দীর্ঘ ইনজুরির ছায়া কাটিয়ে অবশেষে মাঠে নামলেন ব্রাজিলীয় ফুটবল মহাতারকা নেইমার জুনিয়র। তবে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচটি তার জন্য কোনো উৎসবের উপলক্ষ হয়ে ওঠেনি। কোপা দো ব্রাজিলের তৃতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় লেগে সিআরবির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে সান্তোস। আর ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানেও সৌভাগ্য সঙ্গ দেয়নি নেইমারদের—হার মানতে হয় ৫–৪ ব্যবধানে।

বেঞ্চে থেকে শুরু করা এই ম্যাচে ৬৬তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন নেইমার। প্রথম টাইব্রেকিং কিকে বল জালে পাঠালেও বাকি সতীর্থদের ব্যর্থতায় সান্তোসের বিদায় নিশ্চিত হয়। ম্যাচ শেষে হতাশার সুরে তিনি বলেন, “আমি জানি আমার নামাটা কিছুটা পরিবর্তন আনতে পারে। তবে দলীয় প্রচেষ্টাই শেষ কথা। এখানে আমরা সবাই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।”

নেইমারের সান্তোসে ফেরাটা এখন পর্যন্ত খুব একটা উজ্জ্বল হয়নি। চোট-আঘাতের কারণে তিনি মাঠে সময় দিতে পেরেছেন সীমিত। সব মিলিয়ে মাত্র ১০টি ম্যাচে অংশ নিয়ে করেছেন ৩ গোল ও সমান সংখ্যক অ্যাসিস্ট। সান্তোসও লিগ টেবিলের নীচের দিকে অবস্থান করছে, অবনমনের শঙ্কা এখনও কাটেনি।

আরো পড়ুন:

প্রো লিগে ২৪ ও ক্যারিয়ারের ৯৩৫তম গোল রোনালদোর

১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান, ইউরোপা লিগে টটেনহ্যাম চ্যাম্পিয়ন

এদিকে ক্লাবটির সঙ্গে নেইমারের বর্তমান চুক্তি শেষ হচ্ছে আগামী ৩০ জুন। চুক্তি নবায়ন নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, “এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।” ক্লাব কর্তৃপক্ষ আগ্রহ দেখালেও নেইমারের পক্ষ থেকে আসেনি কোনো স্পষ্ট সংকেত।

মাঠের বাইরে নেইমারকে ঘিরে ছিল তীব্র ভক্ত উন্মাদনা। হোটেল ছাড়ার সময় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ভক্তরা এগিয়ে আসে তার দিকে। তবে সেই মুহূর্তেও শান্তভাবে হাত নাড়িয়ে তাদের প্রতি ভালোবাসা জানাতে ভোলেননি তিনি।

চোট-ফেরা, প্রত্যাবর্তনের চাপ, দলের ব্যর্থতা এবং নিজ ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে নেইমার এক অনিশ্চিত অধ্যায়ে পা রেখেছেন। আগামী দিনে তার সিদ্ধান্ত কেমন হবে, সেটাই এখন কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত