Samakal:
2025-09-17@23:21:38 GMT

কোরবানির প্রস্তুতি 

Published: 23rd, May 2025 GMT

কোরবানির প্রস্তুতি 

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আত্মত্যাগ, আত্মোৎসর্গ, সম্প্রীতি, সহমর্মিতা, সহানুভূতি; সর্বোপরি মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের মহিমায় চিরভাস্বর কোরবানি। এ ইবাদত শুধু উম্মতে মুহাম্মদির মধ্যে নয়; বরং পূর্ববর্তী সব উম্মতের মধ্যেও জারি ছিল। 

কোরবানি শব্দটি ‘কুরবুন’ মূল ধাতু থেকে এসেছে। অর্থ হলো, নৈকট্য লাভ, সান্নিধ্য অর্জন, প্রিয় বস্তুকে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য উৎসর্গ করা।

শরিয়তের পরিভাষায়, নির্দিষ্ট জন্তুকে একমাত্র আল্লাহপাকের নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত নিয়মে মহান আল্লাহর নামে জবেহ করাই হলো কোরবানি। সুরা আল-মায়েদায় ২৭ থেকে ৩১ আয়াত পর্যন্ত হজরত আদম (আ.

)-এর দুই সন্তানের কোরবানির কথা বিবৃত হয়েছে। হজরত আদম (আ.)-এর পর প্রতিটি উম্মত বা জাতির মধ্যেই এই বরকতময় আমল বিদ্যমান ছিল। পবিত্র কোরআনের সুরা আল-হজের ৩৪ আয়াতে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, আর প্রত্যেক উম্মতের জন্য আমি কোরবানি নির্ধারণ করেছি, যেন তারা আল্লাহর দেওয়া চতুষ্পদ পশুর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। 

সকল উম্মতের কোরবানির নিয়ম এক রকম ছিল না। শরিয়তে যে পদ্ধতিতে কোরবানি করা হয়, তাও আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে নির্দেশিত এবং তা মিল্লাতে ইবরাহিমির অংশ। সুরা কাউসারের ২ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা কোরবানি আবশ্যক হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে এরশাদ করেন, ‘তুমি তোমার রবের জন্য নামাজ পড়ো ও কোরবানি করো।’ রাসুলে কারিম (সা.) মাদানি জীবনের প্রতিবছর কোরবানি করেছেন। কখনও কোরবানি পরিত্যাগ করেননি, বরং কোরবানি পরিত্যাগকারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন।

হাদিসে বর্ণিত, রাসুলে কারিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে’ (ইবনে মাজাহ)।

যে পশুটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দেব, তা যেন নিখুঁত হয়। কোনোভাবেই দুর্বল ও ত্রুটিযুক্ত, ল্যাংড়া, কানকাটা, শিংভাঙা এবং অন্ধ পশু কোরবানি করা বৈধ নয়।
হজরত আনাস (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এক ঈদে ধূসর রঙের শিংওয়ালা দুটি দুম্বা কোরবানি করলেন। তিনি সেগুলোকে নিজ হাতে জবাই করলেন এবং ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবর’ বলে জবাই দিলেন (বুখারি ও মুসলিম)। এ ছাড়া কোরবানির পশু খুব ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করা উচিত। ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে জবাই করে পশুকে কষ্ট দেওয়া ঠিক নয়। 

জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত এই তিন দিন যে ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ তোলা রূপার যে কোনো একটির সমপরিমাণ সম্পত্তির মালিক থাকবে, তার জন্য গরু, মহিষ, উট– এগুলোর একটা অংশ অথবা ছাগল, দুম্বা এসব পশুর একটি কোরবানি করা ওয়াজিব। গোশত খাওয়ার নিয়তে কিংবা মানুষ খারাপ বলবে, এটা মনে করে কোরবানি দেওয়া হলে তা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।

সুরা আল-হজের ৩৭ আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে কখনও কোরবানির গোশত বা রক্ত পৌঁছায় না। বরং তাঁর কাছে তোমাদের তাকওয়াটুকুই পৌঁছায়।’

একজন কোরবানিদাতা এ ঘোষণাই প্রদান করেন– ‘নিশ্চয় আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মৃত্যু সব কিছুই সারাজাহানের মালিক আল্লাহতায়ালার জন্য’ (সুরা আনআম, আয়াত: ১৬২)

ইব্রাহিম (আ.) ও স্বীয় পুত্র ইসমাইল (আ.) যে অবিস্মরণীয় ত্যাগ, আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও আনুগত্যের চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, সেই স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় ও পালনীয় রাখতে কোরবানির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আবহমানকাল থেকে চলে আসছে। শুধু পশুর গলায় ছুরি চালানোয় কোনো পুণ্য নেই। বরং হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা, দাম্ভিকতা, অবৈধ অর্থলিপ্সা, পরচর্চা-পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতাসহ যাবতীয় মানবীয় পশুত্বের গলায় ছুরি চালাতে পারলেই কোরবানি সার্থকতা বয়ে আনবে।

ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক রব ন ক রব ন র ও ক রব ন র ক রব ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের ক্ষুদে ফুটবলার জিসানের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্থানীয়রা ফুটবলে জিসানের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ বলে ডাকেন। 

তারেক রহমানের পক্ষে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জিসানের গ্রামের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি জিসানের বাবা ও এলাকাবাসীকে এ খবরটি জানিয়ে আসেন।

উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা ডুলিকান্দা গ্রামের অটোরিকশাচালক জজ মিয়ার ছেলে জিসান। মাত্র ১০ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান ফুটবলারের অসাধারণ দক্ষতার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। স্থানীয় চর ঝাকালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র সে। 

কখনও এক পায়ে, কখনও দু’পায়ে, কখনও পিঠে ফুটবল রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কসরত করে জিসান। দেখে মনে হবে, ফুটবল যেনো তার কথা শুনছে। এসব কসরতের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

অনলাইনে জিসানের ফুটবল নৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হন তারেক রহমান। তিনি জিসানের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার পক্ষে গতকাল সোমবার বিকেলে জিসানের বাড়িতে যান বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। 

জিসানকে উপহার হিসেবে বুট, জার্সি ও ফুটবলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেন তিনি। এছাড়া জিসানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।

জিসানের ফুটবল খেলা নিজ চোখে দেখে মুগ্ধ আমিনুল হক বলেন, “জিসান ফুটবলে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট। তারেক রহমান জিসানের প্রশিক্ষণ, লেখাপড়া ও ভবিষ্যতের সকল দায়িত্ব নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিমাসে জিসানের লেখাপড়া, ফুটবল প্রশিক্ষণ ও পরিবারের ব্যয়ভারের জন্য টাকা পাঠানো হবে।”

জিসান জানায়, মোবাইলে ম্যারাডোনা, মেসি ও রোনালদোর খেলা দেখে নিজেই ফুটবলের নানা কৌশল শিখেছে। নিজ চেষ্টায় সে এসব রপ্ত করেছে।

জিসানের বাবা জজ মিয়া বলেন, “আমি বিশ্বাস করতাম, একদিন না একদিন কেউ না কেউ আমার ছেলের পাশে দাঁড়াবে। আজ আমার সেই বিশ্বাস পূর্ণ হয়েছে।”

ঢাকা/রুমন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর  করতে ডায়েটে যে পরিবর্তন আনতে পারেন
  • অনুষ্ঠান করে স্ত্রীকে বিয়ে দিলেন স্বামী
  • ‘ক্ষুদে ম্যারাডোনা’ জিসানের দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান