প্রথমার্ধের শেষ মূহুর্তে ১-০ গোলে পিছিয়ে বাংলাদেশ
Published: 10th, June 2025 GMT
অপেক্ষার অবসান ঘটেছে আজ। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ দিয়ে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয়েছে কানাডা প্রবাসী মিডফিল্ডার শমিত শোমের। তাকে জায়গা দিতেই একাদশে ঠাই হয়নি জামাল ভূঁইয়ার।
ম্যাচ শুরুর পর থেকেই শরীরী ভাষায় আক্রমনাত্মক ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত গোলের দেখা পায়নি হামজার দল। ম্যাচের ৫ মিনিটে রাকিবকে মাটিতে ফেলে দিলেন সিঙ্গাপুরের এক ডিফেন্ডার। কিন্তু ফাউল না দেওয়ায় লাইন্সম্যানের ওপর ক্ষুব্ধ হন রাকিব। ৯ মিনিটে একটি সুযোগ হাতছাড়া হয় সিঙ্গাপুরের। হ্যারিস স্টুয়ার্টের লং থ্রো থেকে জর্ডানের হেডে বল পেয়েছিলেন সং উই ইয়াং । কিন্তু বক্সের ভেতর সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সিঙ্গাপুরের এই মিডফিল্ডার।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে সিঙ্গাপুরের দুজনকে পরাস্ত করে শাকিল বল বাড়িয়েছিলেন রাকিবের দিকে। কিন্তু রাকিবের দুর্বল শট সিঙ্গাপুর গোলরক্ষকের হাতে সহজেই তালুবন্দী হয়। ২৪ মিনিটে স্টুয়ার্টকে ফাউল করায় হলুদ কার্ড দেখেছেন বাংলাদেশের ফাহমিদুল ইসলাম। ২৫ মিনিটে চোট পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন তারিক কাজী। যদিও কিছু সময় পর তিনি মাঠে ফিরে আসেন। ৩১ মিনিটে দুর্দান্ত এক সেভে বাংলাদেশকে বাঁচালেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। বাঁ পাশ থেকে নেওয়া ইখসান ফান্দির শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকালেন তিনি।
ভুটান ম্যাচ থেকে এসেছে আরও দুই পরিবর্তন। মিডফিল্ডে জায়গা হয়নি ভুটান ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে গোল করা সোহেল রানার। তার জায়গায় সেরা একাদশে মোহাম্মদ হৃদয়কে রেখেছেন হাভিয়ের কাবরেরা। রক্ষণেও এসেছে পরিবর্তন, লেফটব্যাক তাজ উদ্দিনের পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন শাকিল আহাদ তপু। সম্ভাব্য ৪-২-৩-১ ছকে খেলাবেন কাবরেরা। ২৩ সদস্যদের চূড়ান্ত স্কোয়াড থেকে তিন জন নেই। ইসা ফয়সাল, মজিবর রহমান জনি ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমের জায়গা হয়নি।
বাংলাদেশের একাদশ: মিতুল মারমা (গোলরক্ষক), তপু বর্মণ, তারিক কাজী, সাদ উদ্দিন, শাকিল আহাদ, হামজা চৌধুরী, শমিত সোম, হৃদয়, কাজেম শাহ, ফাহমিদুল ইসলাম ও রাকিব হোসেন।
এদিকে মালদ্বীপের বিপক্ষে খেলা একাদশ থেকে তিন পরিবর্তন এনেছে সিঙ্গাপুর।
সিঙ্গাপুর একাদশ: ইজওয়ান মাহবুব, আমিরুল আদলি, জর্ডান এমাভিউয়ে, রায়হান স্টুয়ার্ট, সাফুয়ান বাহারুদিন, শাহ শাহিরান, হারিস হারুন, হামি শিয়াহিন, সং উই ইয়ং, হ্যারিস স্টুয়ার্ট, ইখসান ফান্দি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাদ্রাসা ছাত্র হত্যার ঘটনায় দুই থানায় পৃথক মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জে মাদরাসা ছাত্র মো. ইব্রাহিম (১৩) হত্যার ঘটনায় দুই থানায় পৃথক পৃথক মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা-মাকে মৃত দেখিয়ে কথিত মামা বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর কিছুদিন পর একই ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী মো. হানিফ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ে নিহত ইব্রাহিমের বাবা হানিফ মিয়া ও মা সখিনা বিবি কে মৃত দেখিয়ে তার মামা পরিচয়ে মো. সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি গত ২২ আগস্ট ফতুল্লা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান, মানবজমিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির জেলা প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন রবিন, আইনজীবী কামাল হোসেন সহ ৬১ জন নামীয় আসামি করা হয়। এছাড়া আরও অজ্ঞাত ১৫০-১৬০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই শুক্রবার বিকাল আনুমানিক ৩ টার দিকে কোটা বিরোধী দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রোডের পাসপোর্ট অফিসের বিপরীত পাশে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে সমবেত হলে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র সহ বিভিন্ন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারি গুলি করে ও ককটেল বিস্ফোরণ করে।
এ সময় আমি ও আমার ভাগিনা মোহাম্মদ ইব্রাহিম (১৩) ভয়ে একটি দোকানের আড়ালে আশ্রয় নেই। হঠাৎ আমার ভাগিনা ইব্রাহিমের মাতায় ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরের দিন ২০ জুলাই মাগরিবের নামাজের পূর্বে মাতুআইল কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী ও নিহত ইব্রাহিমের কথিত মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত ইব্রাহিম আমার বাড়ির পাশে কাজ করতো ও মাদ্রসায় পড়াশোনা করতো। তার বাবা-মায়ের সাথে তার সম্পর্ক নেই। আমি একটি সাইডের কন্ট্রাকটারি করি।
সম্প্রতি সে আমার সাথেও ওস্তাকারের সহকারী হিসেবে কাজ করেছে। সেই কাজের সুবাদে সে আমাকে মামা বলে ডাকতো। সে আমার আপন ভাগিনা না। তার হত্যার ঘটনার পর রাজনীতিক মামলা হয়েছে। যারা আন্দোলন করেছে তারা মামলার সবকিছু করেছে, আমি শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি। আসামিদের কাউকে আমি চিনি না।
মামলার এজাহারে ইব্রাহিমের বাবা-মাকে মৃত উল্লেখ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইব্রাহিমের বাবা-মায়ের সংসার অনেক আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কিন্তু মামলায় কেন মৃত লেখেছে তা জানা নেই। তাছাড়া এই মামলায় স্বাক্ষর করা ছাড়া আমি আর কিছু জানিনা। মামলার কাগজে কি লিখছে তা আমি জানিনা।
এই ঘটনার নিহত ইব্রাহিমের বাবা সোনারগাঁ থানায় আরেকটি মামলা করেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা কী আমারটা আগে হয়েছে নাকি পরে হয়েছে। আপনে ফোন রাখেন ভাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায়ও মামলা হয়েছে। এক ঘটনায় দুই থানায় মামলা হতে পারেনা। এ কারণে উর্ধ্বতনদের নির্দেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে একই ঘটনায় নিহত মো. ইব্রাহিম (১৩) এর বাবা মো. হানিফ (৬৫) বাদী হয়ে গত ২৪ আগস্ট সোনারগাঁ থানায় আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ইব্রাহিমের নিহত হওয়ার স্থান ভিন্ন দেখানো হয়েছে।
এই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পন্ড করার জন্য সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর ব্রীজের পূর্ব ঢাল হতে ১৪ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে অস্ত্র নিয়ে হামলা করে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী হামলা চালিয়ে এলোপাথারি গুলি ছুড়ে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৩ টার দিকে ইব্রাহিমের বাম চোখের ভেতরে দিয়ে মাথায় পেছনের অংশ দিয়ে গুলি বের হয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়।
মামলার আসামি করা হয়েছে- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ সহ ২৩৫ জন নামীয় আসামি এবং অজ্ঞাত আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে সোনারগাঁ থানার মামলার বাদী ও নিহত ইব্রাহিমের বাবা মো. হানিফ কে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফিজুর রহমান বলেন, এই মামলা আমাদের এখানে ফাইনাল হবে। এই ঘটনার প্রকৃত ঘটনাস্থল যেখানে সেই থানায় মামলা হবে।