ছবি: প্রথম আলো
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নেতা সাইফুলের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু
খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ জন্য কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলামকে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছেন দুদকের এ কর্মকর্তা। এর আগে গত ৯ এপ্রিল সাইফুলের সম্পদ অনুসন্ধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে জেলার প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। জেলা আইনজীবী সমিতির মৃত সদস্যদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়েছে।
সাইফুল একাধিকবার খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিসহ বিভিন্ন ‘লাভজনক’ পদে দায়িত্ব পালন করেন। এসব প্রতিষ্ঠানের বিপুল টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব থাকা অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে সংগঠনের অর্থ দিয়ে ব্যক্তিগত প্রচার, লিফট কেনাসহ টাকা ব্যক্তিগত তহবিলে স্থানান্তর করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। আইনজীবী সমিতির উন্নয়নকাজেও মোটা অঙ্কের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
দুদক থেকে জানা গেছে, সাইফুলের মালিকানাধীন আমিন-সামিন শিপিং লাইনস, আমিন-সামিন কনস্ট্রাকশন, আমিন-সামিন ট্রেডিং, এসএ বিল্ডার্স, নয়ন এন্টারপ্রাইজ, ইয়াহিয়া কনস্ট্রাকশন, ইউনিক আইস অ্যান্ড ফুডস এবং মুনমুন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে আটটি কোম্পানি পাওয়া গেছে। এর বাইরে আর কোনো কোম্পানি আছে কিনা জানতে যৌথ মূলধন কোম্পানি পরিদপ্তরের নিবন্ধককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া খুলনা সিটি করপোরেশনে সাইফুলের নামে অন্য কোনো ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে কিনা– তা জানতে চেয়েছে দুদক। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম বলেন, সাইফুল নৌপরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব থাকাকালে আয়-ব্যয়ের হিসাব, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন খাতের আয়-ব্যয়ের রেকর্ড চাওয়া হয়েছে। বিশেষ করে কল্যাণ তহবিল, ভবন নির্মাণ ও বই কেনা বাবদ প্রাপ্ত টাকার ব্যয় বিবরণী, বিল-ভাউচার চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের কাছে।
দুদকের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আপাতত সাইফুলের নামে পাঁচটি নৌযানের (কার্গো) তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁর নামে আর কোনো কার্গো বা ছোট জাহাজ রয়েছে কিনা– জানতে নৌপরিবহন অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁর নামে দেশের কোথায় কোথায় জমি, ফ্ল্যাট ও প্লট রয়েছে এবং ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কী পরিমাণ অর্থ জমা রয়েছে, সে তথ্যেরও অনুসন্ধান চলছে।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছেন। ফলে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।