চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির কারণে বন্ধ রয়েছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। শনিবার সকাল থেকে স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় কাস্টমস ছাড়পত্র না পাওয়ায় আটকে গেছে অর্ধশত ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ কর্মবিরতি অব্যাহত থাকায় তীব্র জটের সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। 

কাস্টমস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করার প্রতিবাদে অসহযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনামসজিদ স্থল কাস্টমসের এক কর্মকর্তা বলেন, এনবিআর বিলুপ্ত করার প্রতিবাদে অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা। তারই অংশ হিসেবে স্থল কাস্টমসের কর্মকর্তারা সকাল ৯ টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে। ৫টার পর আমদানি পণ্যবাহী ভারতীয় ট্রাক আসতে চাইলে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।

ভারতীয় টাক চালক রাজা রায় জানান, সকাল দশটার দিকে তিনি সোনা মসজিদ বন্দরে ঢোকার চেষ্টা করলে জানতে পারেন যে বাংলাদেশে কর্মবিরতি চলছে আরে কারণে তিনি শূন্যরেখায় চার ঘণ্টা থেকে আটকে রয়েছেন।

ভারতীয় টাকচালক বিশ্বজিত ঘোষ জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত রেখা থেকে ভারতের অভ্যন্তরে ৫০ থেকে ৬০টি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে। 

অন্যদিকে আমদানিকারকের প্রতিনিধি গাজি আলম জানান, আকস্মিক এ কর্মবিরতির কারণে তার সাতটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রয়েছে জিরো পয়েন্টে। বিকেল পাঁচটার পরে ছাড়পত্র দেওয়া হলে বন্দরে এসব ট্রাক প্রবেশ করতে পারবে।
 
বন্দর পরিচালনাকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপক মো.

মাঈনুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে কোনো পণ্যবাহী ট্রাক সোনামসজিদ স্থলবন্দরে প্রবেশ করেনি। আমদানি পণ্য নিয়ে ভারতীয় ট্রাকগুলো শূন্যরেখা থেকে ভারতের মহদিপুর বন্দরে অপেক্ষা করছে। ওপারে আমদানি পণ্যবাহী কয়েক শ ট্রাক আটকা পড়েছে। এর আগে এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা করে 'কলম বিরতি' কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা। তবে ওই সময় স্থলবন্দর কলম বিরতির আওতামুক্ত ছিল।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক কর মকর ত র মসজ দ স ক স টমস আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

তিন কারণে রপ্তানিতে প্রণোদনা প্রত্যাহার ৫ মাস পেছাল

তিন কারণে রপ্তানিখাতে আর্থিক প্রণোদনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের সময়সীমা আরো ৫ মাস পিছিয়ে দিয়েছে সরকার। আগামী বছরের (২০২৬) জুলাই থেকে এটি কার্যকর করার কথা ছিল। এখন তা পিছিয়ে আগামী বছরের নভেম্বর মাস নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি অনুমোদনও করেছেন। 

যে  কারণগুলোর কারণে সময়সীমা পিছিয়ে দেয়া হয়েছে তা হলো, আমেরিকা কর্তৃক বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অধিকহারে শুল্কারোপ, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে ভারতের বিধিনিষেধ এবং গত বছরে রাজনৈতিক কারণে শিল্পখাতে অস্থিরতা। ইতোমধ্যে ২০২৪ সাল থেকে এই রপ্তানি প্রণোদনা ধাপে ধাপে কমিয়ে দেয়া হচ্ছে।

বিগত সাত অর্থবছরে রপ্তানিখাতে প্রণোদনার দেয়ার পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। এই আর্থিক প্রণোদনা সিংহভাগ (৮০ ভাগেরও বেশি) পেয়েছে রপ্তানিমুখী তৈরিপোশাক শিল্প।  

আরো পড়ুন:

পাঁচ বছরে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে ২২৮ শতাংশ

জবিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদদের নিয়ে গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জাতিসংঘের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী সংস্থাটির কমিটি ফর ডেভলেপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) সুপারিশ অনুসারে আগামী ২৪ নভেম্বর ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এগ্রিমেন্ট অন সাবসিডিস অ্যান্ড কাউন্টারভেলিং মেজারস (এএসসিএম) অনুসারে রপ্তানি নির্ভর সাবসিডি অর্থ্যাৎ কোনো আর্থিক প্রণোদনা দেয়াা যাবে না। 

এ অবস্থায় রপ্তানিতে বিদ্যমান প্রণোদনা বা আর্থিক সহায়তা একসঙ্গে প্রত্যাহার করা হলে রপ্তানিকারকেরা হঠাৎ করে চ্যালেঞ্জর সম্মুখিন হতে পারেন বা রপ্তানি বাণিজ্য নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে। সেই বাস্তবতায় ২০২৬ সালের মধ্যে রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা ধাপে ধাপে বা  ক্রমান্নয়ে কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত রয়েছে, যা পূর্ববর্তী সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত। উক্ত কর্মপরিকল্পনা অনুসারে প্রথম ধাপে সব পণ্যের (৪৩টি খাতের) রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা ২০১৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আংশিক হ্রাস করা হয়েছে।  দ্বিতীয় ধাপে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে এ নগদ সহায়তা আরো কিছুটা হ্রাস করা হয়েছে।

অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে জানিয়েছে, এই  কর্মপরিকল্পনা অনুসারে তৃতীয় ধাপে  ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে রপ্তানি প্রণোদনা/নগদ সহায়তার যার আংশিক হ্রাস করার কথা ছিল। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে আমেরিকা কর্তৃক বাংলাদেশের উপর প্রতিযোগী দেশের তুলনায় অধিক হারে শুল্ক আরোপ, স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ভারত সরকার দেয় বিধিনিষেধ এবং গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শিল্পখাতে কিছুটা অস্থিরতা থাকার কারণে দেশের রপ্তানিখাত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। পরিবর্তিত এ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রপ্তানি প্রণোদনার হার এ মুহূর্তে আরো হ্রাস করা হলে রপ্তানিকারকেরা অধিকতর সমস্যার সম্মুখীন হবেন। এ পর্যায়ে তৃতীয় ধাপে নগদ সহায়তা হ্রাসের পরিকল্পনা ৬ (ছয়) মাসের জন্য বিলম্বিত করা যেতে পারে। সে প্রেক্ষিতে, নগদ সহায়তার  তৃতীয় ধাপে হ্রাসের লক্ষ্যে ইতোপূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্ত শিথিল করে আগামী ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা যুক্তিযুক্ত হবে।  একইভাবে, ২০২৬ সালের ১ জুলাই থেকে চতুর্থ ধাপে নগদ সহায়তা হ্রাস কিছুটা বিলম্বিত করে এলডিসি উত্তোরণের দিন হতে অর্থাৎ এর ২০২৬ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা সমীচীন হবে।

অর্থ বিভাগ সূত্র জানায়, এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অর্থ উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হলে তিনি তা অনুমোদন করেছেন। ফলে রপ্তানি সহায়তা প্রত্যাহার প্রায় এক বছর পিছিয়ে গেল। এতে দেশের রপ্তানিকেরা বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা আরো খানিকটা সময় পেলেন।

ঢাকা/হাসনাত/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু 
  • আজ থেকে নিউমুরিং টার্মিনালের দায়িত্বে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান ড্রাইডক
  • ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে এক বছরে রেকর্ড পরিমাণ হলুদ আমদানি
  • আশুরায় বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
  • তিন কারণে রপ্তানিতে প্রণোদনা প্রত্যাহার ৫ মাস পেছাল
  • হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ