পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করতে পারবে বিবিএস
Published: 24th, May 2025 GMT
সরকারি পরিসংখ্যান প্রকাশে বিবিএসের পরিকল্পনামন্ত্রী কিংবা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সরকারি কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রয়োজন হবে না। বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইসি) মাসিকভিত্তিক প্রকাশনা ‘অর্থনীতির হালনাগাদ ও পূর্বাভাস: মে ২০২৫’ তথ্য প্রকাশে বিবিএসের ক্ষমতায়ন বাড়ানোর জন্য নীতিগত পরিবর্তন ও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। অবশ্য বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে পরিকল্পনামন্ত্রী নামে নয়; পরিকল্পনা উপদেষ্টা নামে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।
৭ মে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ (এসআইটি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিএসএস) সব তথ্য ও প্রতিবেদন প্রকাশের একক কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রকাশনায় বলা হয়, সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত কাঠামো অনুমোদন করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যানের সততা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করা হবে।
এ ছাড়া বিবিএসের মূল্যায়ন ও কার্যকর পদক্ষেপের সুপারিশ দিতে একটি আট সদস্যের টাস্কফোর্স গঠিত হয়েছে। এর সঙ্গে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া সহায়তার জন্য স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্র্যাটেজিস (এসটিএস) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি কমেছে এপ্রিল মাসে
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে। কঠোর মুদ্রানীতির ও লক্ষ্যভিত্তিক রাজস্ব হস্তক্ষেপের প্রভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মূল্যস্ফীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে চাহিদা ও সরবরাহ উভয় খাতেই নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক যে কঠোর মুদ্রানীতি চালু করেছে, তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বৈদেশিক মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। এ ছাড়া চাল ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর শুল্ক কমানোর মতো রাজস্ব নীতিগুলো ভোক্তা পর্যায়ে চাপ কমাতে সহায়ক হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি গণনায় খাদ্যপণ্যের মধ্যে চালের অবদান বেড়েছে। মার্চে যেখানে মূল্যস্ফীতিতে চালের অবদান ছিল ৩৪ শতাংশ, তা এপ্রিল মাসে বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ। শুধু মাঝারি চালই অবদান রেখেছে ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ।
মার্চ মাসে এই তালিকায় শীর্ষে থাকা বেগুনের অবদান ছিল ১৭ দশমিক ১২ শতাংশ। তা এপ্রিল মাসে নেমে আসে ১১ শতাংশে। সয়াবিন তেলের প্রভাব ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ।
খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য লক্ষ্যে করা গেছে। গ্রামীণ এলাকায় খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে অবদান ছিল ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ। আর শহরের অবদান ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
ব্যাংকে আমানত ও ঋণ বাড়লেও চাপ বেড়েছে সরকারি ঋণে
চলতি বছরের মার্চে ব্যাংকে আমানতের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ। যা গত ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। ব্যক্তি খাত ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ। তবে রাজস্ব সংগ্রহে স্থবিরতা থাকায় সরকার ৯৮ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকার ব্যাংকঋণ নিয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।
২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে খাদ্য ও সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ধারাবাহিকভাবে কমছে। মার্চে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ থেকে এপ্রিল মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৬৩ শতাংশে নেমে এসেছে। সার্বিক মূল্যস্ফীতিও কমে এপ্রিল মাসে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ, যা মার্চে ছিল ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। তবে মূল্যস্ফীতির প্রধান চালিকাশক্তি এখনো খাদ্যপণ্য। এপ্রিল মাসে খাদ্যপণ্য মূল্যস্ফীতিতে অবদান ছিল ৪২ দশমিক ২ শতাংশ। যা মার্চের তুলনায় কিছুটা কমেছে বলে প্রকাশ করা হয় এই মাসিক প্রতিবেদনে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স খ য ন খ দ যপণ য অবদ ন ছ ল র অবদ ন ৮ দশম ক ব ব এস প রক শ মন ত র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বড় লোকসানে আইএফআইসি ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
পুঁজিবাজারে ব্যাংক খাতে তালিকাভুক্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর, ২০২৪) ও নয় মাসের (জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর, ২০২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী আলোচ্য নয় মাসের প্রান্তিকে ব্যাংক দুটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা থেকে বড় লোকসানে নেমেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে বুধবার (২৯ অক্টোবর) কোম্পানি দুটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
আইএফআইসি ব্যাংক: চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এ কোম্পানির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (৩.৫৩) টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.০৪ টাকা। সে হিসেবে আলোচ্য প্রান্তিকে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি শেয়ারপ্রতি মুনাফা থেকে লোকসানে নেমেছে।
এছাড়া, চলতি হিসাববছরের নয় মাস বা তিন প্রান্তিক মিলে আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (৯.৪০) টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.৩৬ টাকা। সে হিসেবে আলোচ্য প্রান্তিকে এ কোম্পানি শেয়ারপ্রতি মুনাফা থেকে লোকসানে নেমেছে।
২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮.৯১ টাকা।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক: চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকে এ কোম্পানির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (১০.৯৪) টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল (০.৩৬) টাকা। সে হিসেবে আলোচ্য প্রান্তিকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে ১০.৫৮ টাকা বা ২৯৩৮.৮৯ শতাংশ।
এছাড়া, চলতি হিসাববছরের নয় মাস বা তিন প্রান্তিক মিলে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে (১৫.২৮) টাকা। আগের হিসাববছরের একই সময়ে এ কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ০.১৪ টাকা। সে হিসেবে আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা থেকে লোকসানে নেমেছে।
২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২.৮৭ টাকা।
ঢাকা/এনটি/রফিক