স্বাধীন নিরপেক্ষ বিচারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে
Published: 24th, May 2025 GMT
একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং কার্যকর বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বিচার বিভাগ পরিচালনার জন্য একটি স্বতন্ত্র ‘বিচার বিভাগীয় সচিবালয়’ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা পুনরায় জোরালোভাবে উপস্থাপন করা হয়।
শুক্রবার বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম বিভাগের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো.
আলোচনায় বক্তারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন। বিচারকার্য পরিচালনায় অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা এবং অপর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দকে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এ প্রেক্ষাপটে বক্তারা জেলা আদালতের বিচারকদের প্রশাসনিক নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের আওতায় আনার ওপর জোর দেন।
সভায় ‘মাসদার হোসেন মামলার’ ৬ নম্বর নির্দেশনার আলোকে বিচারকদের জন্য একটি পৃথক ও স্বাধীন পে-কমিশন গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। বক্তারা বলেন, বিচারকগণ সংবিধান রক্ষার গুরু দায়িত্ব পালন করেন বিধায় তাদের আর্থিক সুবিধা ও সম্মানি সেই দায়িত্বের গুরুত্ব ও মর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত। এই লক্ষ্যে বিদ্যমান বেতন কাঠামোর অতিরিক্ত ৩০% হারে বিচারিক ভাতা বকেয়াসহ প্রদানের এবং একটি নতুন পে-কমিশন গঠন করে শতভাগ বিচারিক ভাতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জেলা আদালতের বিচারকদের প্রতি যে বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়, তা নিরসনের প্রয়োজনে জ্যেষ্ঠতা, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে জেলা আদালতের বিচারকদের উচ্চ আদালতে ন্যায্য প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার জন্য সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান।
বিচার বিভাগের আধুনিকায়ন ও স্বাধীনতা রক্ষায় অ্যাসোসিয়েশনকে একটি সক্রিয় ও কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গগে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। এ প্রেক্ষাপটে বক্তারা ‘ইয়ং জাজেস ফোরাম’-এর সাহসী ও গতিশীল ভূমিকাকে আন্তরিকভাবে স্বীকৃতি দেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাশা জানানো হয় যে, বর্তমান অর্ন্তবতীকালীন সরকার বিচার বিভাগের কাঠামোগত ও প্রশাসনিক সংস্কারে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। বক্তারা বলেন, বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা ছাড়া রাষ্ট্রের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সে প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতির ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ দ্রæত বাস্তবায়ন এবং একটি পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব চ র ব যবস থ ব চ রকদ র ক র যকর বক ত র ব চ রক
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগ, বিয়ের দাবি তরুণীর
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন- এমন অভিযোগ করে এক তরুণী বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে গত রবিবার (৬ জুলাই) রাত থেকে অবস্থান নেন তিনি। অভিযুক্ত ফরিদ পালোয়ান (২৫) ধর্ষণের মামলা দায়েরের পরই পালিয়ে গেছেন ইতালিতে।
ভুক্তভোগী তরুণী কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাসিন্দা। অভিযুক্ত ফরিদ পালোয়ান কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের হরিদেবপুর গ্রামের মৃত মিয়ার উদ্দিন পালোয়ানের ছেলে।
ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, “আমি ন্যায়বিচার চাই। বিয়ে করতে চাইলে কাবিনসহ বৈধভাবে বিয়ে করতে হবে। আমি কোনো অন্যায় করিনি। আমি আইনের মাধ্যমে সুবিচার চাই। ফরিদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে আশ্রয় নিলেও জীবনের শঙ্কায় রয়েছি।”
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, প্রায় দেড় বছর ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো দেখা হয় তাদের। ফরিদের ডাকে সাড়া দিয়ে বিকেলে তিনি ঘোড়াশালে গেলে ফরিদ তাকে মোটরসাইকেলে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে অবশেষে রাতের বেলায় হরিদেবপুর গ্রামের একটি নির্জন বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ফরিদ। এরপর ৯ মার্চ ঢাকার মালিবাগের একটি বাসায় নিয়ে গিয়েও একইভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় সে।
তরুণী অভিযোগ করেন, ধর্ষণের পর বিয়ের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি ফরিদ। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে ফরিদ ওষুধ আনার কথা বলে তাকে যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে ফেলে উধাও হয়ে যায়।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তিনি ফরিদের গ্রামের বাড়ি হরিদেবপুরে গিয়ে আশ্রয় নেন। সেখানে ফরিদের মা-বোন ও আত্মীয়-স্বজনেরা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে ওই গ্রামের একজনের সহযোগিতায় ওই রাতেই তিনি নিরাপদ আশ্রয় পান।
এ ঘটনার পর পরিবারের পরামর্শে গত ১২ মার্চ কালীগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা (নং ৯) দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মামলার প্রধান আসামি ফরিদ পালোয়ান ঘটনার পরপরই ইতালিতে পালিয়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আলাউদ্দিন জানান, মামলার ১ নম্বর আসামি বিদেশে পলায়ন করায় তাকে গ্রেপ্তারে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি। তবে ওই মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/রফিক/এস