গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড ‘যুদ্ধাপরাধের কাছাকাছি’ বলে মনে করেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওলমার্ট
Published: 22nd, May 2025 GMT
ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট গাজায় তাঁর দেশের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যার অভিযোগ তুলেছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধ পরিচালনার পদ্ধতি নিয়ে তীব্র সমালোচনার প্রেক্ষাপটে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
মঙ্গলবার বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বলেন, ‘ইসরায়েল গাজায় যা করছে, তা যুদ্ধাপরাধের খুব কাছাকাছি।’ ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘এই যুদ্ধের স্পষ্ট চিত্রটা এমন যে হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন, পাশাপাশি বহু ইসরায়েলি সেনাও মারা যাচ্ছেন। সব দিক থেকেই এটা জঘন্য ও ঘৃণিত।’
তিনি বলেন, ‘এই যুদ্ধের স্পষ্ট কোনো লক্ষ্য নেই এবং এটি এমন কোনো অর্জনের সম্ভাবনাও দেখাচ্ছে না, যা জিম্মিদের জীবন রক্ষা করতে পারে.
ওলমার্টের মন্তব্যে ইসরায়েলের একাধিক রাজনীতিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ওলমার্টের লজ্জা পাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ কিশ।
আরও পড়ুনইসরায়েলি পণ্য বর্জন করতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের বৃহৎ খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান কো-অপ২০ মে ২০২৫সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ইয়োয়াভ কিশ লিখেছেন, ‘যখন আইডিএফের [ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সেনাবাহিনী] সেনারা আমাদের ধ্বংস করে দিতে চাওয়া নৃশংস সন্ত্রাসের সঙ্গে জীবন বাজি রেখে লড়ছেন, তখন তিনি [ওলমার্ট] উসকানি দিচ্ছেন এবং তাঁদের পিঠে ছুরি মারছেন।’
সামাজিক সমতা বিষয়ক মন্ত্রী মাই গোলান সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাবে লিখেছেন, ‘এই যুদ্ধের একমাত্র অপরাধ হলো আপনি (আইডিএফের) যোদ্ধাদের মুখে থুতু ছিটাচ্ছে। অথচ তাঁরা আধুনিক যুগের নাৎসি শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। আর হ্যাঁ, গাজায় নিরীহ মানুষ আছে, যার সঠিক সংখ্যা ৫৮।’ ৫৮ দ্বারা তিনি এখনো গাজায় থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের কথা বুঝিয়েছেন।
ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্টউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ওলম র ট মন ত র ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
পা পিছলে ট্রেনের নিচে সবজি বিক্রেতা, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি। পাশাপাশি দুটি ট্রেন তুলনামূলক কম গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি ট্রেনের সামনে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। ট্রেনটি চলে যায় তাঁর শরীরের ওপর দিয়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম জালাল উদ্দিন ওরফে জালু (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চরআলগী ইউনিয়নের নিধনিয়া চর ব্যাপারী পাড়ার বাসিন্দা ও পেশায় সবজি বিক্রেতা ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।
দুর্ঘটনার পর জালাল উদ্দিনকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিজন মালাকার।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, জালাল উদ্দিন এলাকায় কৃষিকাজ করেন এবং সেখান থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্রি করেন। তিনি প্রায়ই ট্রেনে চেপে শ্রীপুর যান এবং রাতের ট্রেনে বাড়ি ফেরেন। গতকাল দুপুরে শাকসবজি নিয়ে ট্রেনে শ্রীপুর যান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ধরতে রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি দৌড় দেন। এ সময় ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল। সেটি ধরতে গিয়ে পাশের রেললাইনে থাকা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেসের ট্রেনের নিচে পড়ে যান জালাল উদ্দিন।
নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী ও গফরগাঁও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্যাপারী জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে জালাল উদ্দিনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় তাঁর পরিবার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারাল।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক।