আল্লাহ-তাআলা বলেন, ‘আমি একমাত্র এ-উদ্দেশ্যেই রাসুল প্রেরণ করেছি, যেন আল্লাহর নির্দেশ-অনুযায়ী তাঁকে মেনে চলা হয়।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৬৪)
সকল রাসুলের ক্ষেত্রে আল্লাহর একই রীতি, তারা যে-বিধান নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন তা পৌঁছে দেবেন এবং অনুসারীদের কর্তব্য হলো, তাকে মান্য করবে এবং নির্দেশ বাস্তবায়ন করবে। কোরআনের অনেক আয়াতে নবীজির আনুগত্য করতে বলা হয়েছে। অধিকাংশ তাকে মান্য করতে বলা হয়েছে আল্লাহর আদেশ মানার কথার সঙ্গে মিলিত হয়ে।
যেমন, আল্লাহ-তাআলা বলেছেন, ‘ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলকে মানো’ (সুরা আনফাল: ২০)।
কোরআনের অনেক আয়াতে নবীজির আনুগত্য করতে বলা হয়েছে। অধিকাংশ তাকে মান্য করতে বলা হয়েছে আল্লাহর আদেশ মানার কথার সঙ্গে মিলিত হয়ে।‘বলুন, তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের মান্য করো’ (সুরা আলে ইমরান: ৩২)। ‘আর তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আদেশের অনুগত থাকো, যাতে তোমাদের ওপর দয়া করা হয়’ (সুরা আলে ইমরান: ১৩২)।
‘যে ব্যক্তি রাসুলকে মান্য করল, সে আল্লাহকে মানল’ (সুরা নিসা: ৮০)।
আরও পড়ুনসাহসী সাহাবি হজরত যুবাইর (রা.)০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
এই অনুগত থাকা বা মান্য করার অর্থ কী, সে-বিষয়টিও কোরআনে স্পষ্ট করা হয়েছে যে, ‘রাসুল তোমাদের যা দিয়েছেন তা গ্রহণ করো এবং তোমাদের যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকো।’ ‘সুরা হাশর, আয়াত: ৭)
কোরআনের পাশাপাশি অনেক হাদিসেও আল্লাহ ও রাসুলের আদেশ মানতে বলা হয়েছে। কতটা? তা বোঝার জন্য একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। আবু সাইদ ইবনে মুয়াল্লা (রা.) বলেন, ‘‘মসজিদে নামাজ পড়ছিলাম, এমন সময় নবীজি আমাকে ডাকলেন, আমি সাড়া দিলাম না। নামাজ শেষে বললাম, আল্লাহর রাসুল, আমি তো নামাজ পড়ছিলাম।’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ কি বলেননি, ‘তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের ডাকে সাড়া দাও, যখন তিনি তোমাদের ডাকেন, কেননা, তাতে রয়েছে তোমাদের জীবন’ (সুরা আনফাল: ২৪)।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪,৪৭৪)
আবার বিদায় হজের সময় যাদের কোরবানির পশু ছিল না, তাদের বললে ইহরামমুক্ত হয়ে যেতে এবং হজের বদলে ওমরা করে নিতে। অনেকে ইতস্তত করছিল। নবীজি (সা.) রাগ করলেন, কেন তারা তারা গড়িমসি করেছে। সাহাবিদের দ্বিধাও ছিল রাসুলের কাছে অবাধ্যতা। ফলে তিনি আল্লাহর অভিশাপ পড়ার আশঙ্কা করেছিলেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১.২১১)
আর তোমরা আল্লাহ ও রাসুলের আদেশের অনুগত থাকো, যাতে তোমাদের ওপর দয়া করা হয়।সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৩২)মহানবীর (সা.) আদেশ মানলে এবং তার আনীত বিধানে অনুগত থাকলে কী প্রতিদান পাবে, তা-ও আল্লাহ বলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আর যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের আদেশ মান্য করবে, তারা তাদের সঙ্গী হবে যাদের প্রতি আল্লাহ পুরস্কার দিয়েছেন। তারা হলেন নবী, সত্যবাদী, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ৬৯)
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমার প্রতিটি উম্মত বেহেশতে প্রবেশ করবে; তবে সে নয়, যে অস্বীকারকারী।’ সাহাবিগণ বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, অস্বীকারকারী কে?’ তিনি বললেন, ‘যে আমার আনুগত্য করবে সে বেহেশতে যাবে। যে আমার অবাধ্যতা করবে, সে-ই অস্বীকারকারী।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৭,২৮০)
আরও পড়ুনভালো প্রতিবেশী আল্লাহর প্রিয়জন১৩ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ ও র স ল র ম ন য কর ক রআন য করত
এছাড়াও পড়ুন:
এয়ার টিকিটে সিন্ডিকেটের অভিযোগ আটাবের
উড়োজাহাজের টিকিটের বাজার আবার সিন্ডিকেটের দখলে চলে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
শনিবার (১২ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আটাব জানায়, গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে রিয়াদ, জেদ্দা, মদিনা ও দাম্মাম রুটে টিকিটের মূল্য ‘গ্রুপ নামেই’ প্রায় ১ লাখ টাকায় বিক্রি হয়। আর ‘কম্পিউটার সিস্টেমে’ এটা উঠে যায় ১ লাখ ৭০ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো কোনো এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের যাত্রীদের টিকিট বিদেশি এজেন্সির কাছে নাম ছাড়া ব্লক করে দিয়ে আসন সংকট সৃষ্টি করছে। বিদেশি এজেন্সিরা দেশের কিছু সিন্ডিকেট এজেন্সি ও দালালের মাধ্যমে এসব টিকিট বিক্রয় করে টাকা হুন্ডি করে বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ফ্লাইট কমানোর ফলে আসনও কমে গেছে, যা টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির আরেকটি কারণ।
আটাব বলছে, সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে এয়ারলাইন্স, গ্লোবাল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) ও টিকিট সিন্ডিকেট চক্র যাত্রীর নামবিহীন অগ্রিম ‘গ্রুপ বুকিং’ করছে এবং পুনরায় এয়ার টিকিট মার্কেট তাদের সিন্ডিকেশনের দখলে নিয়ে কৃত্রিম আসন সংকট তৈরি করেছে। এতে এয়ার টিকিটের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এর ফলে যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সি ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট খাতের সবাই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আইনিব্যবস্থা না নেওয়ায় টিকিটের মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং শ্রমিক ও যাত্রীদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে দাম আরো বাড়বে বলেও আশঙ্কা করছে আটাব।
বাংলাদেশের এয়ার টিকিটের উচ্চমূল্য কমানো এবং এ খাতে শৃঙ্খলা আনার জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি একটি পরিপত্র জারি করে। তাতে যাত্রীর নাম, পাসপোর্টের বিবরণ ও পাসপোর্টের ফটোকপি দিয়ে টিকিট বুকিং করার নির্দেশনা দেওয়া ছিল। এতে টিকিটের মূল্য কমে আসে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি ‘বাজেট’ এয়ারলাইন্স ও সিন্ডিকেট চক্র পুনরায় সক্রিয় হতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে আটাব।
তারা বলছে, কোনো কোনো এয়ারলাইন্স ভুয়া নাম দিয়ে টিকিট বুকিং করে রাখে। ভুয়া নামে বুকিং করা টিকিটগুলো ফ্লাইটের এক-দুই দিন আগে নাম পরিবর্তন করে বিক্রি করা হয়।
ঢাকা/হাসান/ইভা