেন, ‘সুচিত্রা সেন কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তিনি রাজনৈতিক কোনো ফায়দা নেননি। তিনি আমাদের অবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসার মানুষ। তাঁর নাম মুছে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে ছাত্রীনিবাসের নামটি পুনর্বহালের দাবি করছি।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল মিয়া বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব–পরবর্তী প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের আহ্বান, জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সবাই সততা, দেশপ্রেম ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে আত্মনিয়োগ করবে।’
পাবনা জেলা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনে সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি। এ বাড়িতে তিনি মা–বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে শৈশব ও কৈশোর কাটিয়েছেন। ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে কলকাতায় চলে যান। ১৯৬০ সালে বাবা করুনাময় দাশগুপ্ত বাড়িটি জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দিয়ে কলকাতায় যান। এরপর বাড়িটি দখল হয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে পাবনাবাসী বাড়িটি দখলমুক্ত করতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০১৪ সালে বাড়িটি দখলমুক্ত হয়। বর্তমানে বাড়িটিতে পাবনা জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনার এডওয়ার্ড কলেজে সুচিত্রা সেন ছাত্রী নিবাসের নাম এখন ‘জুলাই–৩৬ ছাত্রীনিবাস’
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ‘সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাস’–এর নাম পরিবর্তন করে ‘জুলাই–৩৬ ছাত্রীনিবাস’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের নামে দুটি হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল মিয়া নাম পরিবর্তন করা তিনটি ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসের নতুন নামফলক উদ্বোধন করেন। এ সময় কলেজের উপাধ্যক্ষ আবদুল খালেক, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক লুৎফর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধান ও শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্য দুটি নিবাসের মধ্যে শেখ রাসেল ছাত্রাবাসের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিজয়-২৪’ ছাত্রবাস এবং বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাসের নাম দেওয়া হয়েছে আয়শা সিদ্দিকা (রা.) ছাত্রীনিবাস।
কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি পাবনায়। সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাসের নাম পরিবর্তন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর ভক্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও বিষয়টি নিয়ে অনেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
পাবনা ড্রামা সার্কেলের সাবেক সভাপতি ও আমেরিকা প্রবাসী সাংস্কৃতিক সংগঠন গোপাল সান্যাল তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের “সুচিত্রা সেন ছাত্রীনিবাস”–এর নাম পাল্টে দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাবনার সংস্কৃতিপ্রেমী জনতা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
জেলা শহরের সুচিত্রা সেন চলচ্চিত্র সংসদের সভাপতি ও সাংস্কৃতিক সংগঠক জাকির হোসেন বলেন, ‘সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা। এখনো বাঙালী নারীরা তাঁকে অনুকরণ, অনুসরণ করেন। বিশ্বব্যাপী তাঁর বহু ভক্ত–অনুরাগী রয়েছেন। তাঁকে নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই। তাঁর নামটি পরিবর্তনের তীব্র নিন্দা জানাই।’
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু বলেন, ‘সুচিত্রা সেন কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তিনি রাজনৈতিক কোনো ফায়দা নেননি। তিনি আমাদের অবেগ, অনুভূতি, ভালোবাসার মানুষ। তাঁর নাম মুছে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সঙ্গে ছাত্রীনিবাসের নামটি পুনর্বহালের দাবি করছি।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল আউয়াল মিয়া বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব–পরবর্তী প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং একাডেমিক কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে ছাত্র ও ছাত্রীনিবাসগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের আহ্বান, জুলাই বিপ্লবের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সবাই সততা, দেশপ্রেম ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে আত্মনিয়োগ করবে।’
পাবনা জেলা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনে সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি। এ বাড়িতে তিনি মা–বাবা ও ভাইবোনের সঙ্গে শৈশব ও কৈশোর কাটিয়েছেন। ১৯৪৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ের পর তিনি স্বামীর সঙ্গে কলকাতায় চলে যান। ১৯৬০ সালে বাবা করুনাময় দাশগুপ্ত বাড়িটি জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দিয়ে কলকাতায় যান। এরপর বাড়িটি দখল হয়ে যায়। ২০০৯ সাল থেকে পাবনাবাসী বাড়িটি দখলমুক্ত করতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০১৪ সালে বাড়িটি দখলমুক্ত হয়। বর্তমানে বাড়িটিতে পাবনা জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা করা হয়েছে।