সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশে বিবিএসের পরিকল্পনামন্ত্রী কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন হবে না। বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইসি) মাসিকভিত্তিক প্রকাশনা ‘অর্থনীতির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস: মে ২০২৫’ তথ্য প্রকাশে বিবিএসের ক্ষমতায়ন বাড়ানোর জন্য নীতিগত পরিবর্তন ও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। অবশ্য বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে পরিকল্পনামন্ত্রী নামে নয়; পরিকল্পনা উপদেষ্টা নামে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।

৭ মে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ (এসআইটি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিএসএস) সব তথ্য ও প্রতিবেদন প্রকাশের একক কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রকাশনায় বলা হয়, সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত কাঠামো অনুমোদন করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যানের সততা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করা হবে।

এ ছাড়া বিবিএসের মূল্যায়ন ও কার্যকর পদক্ষেপের সুপারিশ দিতে একটি আট সদস্যের টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া সহায়তার জন্য স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্র্যাটেজিস (এসটিএস) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি কমেছে এপ্রিল মাসে

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। কঠোর মুদ্রানীতির ও লক্ষ্যভিত্তিক রাজস্ব হস্তক্ষেপের প্রভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চাহিদা ও সরবরাহ উভয় খাতেই নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক যে কঠোর মুদ্রানীতি চালু করেছে, তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। এ ছাড়া চাল ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর মতো রাজস্ব নীতিগুলো ভোক্তা পর্যায়ে চাপ কমাতে সহায়ক হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি গণনায় খাদ্যপণ্যের মধ্যে চালের অবদান বেড়েছে। মার্চে যেখানে মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান ছিল ৩৪ শতাংশ, তা এপ্রিল মাসে বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ। শুধু মাঝারি চালই অবদান রেখেছে ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ।

মার্চ মাসে এই তালিকায় শীর্ষে থাকা বেগুনের অবদান ছিল ১৭ দশমিক ১২ শতাংশ। তা এপ্রিল মাসে নেমে আসে ১১ শতাংশে। সয়াবিন তেলের প্রভাব ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ।

খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্যে করা গেছে। গ্রামীণ এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে অবদান ছিল ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ। আর শহরের অবদান ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

ব্যাংকে আমানত ও ঋণ বাড়লেও চাপ বেড়েছে সরকারি ঋণে

চলতি বছরের মার্চে ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। যা গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ব্যক্তি খাত ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তবে রাজস্ব সংগ্রহে স্থবিরতা থাকায় সরকার ৯৮ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকার ব্যাংকঋণ নিয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।

২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে খাদ্য ও সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ধারাবাহিকভাবে কমছে। মার্চে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ থেকে এপ্রিল মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশে নেমে এসেছে। সার্বিক মূল্যস্ফীতিও কমে এপ্রিল মাসে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতির প্রধান চালিকাশক্তি এখনো খাদ্যপণ্য। এপ্রিল মাসে খাদ্যপণ্য মূল্যস্ফীতিতে অবদান ছিল ৪২ দশমিক ২ শতাংশ। যা মার্চের তুলনায় কিছুটা কমেছে বলে প্রকাশ করা হয় এই মাসিক প্রতিবেদনে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স খ য ন খ দ যপণ য অবদ ন ছ ল র অবদ ন ৮ দশম ক ব ব এস প রক শ মন ত র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়ার প্রয়াত বিরোধী নেতা নাভালনির শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল: স্ত্রীর দাবি
  • রূপালী লাইফের আর্থিক হিসাবে ৬৯ কোটি টাকার গরমিল
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তি ইউনিটে ভর্তি: মাইগ্রেশন, বিষয় ও প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ প্রকাশ
  • হেলথ টেকনোলজি কোর্সে ভর্তি, অপেক্ষমাণ থেকে তৃতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • তাপমাত্রা বেড়ে দেশের ক্ষতি ২১ হাজার কোটি টাকা, কীভাবে হচ্ছে, কেন হচ্ছে
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
  • শেয়ারহোল্ডারদের নগদ লভ্যাংশ দিল ঢাকা ইন্স্যুরেন্স
  • সোনালী ও রূপালী মুনাফায়, অগ্রণী ও জনতা লোকসানে