ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। আজ রোববার বিকেলে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা এ বিক্ষোভ করেন।

শ্রমিকেরা জানান, ১৭ মে এক নোটিশের মাধ্যমে ১৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিশে শ্রমিকদের এপ্রিল মাসের বকেয়া বেতন আজ (রোববার) ২৫ মে পরিশোধ করা হবে বলে জানানো হয়। আজ দুপুরে শ্রমিকেরা বকেয়া বেতন নিতে কারখানায় গেলেও মালিকপক্ষ বা কর্মকর্তারা আসেননি। এরপর ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকেরা বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কারখানা-সংলগ্ন হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারখানার এক সুইং অপারেটর বলেন, সামনে ঈদ। তাঁদের দাবি, এপ্রিল মাসের বকেয়া বেতন ছাড়াও ঈদের আগে চলতি মাসের বেতনের অর্ধেক ও ঈদ বোনাস দিতে হবে।

কারখানাটির আরেক শ্রমিক বলেন, ‘মালিকপক্ষ যদি কারখানা না চালাতে পারে, তাহলে বকেয়াসহ যাবতীয় পাওনা বুঝিয়ে দিক।’

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাভার থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকেরা ঈদের আগে বেতন-বোনাস না পেলে কীভাবে সংসার চালাবে? কীভাবে ঈদ উদ্‌যাপন করবে? কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের দাবি, দ্রুত শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করা হোক।’

১৭ মে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বলা হয়, বসুন্ধরা গার্মেন্টস লিমিটেডের সব শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের জানানো যাচ্ছে যে কারখানায় বিগত দিনে শ্রমিক অসন্তোষ থাকায় আন্দোলনের জন্য নির্ধারিত সময়ে শিপমেন্ট করতে না পারায় ও বিলম্বে শিপমেন্ট করায় (আকাশপথে পণ্য পরিবহন) ব্যাংকের দায়দেনা অনেক বেশি হয়েছে। এ কারণে ক্রেতাদের কোনো ক্রয়াদেশ ও কাঁচামাল না থাকায় কারখানা কর্তৃপক্ষ ১৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত শ্রমিকদের কোনো কাজ দেওয়া সম্ভব হবে না, যা মালিকের নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত। এমতাবস্থায় কারখানার শ্রমিক ও কর্মচারীদের বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১২-এর বিধান মোতাবেক লে-অফ করা হলো, যা ১৮ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত কার্যকর হবে।

এ বিষয়ে জানতে কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া ‍যায়।

আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, বেতন না পেয়ে শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। পরে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

১৭১ রানের ইনিংসে এশিয়া কাপে সুর্যবংশীর রেকর্ডের ঝড়

আরেকদিন, আরেক রেকর্ড; ভৈভব সুর্যবংশীর ব্যাটে যেন রোজই নতুন ইতিহাস লেখা হচ্ছে। মাত্র ১৪ বছরের এই প্রতিভাবান ওপেনার শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেললেন এক ঝড়ো ইনিংস। ৯৫ বলে ১৭১! তাও আবার চারদিক উড়িয়ে ১৪ ছক্কায় রাঙানো এক মহাকাব্যিক প্রদর্শনী।

৩০ বলে হাফ-সেঞ্চুরি, ৫৬ বলে সেঞ্চুরি; একবার লয় পেলে যেন থামার ক্ষমতাই হারিয়ে ফেলেন ভৈভব। ৮৪ বলে পৌঁছে যান ১৫০-এ। আর শেষ পর্যন্ত ১৭১ রানের সেই ইনিংসেই ভেঙে ফেলেন দু’টি এশিয়া কাপ রেকর্ড। যা অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।

আরো পড়ুন:

১২ বছরে ৩০ প্রচেষ্টার পর অস্ট্রেলিয়ায় সেঞ্চুরি পেলেন রুট

ওয়াসিম আকরামের রেকর্ড ভেঙে শীর্ষে স্টার্ক

এর আগে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড ছিল আফগানিস্তানের দারবিশ রাসুলির (২০১৭ সালে ১০টি)। ভৈভব সেটিকে ছাড়িয়ে এখন এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৪ ছক্কায় নতুন মালিক। শুধু তাই নয়, পুরো টুর্নামেন্ট মিলিয়ে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন তিনি। রাসুলির আগের ২২ ছক্কাকে টপকে ভৈভবের সংখ্যা এখন ২৬।

এই ১৭১ রান অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। তালিকার এক নম্বরে আছেন আম্বাতি রাইডু। ২০০২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার অপরাজিত ১৭৭ রানের ইনিংস এখনো শীর্ষে।

দলে আছেন মুম্বাই ও সিএসকে ওপেনার মাটরের মতো উদ্যমী নেতা। তার নেতৃত্বে ভারত অনূর্ধ্ব–১৯ দল শুক্রবার ইউএই’কে হারিয়ে অভিযান শুরু করার রসদ পেয়ে গেছে। তবে পুরো এশিয়া কাপের সবচেয়ে আলোচিত ম্যাচটি হবে রোববারের ভারত-পাকিস্তান লড়াই। আগামী বছরের বিশ্বকাপ প্রস্তুতির আগাম পরীক্ষা হিসেবেও দেখা হচ্ছে এটিকে।

এদিকে সাম্প্রতিক পুরুষ এশিয়া কাপ, নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও রাইজিং স্টারস টি–টোয়েন্টি এশিয়া কাপে ভারতীয় খেলোয়াড়রা পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে করমর্দন এড়িয়ে গিয়েছেন। পাহালগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ভারতীয় সেনা ও নিহতদের প্রতি সংহতির বার্তা হিসেবেই এমন সিদ্ধান্ত।

তবে জুনিয়র স্তরে চিত্রটা ভিন্ন। আইসিসি চায় রাজনীতি থেকে দূরে থাকুক অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট, এবং বজায় থাকুক স্বাভাবিক খেলোয়াড়সুলভ সৌজন্য আচরণ।

এক বিসিসিআই কর্মকর্তা পিটিআইকে জানান, “ছেলেদের আলাদা করে কিছু বলা হয়নি। তবে ম্যানেজার আনন্দ দাতারকে বিসিসিআই নির্দিষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। ভারতের ছেলেরা যদি পাকিস্তান দলের সঙ্গে করমর্দন না করে, তাহলে আগে থেকেই ম্যাচ রেফারিকে জানাতে হবে। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ