পরিদর্শনে গিয়ে মাগুরার প্রাথমিক বিদ্যালয়টিকে যে কারণে ‘মডেল’ বললেন উপদেষ্টা
Published: 21st, April 2025 GMT
‘আমাদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়ে অনেক মানুষের একটা নেতিবাচক ধারণা আছে যে এখানে পড়াশোনা হয় না, মান ভালো না। কিন্তু এখানের পরিবেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানকার শিশুদের পড়ালেখার পরিবেশ, কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিস দেখে এবং শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এটা নামে যেমন একটা মডেল স্কুল, কাজেও তেমনি মডেল স্কুল। আমাদের বিদ্যালয়গুলোর পরিবেশ এমনই হওয়া উচিত।’
মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। গতকাল রোববার সকালে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা।
ইস্টার সানডে উপলক্ষে এদিন ছুটি থাকলেও শিশুদের বিদ্যালয়ে আসতে বলেছিলেন শিক্ষকেরা। উপদেষ্টার পরিদর্শন উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজ পরিবেশন করে। এরপর বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন উপদেষ্টা। শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজের একটি ভিডিও পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুকে শেয়ার করা হয়। প্রথম ছয় ঘণ্টায় প্রায় এক লাখ মানুষ ওই ভিডিও দেখেছেন। অনেকেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশংসা করে মন্তব্যও করেছেন।
উপদেষ্টাকে মুগ্ধ করা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, নানা রকম অভিনব উদ্যোগ নেওয়ায় বিদ্যালয়টি ২০১৭ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পুরস্কার পায়। একই বছরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন আক্তারও শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদক পান। ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত শালিখা উপজেলা সদরে অবস্থিত এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের চাপ ক্রমেই বেড়েছে। বর্তমানে প্রাক্-প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৩৯৯ জন বালক ও ৩৮৭ জন বালিকাসহ ৭৮৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক আছেন ১৪ জন।
উপদেষ্টার পরিদর্শন উপলক্ষে শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজ পরিবেশন করে। রোববার সকালে মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট ব দ য লয়ট পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
লালনের আখড়াবাড়িতে মানুষের ভিড়ে মুঠোফোন চুরি, আটক ৬
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় ফকির লালন শাহর তিরোধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। লালন স্মরণোৎসবে এমন জনসমাগম কয়েক দশকে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন বাউল, সাধক, ফকির ও লালনভক্তরা। তবে এই সুযোগে সেখানে বেশ কিছু মুঠোফোন চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সন্দেহভাজন ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার দুপুরে বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম। তিনি জানান, গতকাল শুক্রবার উৎসবের প্রথম দিন কুমারখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন অন্তত ১৪ জন ভুক্তভোগী। এ ছাড়া আরও অর্ধশতাধিক মানুষ মৌখিকভাবে পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ফোন উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
আটক ব্যক্তিরা হলেন সিরাজগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কান্দাপাড়ার শামিম তালুকদার (২৮), নেত্রকোনার বারহাট্টা থানার ডেউপুর উত্তরপাড়ার সেফায়েত উল্লাহ (১৯), কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের মো. সজিব (১৯), মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রমজান আলী (২৬), ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার রাজিব মিয়া (২০) ও পাবনার চর ভবানীপুর এলাকার আবদুল মালেক (২৫)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকেই কুমারখালী থানায় ভিড় করছেন ভুক্তভোগীরা।
উপজেলার সদকী ইউনিয়নের দড়ি বাটিকামারা এলাকার স্কুলশিক্ষক পলাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার রাতে লালন মেলায় গিয়ে তাঁর মুঠোফোন হারিয়ে যায়। তিনি থানায় জিডি করেছেন।
ফরিদপুরের কানাইপুর এলাকার মো. বিল্লাল বিশ্বাসও থানায় অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ভিড়ের মধ্যে একটি চক্র পকেট থেকে মুঠোফোন বের করে নিচ্ছে। তাঁরটি ফোনটিও হারিয়েছে। প্রথম দিনই কয়েক শ ফোন চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁর দাবি।
কুষ্টিয়ার এক সংগীতশিল্পী জানান, মূল মঞ্চে অনুষ্ঠান শেষে সড়কে উঠতেই তাঁর ব্যাগ থেকে ফোন বের করে নেয় চোরেরা। স্থানীয় এক সাংবাদিকও একই রাতে আখড়াবাড়িতে গিয়ে ফোন হারিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গার বুদ্ধিমানপাড়ার ব্যবসায়ী তানবিন ইসলাম রাব্বি বলেন, আখড়াবাড়ি এলাকার কয়েক কিলোমিটারজুড়ে ছিল যানজট। রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে তাঁর স্মার্টফোনটি চুরি হয়েছে। ফোনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ নথি থাকায় জিডি করেছেন।
শুক্রবার রাত একটার দিকে আখড়াবাড়িতে সরেজমিনে দেখা যায়, আখড়াবাড়ি, প্রবেশপথ, মেলার মাঠসহ আশপাশের এলাকায় মানুষের ভিড়। ভিড়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছিলেন একাত্তর টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান কোহিনুর ইসলাম। তিনি বলেন, এবার জাতীয়ভাবে আয়োজন থাকায় আখড়াবাড়িতে ভিড় বেশি। ভিড়ের মধ্যে কখন যে তাঁর ফোনটি চুরি হয়েছে, বুঝতে পারেননি। তিনি জানান, গত বছরও এই উৎসবে কয়েক শ ফোন চুরির ঘটনা ঘটেছিল।
উৎসবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলেও মুঠোফোন চুরির ঘটনা ঘটছে বলে জানান কুমারখালী থানার পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি কার্যক্রম চলছে।
ফকির লালন শাহর ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে ছেঁউড়িয়ায় জাতীয়ভাবে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ উৎসব রোববার মধ্যরাতে লালন সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হবে।