সোনারগাঁয়ে চলছে মাসব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা এবং লোকজ উৎসব। গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া কৃষ্টি আর ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে প্রতি বছরই এ মেলার আয়োজন করা হয়। ইতিহাস মতে, বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈশা খাঁর রাজধানী ছিল এ সোনারগাঁয়ে। সে সময় সোনারগাঁয়ের ইতিহাস ছিল অনেক বেশি জ্বলজ্বলে। সময়ের পরিক্রমায় তা ম্লান হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে গ্রামবাংলার লোকজ সংস্কৃতিকে ধারণ ও বাহন করতে ১৯৭৫ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের অধীনে লোকশিল্প জাদুঘরকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতির। এরই অংশ হিসেবে এ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এ লোকজ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
এ বছর ১৮ জানুয়ারি ফাউন্ডেশন চত্বরে ‘সোনারতরী’ লোকজ মঞ্চে মেলার উদ্বোধন হয়। ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন। এবারের মেলায় ১০০টি পণ্যের বিভিন্ন স্টল রয়েছে। পল্লি অঞ্চলের ৬৪ জন প্রথিতযশা কারুশিল্পী এ মেলায় অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ৩২টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কারুপণ্য উৎপাদন প্রদর্শনী স্টল, হস্তশিল্প, পোশাক, স্টেশনারি ও কসমেটিকস, খাবার ও চটপটি, মিষ্টিসহ বিভিন্ন ধরনের স্টল রয়েছে মেলায়।
এ ছাড়া ফাউন্ডেশনের ‘সোনারতরী’ লোকজ মঞ্চে প্রতিদিন জারি, সারি, বাউল গান, কবি গান, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মাইজভান্ডারি, লালন সংগীত, হাছন রাজা, মুর্শিদী, পালা গানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। স্থানীয় স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণে গ্রামীণ খেলাধুলা, বিয়ের কনে দেখা, নববধূর গায়ে হলুদ, বরযাত্রা, জামাইকে পিঠা খাওয়ানো, গ্রাম্য সালিশি ব্যবস্থাসহ গ্রামবাংলার হাজার বছরের জীবনযাত্রা নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। রয়েছে পুঁথি পাঠ, ছড়া পাঠের আসর, লোকজ গল্প বলা, ঘুড়ি ওড়ানো, পিঠা প্রদর্শনী। এ ছাড়া মেলায় রয়েছে পুতুল নাচ দেখার ব্যবস্থা।
দেশের বিভিন্ন স্থানের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সমারোহ দেখতে পাওয়া যায় এ মেলায়। এর মধ্যে রাজশাহীর শখের হাঁড়ি, মুন্সীগঞ্জের শীতলপাটি, মানিকগঞ্জের পিতলের শিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি, সোনারগাঁয়ের কাঠের শিল্প, হাতপাখা, নকশিকাঁথা উল্লেখযোগ্য। 
প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ফাউন্ডেশনের চত্বর খোলা থাকছে দর্শনার্থীদের জন্য। মেলায় প্রবেশের জন্য প্রাপ্ত বয়স্কদের ৫০ টাকা আর শিক্ষার্থীদের ৩০ টাকা টিকিট লাগবে। বিকেল ৫টার পর মেলায় প্রবেশের জন্য কোনো টিকিট লাগবে না। এ ছাড়া সুযোগ রয়েছে শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর পরিদর্শনের। বৃহস্পতিবার জাদুঘর সাপ্তাহিক বন্ধ থাকলেও মেলা চত্বর খোলা রয়েছে প্রতিদিনই। কারুশিল্প গ্রাম ও কারুপল্লি পরিদর্শনের সুযোগ রয়েছে। রয়েছে দৃষ্টিনন্দন লেকে ময়ূরপঙ্খী নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। 
কীভাবে যাবেন : ঢাকা থেকে সোনারগাঁয়ের দূরত্ব ২৩ কিলোমিটার। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে মোগরাপাড়া সোনারগাঁ। সেখান থেকে জাদুঘর যেতে রিকশায় ভাড়া পড়বে ২০ টাকা।  অটোতে ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারও কোনো অপরাধ নাই
  • বিশ্বকর্মা পূজা: গাঙ্গেয় শিল্পের উৎসব
  • আজ থেকে বুসান উৎসব, নানাভাবে রয়েছে বাংলাদেশ
  • ‎সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব : ডিসি
  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • ঘুম থেকে অনন্ত ঘুমে অস্কারজয়ী রবার্ট রেডফোর্ড
  • ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে ভোলার বৈষা দধি
  • শেষ হলো সপ্তম যোসেফাইট ম্যাথ ম্যানিয়া ২০২৫