দেশে সোনার দাম আরও এক দফা বাড়ল। এ দফায় ভরিপ্রতি দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ২৪৩ টাকা। তাতে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম বেড়ে দাঁড়াবে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ টাকা। দেশের বাজারে এটিই এখন পর্যন্ত সোনার সর্বোচ্চ দাম।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন করে আবার সোনার দাম বাড়ানোর এই তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় সোনার দাম সমন্বয় করা হয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর হবে।

চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে এ নিয়ে পাঁচবার সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ১৭ ফেব্রুয়ারি সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় জুয়েলার্স সমিতি। তাতে প্রথমবারের মতো দেশের বাজারে সোনার ভরি দেড় লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

নতুন দাম অনুযায়ী, আগামীকাল থেকে দেশের বাজারে হলমার্ক করা প্রতি ভরি (১১.

৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫২৫ টাকা, ২১ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেট মানের সোনা ১ লাখ ২৬ হাজার ৪২৬ টাকায় বিক্রি হবে। এ ছাড়া সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম হবে ১ লাখ ৪ হাজার ২০৬ টাকা।

আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতি ভরি ২২ ক্যারেট সোনা ১ লাখ ৫১ হাজার ২৮২ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৬৭ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ১ হাজার ৯৩২ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সেই হিসাবে আগামীকাল থেকে প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের সোনায় ৩ হাজার ২৪৩ টাকা, ২১ ক্যারেটে ৩ হাজার ১০৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটে ২ হাজার ৬৫৯ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির সোনায় ২ হাজার ২৭৪ টাকা দাম বাড়বে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’

আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।

আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ